অপ্রিয় হলেও সত্য..

কর্মস্থলে হাতে কলমে কাউকে কিছু শিখিও না। সে এক সময় তোমার প্রতিদ্ধন্ধী হয়ে যাবে.. মোহাম্মদ শওকত আকবার




ভুল আর ভুল..

জীবন ভরে শুধু ভুল মানুষগুলোকেই ভালোবেসে গেলাম.. মোহাম্মদ শওকত আকবার




ঠকিয়ে জিতে যাওয়া

কাউকে ঠকিয়ে জিতে যেতে পারো, কিন্তু সেই জয় তোমাকে একটি রাতেও শান্তির ঘুম ঘুমাতে দিবে না.. মোহাম্মদ শওকত আকবার




জীবনের হিসাব

জীবনের হিসাব আর ব্যবসার হিসাব যদি এক হতো, হয়তো ভালোই হতো। কাটসাট করে আবার নতুন করে শূরু করা যেতো।

ব্যবসার হিসাবের ভুল সংশোধন করা যায়, কিন্তু জীবনের হিসাব একবার ভুল হলে তা আমৃত্যু সংশোধন করা যায় না.. মোহাম্মদ শওকত আকবার

জীবনের হিসাব

Showkatbd.com is a full-featured online documents organized application site. Which is going to prepare document from just a form.   It will save your time ! Bengali, English and Arabic letter generator is available here. Do not heisted to try this! 

  FORM2Dox

  DOCUMENTCreation Tools




ভুল চিন্তা

আবার যদি জীবনকে সেই পঁচিশ বছর থেকে শুরু করতে পারতাম, তাহলে প্রথমে শুধুই নিজের চিন্তা করতাম, নিজের অনাগত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতাম.. মোহাম্মদ শওকত আকবার




জানুন জিন্স তৈরীর ইতিহাস

নাম করন

জিন্স তৈরির ইতিহাসের দিকে তাকালে প্রথমেই আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে এর নামের দিকে। অনেকেরই ধারনা, এই নাম এসেছে ইতালির সমুদ্র বন্দর জেনোয়া থেকে। সেখানের নাবিকদের বলা হত জিনি, সহজ ভাষায় দৈত্য। এই জিন এর প্লুরাল নাম্বার জিন্স। অনেকে আবার বলেন, না এই মত ঠিক নয়। ডেনিমের যে কাপড়, ফরাসিতে তাকে বলা হত, ‘জিন ফুস্টিয়া’, সেই থেকেই নামকরণ হয়েছে জিন্সের।

ইতিহাস

জিন্সের সঙ্গে জুড়ে আছে লেভি স্ট্রস নামের এক ব্যবসায়ীর ভাগ্য অন্বেষণ। আঠারো শতকের গোড়ার দিকে ক্যালিফোর্নিয়ার বেশ কিছু অঞ্চলে আবিষ্কার হয়েছিল বেশ কয়েকটি সোনার খনির। খনিগুলিতে কাজের জন্য, লক্ষ লক্ষ মানুষ, এই অঞ্চলে ভিড় জমাত।

লেভি স্ট্রস জার্মানি থেকে এসেছিলেন নিউ ইয়র্কে। এসে তিনি শোনেন, এখানের খনি শ্রমিকদের প্যান্টগুলো পরিশ্রমের কারণে খুব দ্রুত ছিঁড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্ট্রস এদের জন্য বিশেষ এক ধরনের প্যান্ট বানানোর কথা ভাবতে লাগলেন। যা সহজে ছিড়ে নষ্ট হবে না।

তিনি খুঁজে বের করলেন বাদামী রঙের এক ধরনের মোটা কাপড়।  তা দিয়ে তৈরী করালেন প্যান্ট। এরপর যেখানে যেখানে ঘসা লাগার সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে যোগ করলেন তামার পাত । জ্যাকব ডেভিস নামের এক দর্জি লেভি স্ট্রস এর এই ভাবনাকে করলেন বাস্তবায়ন ।

জিনসের রং নীলের কাহিণী

এই প্যান্ট অল্প সময়ের মধ্যেই খনি শ্রমিকদের মধ্যে ভীষন জনপ্রিয় হয়ে উঠল। লেভি স্ট্রস আরও আকর্ষণীয় করতে এই কাপড় প্রাকৃতিক নীল রং দিয়ে ডাই করিয়ে দিলেন। জনপ্রিয়তার মাত্র বেড়ে গেলো দ্বিগুন। তৈরী হল এই প্যান্ট। অনেকেই মনে করেন এই থেকেই ব্লু ডেনিম জিন্সের উৎপত্তি।

এর বহুবছর পরে, ১৮৭৩ সালে বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসলো জিন্স।

জিন্সের পকেট কাহিনী

জিনস্‌-এ পকেটের ওপরে আরও একটি ছোট্ট পকেট দেখেছেন নিশ্চয়। ঐ ছোটটো পকেটেরও আছে আরেকটি ইতিহাস। তা হলো, খনির সেই শ্রমিক আর কাউবয়রা তাদের ঝোলানো ঘড়িটি ওয়েস্ট কোটের পকেটের বদলে জিন্সের এই পকেটে রাখা শুরু করলেন। পকেটটি ছোটো বিধায় ঘড়িটি রাখতেও সহজ হলো । সেই থেকেই এই পকেটের উৎপত্তি। আজ নেই সেই কাউবয়রা, নেই সেই ঘড়িও। কিন্তু আছে জিন্সের সেই পকেট। আর আমাদের জন্য জিন্স।




অবাক সত্য

আমার দেখা সমাজের খারাপ লোকগুলিই আজ সবচেয়ে সুখী ও সমৃদ্ধশালী ব্যক্তি.. মোহাম্মদ শওকত আকবার




চা আবিস্কারের ইতিহাস

চা আবিস্কারের ইতিহাস : গল্প প্রিয় এমন কেউ নেই যে অদ্ভুত চা খোর গল্পটি পড়েন নাই। সেই চাখোর গল্পের মতো আমাদের ভেতরে অনেকই সেরকম চাখোর হিসেব আজ পরিচিত। আমি নিজেও সেইরমই একজন। অফিসের পিয়নেরাও বলে – স্যার বাসা থেকে অফিসে আসে শুধু চা খেতেই।

বাঙ্গালীর চা বিলাস নতুন নয়। শহর কিংবা গ্রামে চায়ের দোকানের হাজারো গল্প আমাদের চিরচেনা। আমরা চা খাই। চায়ের আসর করি, চা থেকে খেতে গল্প করি। কিন্তু কখনোই কি জানার চেষ্টা করেছি যে, এই পাণীয়টি আবিস্কার হয়েছিলো কিভাবে। কিংবা কোথা থেকেই বা এই চা খাওয়ার উৎপত্তি। অনেকেরই জানা নেই। আর তাই আজ চায়ের ইতিহাস নিয়েই আমার এই দু’চার কলম।

চা আবিস্কারের ইতিহাস

২৭২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহান চৈনিক শাসক শেন নাং এই চায়ের আবিস্কারক। শেন তার সাম্রাজে আইন জারি করেছিলেন, তার প্রজাদের সবােইকে জলপানের পূর্বে অবশ্যই তা ফুটিয়ে নিতে হবে। তিনি নিজেও তার প্রাসাদে সব সময় ফোটানো পানি পান করতেন। কৃষি ও ভেষজ চিকিৎসায় আগ্রহী শেন জানতেন পানি ফুটিয়ে খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এবং এর থেকে সব ধরনের জীবানু ধ্বংস হয়ে যায়।

যখনকার ঘটনা, শেন জুন্নান প্রদেশে অবস্থান করছিলেন। কোথাও যাচ্ছিলেন। পথিমেধ্য এক বাগানের পাশে যাত্রা বিরতি হলো।  তার সঙ্গীরা খোলা প্রান্তরে গাছের ছায়ায় বসে আছে কেউ। কেউ খাবারের ব্যবস্থা করছে। কেউ পানিপাত্রে পানি ফোটাচ্ছে। আকস্মিক বাতাস পাশের ঝোপ থেকে কিছু পাতা উডিয়ে এনে ফুটন্ত পানির ভেরত ফেললো। পাতটি তুলে ফেরার চেষ্টা করারে আগেই সেটা জলে দ্রবীভুত হয়ে গেলো। জলের রং বদলে গেলো। শেন কৌতুহলী হয়ে জলের রং পরিবর্তনটা খেয়াল করলেন। শেন জলের ঘ্রান শুকেঁ দেখলেন। অন্য রকম এক মাদকত ছাড়ানো গন্ধ। তিনি জিহবা দিয়ে এটার স্বাদ নিলেন। এই প্রথম মানুষ চায়ের স্বাদ গ্রহন করে। তারপর রীতিমতো চায়ের প্রেমে পড়ে গেলেন শেন। বাতাসে হঠাৎ উড়ে আসা পাতা আর জলের সমন্বয়ে পরিনত হলো এক ধরনের খাবারযোগ্য পাণীয়তে। যত্ন করা হতে লাগলো উক্ত পাতাটির। সাথে সাথে বিস্তৃতি ঘটতে থাকয়ে পানীয়টির।

শাং শাসনামলে (১৫০০-১০৪৬ খ্রিষ্টপুর্বাব্দ) চা পাতার রস ঔষধি পানীয় হিসেবে সেবন করা হত। সিচুয়ান প্রদেশের লোকেরা প্রথম চা পাতা সিদ্ধ করে ঘন লিকার তৈরী করা শেখে।

চায়ের বিস্তৃতি

যদ্দুর জানা যায়, ১৬১০ সালের দিকে ইউরোপে চায়ের প্রবেশ ঘটে পর্তুগীজদের হাত ধরে । শীতের দেশে উষ্ণ চায়ের কাপ যেন প্রাণে স্ফুর্তি জোয়ার নিয়ে আসলো।

আজ থেকে আনুমানিক আড়াইশো বছর পুর্বে এশিয়ার অনেক দেশে চা পাতার তৈরী ইট মুদ্রার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এ থেকে সহজেই তৎকালীন সময়ে চায়ের কদর বোঝা যায়। ১৭০০ সালের দিকে ব্রিটেনে চা জনপ্রিয় হয়।

উপমাহাদেশে চায়ের প্রবেশ

ইংরেজদের হাত ধরে চা ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবেশ করে। তারা ভারতের আসাম রাজ্যে চায়ের চাষ শুরু করে। চা উৎপাদনে চীনের একক আধিপত্যকে খর্ব করতে বিলাতিরা ভারতে চা চাষ শুরু করে। প্রথম দিকে এংলো ইন্ডিয়ানরাই চা ব্যবসা শুরু করে পরে ভারত স্বাধীনতা লাভ করার পর চা শিল্প দেশীয়দের হাতে বিকশিত হয়। আসাম থেকে ছড়িয়ে পড়ে দার্জিলিং, কেরালা, বাংলায়।

চা উৎপাদনকারী দেশ

ভারত পৃথিবীর এখন প্রধান চা উৎপাদনকারী দেশ। বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল এবং ইরানের গিলান প্রদেশে আছে নয়নাভিরাম চা বাগান, উৎপাদন হয় চা।  পৃথিবীর অধিকাংশ বৃষ্টিবহুল দেশে এখন চা উৎপন্ন হচ্ছে।

লাল চায়ের ইংরেজী কি ?

আপনি কি জানেন লাল চা এর ইংরেজী কি? ব্লাক টি..

শেষ কথা

চা দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে ভিন্ন রুচিতে ভিন্ন প্রক্রিয়ায় খাওয়া হয়। কেউ লিকার বেশী খায় কেউ খায় কম। লাল চা, দুধ চা, গ্রীন টি, আইসড টি বলে নানা পদের চা আছে। বাংলাদেশে প্রথম দুই ক্যাটাগরির চা-ই বেশী চলে।

চা আবিস্কারের ইতিহাস- যদি আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে শেয়ার করতে ভুলবেন না দয়া করে।




সালামের প্রচলন যেভাবে

এক মুসলমান আরেক মুসলমানকে অভিবাদন ও সম্ভাষণ জানানোর ইসলামী রীতি হচ্ছে السلام عليكمআসাসালামু আলাইকুম’ বলে সম্বোধন করা। যার অর্থ হচ্ছে – আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। যাকে এই সম্ভাষণ করা হবে তিনিও প্রতিত্তোরে বলবেন – وعليكم السلامওয়া আলাইকুমুস্ সালাম‘ । যার অর্থ – আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক।

এই সম্ভাষনের প্রচলন কবে বা কখন হয়েছিলো বা কে সর্বপ্রথম কাকে সালাম দিয়েছিলেন, সে সালামের উত্তরই বা ছিল কী ? সে বিষয়েই আমাদের ছোটটো এই আলোচনা।

[lwptoc]

সালামের প্রচলন যেভাবে শুরু হয়

সর্বপ্রথম সালাম দেন প্রথম মানব ও নবী হজরত আদম আলাইহিস সালাম। স্বয়ং আল্লাহ্ পাক তাঁকে সালাম আদান-প্রদানের পদ্বতি শেখান। যা তাঁর পরে আগত সকল বনি আদমের জন্য ছিলো অভিবাদন। হাদীসের বর্ণনা থেকে প্রমানিত – হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম বলেছেন, আল্লাহ তা’য়ালা আদম কে সৃষ্টি করলেন।  তাঁর উচ্চতা ছিলো ষাট হাত। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে বললেন, যাও, বসে থাকা ঐ ফেরেশতাদের দলকে সালাম দাও এবং তারা তোমার সালামের কি জবাব দেয় তা মনোযোগরে সাথে শ্রবন করো। কেনোনা এটাই হবে তোমার ও তোমার সন্তানদের সম্ভাষন।

আদম ফেরেশতাদের গিয়ে বললেন – السلام عليكم – ‘আসালামু আলঅইকুম’ আপনাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। ফেরেশতাগণ জবাব দিলেন – السَّلاَمُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللهِ আসসালামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ : আপনার উপরও শান্তি ও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক। ফেরেশতাগণ ‘ওয়া রহমাতুল্লাহি’ সংযোজন করলেন। যে ব্যক্তি বেহেশতে যাবে সেই হবে আদম এর আকৃতি বিশষ্ট। সেই থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত মানুষের দেহের আকুতি ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে আসছে। (বুখারী, মুসলিম)

সালাম কিভাব দিতে হয় ?

السلام عليكم – আস্সালামু আলাইকুম। আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমাদের সমাজে প্রায়ই আমরা সালামালেকুম, সালামালাইকুম – এভাবে উচ্চারণ করে থাকি। যা আসলেই ঠিক নয়। উচ্চারনের কারনে এর অর্থ সম্পূর্নরুপে পরিবর্তন হয়ে যায়। অনেক সময় যার অর্থ এমন হয় যে – আপনি ধ্বংস হয়ে যান।

আমরা শান্তির বদলে ধ্বংস কামনা করছি । যা মোটেই উচিত নয়। সুতরাং এই সম্ভাষনের ক্ষেত্রে আমাদের প্রকৃত উচ্চারন করাটাই বাঞ্চনীয়।

যদি আরবী ভাষায় বিন্দুমাত্র জ্ঞান না থেকে থাকে তাহলে আমাদের সকলেরই জচিত হবে আরবী ভাষায় দক্ষ কারো কাছ থেকে আরবী ভাষার তালিম নেয়া। সেক্ষেত্রে কোরআন, হাদীসও শুদ্ধ ভাবে অধ্যয়ন করতে পারবো এবং প্রকৃত অর্থও জানার ক্ষেত্রে আমাদের অনেকাংশে সহজ হবে। অনুবাদ পড়ে কখনোই কোরান হাসীসের প্রকৃত ভাব অনুধাবন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

সালাম কিভাবে নিতে হয় ?

সালাম নেয়ার ক্ষেত্রেও কখনো কখনো দেখা যায় যে, আমরা শুধুই মাথা ঝাকাই। মুখে কিছু উচ্চারন করিনা। বা বলে থাকি – ওয়ালাইকুম সালাম। আসলে উচ্চারন হবে – ওয়ালাইকুমুস সালাম। আপনার উপরেও শান্তি বর্ষিত হোক।

সালাম না দিলে কি গুনাহগার হবে

সালাম দেওয়া সুন্নাত। আর ‍এই সালামের জবাব প্রদান ওয়াজিব বা আবশ্যিক। কেউ সালামের জবাব না দিলে গুনাহগার হবে। সুতরাং বলা চলে, সালাম এক প্রকার ইবাদত ও সাওয়াবের কাজ।

সালাম সম্পর্কে কোরআনের ঘোষণা

সালাম সম্পর্কে কোরআনের ঘোষণা وَ اِذَا حُیِّیۡتُمۡ بِتَحِیَّۃٍ فَحَیُّوۡا بِاَحۡسَنَ مِنۡهَاۤ اَوۡ رُدُّوۡهَا ؕ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ حَسِیۡبًا আর যখন তোমাদেরকে অভিবাদন করা হয় (সালাম দেওয়া হয়), তখন তোমরাও তা অপেক্ষা উত্তম অভিবাদন কর অথবা ওরই অনুরূপ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে হিসাব গ্রহণকারী।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৮৬)

জান্নাতিদের অভিবাদনও ‘সালাম’ । আল্লাহ তাআলা যাদেরকে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করবেন। তাদেরকেও এ সালাম দেওয়ার মাধ্যমে অভিবাদন করা হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন –

১. وَ اُدۡخِلَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِهَا الۡاَنۡهٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡهَا بِاِذۡنِ رَبِّهِمۡ ؕ تَحِیَّتُهُمۡ فِیۡهَا سَلٰمٌ

যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে তাদেরকে প্রবেশ করানো হবে জান্নাতে; যার তলদেশে নদীমালা প্রবাহিত; সেখানে তারা তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবে; সেখানে তাদের অভিবাদন হবে ‘সালাম’।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ২৩)

২. وَ سِیۡقَ الَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا رَبَّهُمۡ اِلَی الۡجَنَّۃِ زُمَرًا ؕ حَتّٰۤی اِذَا جَآءُوۡهَا وَ فُتِحَتۡ اَبۡوَابُهَا وَ قَالَ لَهُمۡ خَزَنَتُهَا سَلٰمٌ عَلَیۡکُمۡ طِبۡتُمۡ فَادۡخُلُوۡهَا خٰلِدِیۡنَ

আর যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করত, তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। যখন তারা জান্নাতের নিকট উপস্থিত হবে এবং জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হবে এবং তার রক্ষীরা তাদেরকে বলবে, ‘তোমাদের প্রতি সালাম (শান্তি), তোমরা সুখী হও এবং স্থায়ীভাবে বাস করার জন্য জান্নাতে প্রবেশ কর।’ (সুরা যুমার : আয়াত ৭৩)

শেষ কথা

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জান্নাতের অভিবাদন জানানোর ভাষা সালামকে দুনিয়ায় বেশি বেশি প্রচলন ও প্রসার করার তাওফিক দান করুন। কোরআন সুন্নাহর উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।




হযরত উমর এর ইসলাম গ্রহণ

হযরত উমর এর ইসলাম গ্রহণ ইসলামের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। নবীজীর ধর্ম প্রচারের এক নতুন দ্বার উন্মোচন। উমর ইসলাম ধর্ম গ্রহন করলেন। নবীজির নবুয়তের ষষ্ঠ বর্ষে। হামযা রা: এর ইসলাম গ্রহনের তিন দিন পর। যে উমর নবিজীকে হত্যা করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন সেই উমরই ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে ইসলামকে নিয়ে আসলেন অন্ধকারের গহীন থেকে দিনের উজ্জল আলোয়। ইসলাম উন্মোচিতহলো জন সম্মুখে।

উমর এর ইসলাম গ্রহণ : তরবারি কাধে ঝুলিয়ে উমর চলছেন নবীর হত্যায়। পথিমধ্যে বনি যুহরার এক ব্যক্তির (মতান্তরে নাঈম ইবন আব্দুল্লাহ’র) সাথে দেখা । তিনি  উমরের গন্তব্যের কথা জানতে চাইলেন। উমর নবীজীকে হত্যার কথা বলতেই লোকটি তার বোন আর ভগ্নিপতির ইসলাম ধর্ম গ্রহনের কথা জানালেন।

একথা শুনে উমর রেগে মেগে উন্মত্ত হয়ে ছূঠলেন বোন ভগ্নীপতির বাড়ীর উদ্দেশ্যে। বাড়ির দরজায় নক করলেন উমর। ঐ মুহুর্তে তার বোন ভগ্নিপতি কোরান তেলাওয়াত শিখছিলেন খাব্বাব ইবনে আল আরাতের কাছে। (আরাত ছিলেন রাসুল সা. এর একজন অন্যতম সাহাবা। মূলনাম খাব্বাব এবং উপনাম/কুনিয়াত আবু আবদিল্লাহ । পিতার নাম আরাত। তিনি সৌদি আরবের নজদে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইসলাম গ্রহণকারী সদস্যের মধ্যে ৩য় মতান্তরে ৬ষ্ঠ ছিলেন । মুহাম্মদ ও তার সাহাবারা যখন দারুণ আরকামে গোপনে ইসলামের দাওয়াত দিতেন। তিনি মক্কায় অবস্থানকালে তাঁর সবটুকু সময় ইবাদাত ও দাওয়াতি কাজে ব্যয় করতেন। মক্কায় তখনও যারা ভয়ে নিজেদের ইসলাম গ্রহণের কথা প্রকাশ করেনি, তিনি গোপনে তাদের বাড়ীতে গিয়ে কুরআন শিক্ষা দিতেন )

উমরের আভাষ পেয়ে খাব্বাব ইবন আল-আরাত অন্য ঘরে আত্ন গোপন করলেন। এবং বোন ভগ্নিপতি কোরান তেলাওয়াত থামিয়ে দিলেন। তারা তখন কোরআনের সূরা ত্বহা তেলাওয়াত করছিলেন। উমর ভগ্নিপতির উপর ঝাপিয়ে পড়লেন এবং তাকে রক্তাক্ত করলেন। বোন রাগে উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলেনঃ সত্য যদি তেমার দ্বীনের বাইরে অন্য কোথাও থেকে থাকে, তাহলে আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই এবং আরো স্বাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ (সা) আল্লাহর রাসুল।

হযরত উমর এর ইসলাম গ্রহণ
হযরত উমর এর ইসলাম গ্রহণ

বিশাল এক হোচট খেলেন উমর বোনের সাক্ষ্যতে। মুহূর্তে হৃদয় তাঁর সত্যে জ্যোতির উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো। তিনি তার বোনকে অনুরোধ করলেন তিনি যা পড়ছিলেন তা শুনার। ভগ্নি উমরকে পাক সায় হয়ে নিতে বললেন। পাক-সাফ হয়ে বোনের হাত থেকে সূরা ত্বাহার অংশটুকু নিয়ে পড়তে শুরু করলেন। পড়া শেষ করে বললেনঃ আমাকে তোমরা মুহাম্মাদের (সা) কাছে নিয়ে চল। উমরের একথা শুনে খাব্বাব ঘরের গোপন স্থান থেকে বের হয়ে এলেন। বললেনঃ সুসংবাদ উমার! বৃহস্পতিবার রাতে রাসূলুল্লাহ (সা) তোমার জন্য দোয়া করেছিলেন। আমি আশাকরি তা কবুল হয়েছে। তিনি বলেছিলেনঃ আল্লাহ, উমর ইবনুল খাত্তাব বা আমর ইবন হিশামের (আবু জেহেল) দ্বারা ইসলামকে শক্তিশালী কর। খাব্বার আরো বললেনঃ রাসুল (সা) এখন সাফার পাদদেশে ‘দারুল আরকামে’ (দারুল আরকাম এর অর্থ, আরকাম নামক ব্যক্তির বাড়ি। দার শব্দের অর্থ বাড়ি। আর আরকাম একজন সাহাবীর নাম। দারুল আরকাম অর্থ আরকামের বাড়ি। উনার পূর্ণ নাম হলো, আরকাম ইবনে আবুল আরকাম। হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর প্রতিষ্ঠিত একটি গোপন ইসলামি শিক্ষা ও প্রচারকেন্দ্র। হজরত মুহাম্মদ (স.) নবুয়ত লাভের পর তা প্রচার শুরু করেন। তিনি কাবাকে অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রথম শিক্ষায়তন হিসেবে ব্যবহার করেন। কিছুদিন পর মক্কার মুশরিকরা নবীর ইসলাম প্রচারের সংবাদ জানতে পারে। ফলে তারা মক্কার একটি পাহাড়ে নামাজ আদায়রত মুসলিমদের উপর হামলা করে। এ ঘটনার পর হজরত মুহাম্মদ (স.) তাদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে ধর্মীয় শিক্ষা ও নামাজ আদায়ের স্থান হিসেবে আরকাম ইবনে আবিল আরকামের বাড়িকে নির্ধারণ করেন। এটিই ইসলামের প্রথম মাদ্রাসা বা প্রথম আনুষ্ঠানিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে সাহাবিরা গোপনে নবীর সাথে দেখা করতেন এবং ইসলামের বিধি-বিধান সম্পর্কে জেনে নিতেন। প্রায় ৩ বছর এভাবে গোপন দাওয়াত ও ইসলামের শিক্ষাদীক্ষার কাজ অব্যাহত ছিল)।

উমর চললেন দারুল আরকামের দিকে। হামজা এবং তালহার সাথে আরো কিছু সাহাবী তখন দারুণ আরকামে পাহারারত। উমরকে দেখে তাঁরা সন্ত্রস্ত হয়ে পরলেন। তবে হামজা সান্তনা দিয়ে বললেনঃ আল্লাহ উমরের কল্যান চাইলে সে নিশ্চয় ইসলাম গ্রহণ করে রাসুল (সাঃ) এর অনুসারী হবে। অন্যথায় তাকে হত্যা করা আমাদের জন্য খুবই সহজ হবে।

রাসুল (সা) তখন দারুল আরকামের ভিতর। তাঁর উপর তখন ওহী নাজিল হচ্ছিল। কিছু সময় পরে নবীজি বের হয়ে উমরের কাছে এলেন। উমরের কাপড় ও তরবারীর হাতল তিনি মুট করে ধরে বললেনঃ উমর তুমি কি বিরত হবে না ?………তারপর তিনি দোয়া করলেনঃ হে আল্লাহ, উমর আমার সামনে, হে আল্লাহ উমরের দ্বারা দ্বীনকে শক্তিশালী করুন। উমর বলে উঠলেনঃ আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি আপনি আল্লাহর রাসুল। ইসলাম গ্রহণ করেই তিনি আহবান জানালেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ুন।

নবী (সা:) আল্লাহর কাছে বলতেন: “হে আল্লাহ্! উমর বিন খাত্তাব অথবা আবু জাহল বিন হিশাম এর মধ্য হতে যে তোমার নিকট অধিক প্রিয়, তার দ্বারা ইসলামকে শক্তিশালী করে দাও ।”

উমর এর ইসলাম গ্রহণ ইসলামের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। যদিও তখন পর্যন্ত ৪০/৫০জন ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁদের মধ্যে হযরত হামজাও ছিলেন তথাপি মুসলমানদের পক্ষে কা’বায় গিয়ে নামাজ পড়াতো দুরে কথা নিজেদেরকে মুসলমান বলে প্রকাশ করাও নিরাপদ ছিল না। হযরত উমরের ইসলাম গ্রহণের সাথে সাথে এ অবস্থার পরিবর্তন হলো। তিনি প্রকাশ্যে ইসলামের ঘোষনা দিলেন এবং সকল নও মুসলিমদের সথে নিয়ে কাবা ঘরে নামায আদায় করা শুরু করলেন।