সিরিয়ার বিদ্রোহীরা প্রেসিডেন্ট আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে, তার অবস্থান অজানা

সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধের এক নতুন পর্ব শুরু হয়েছে, যখন বিদ্রোহী বাহিনীগুলি প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সফল হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র লড়াইয়ের পর, বিদ্রোহীরা দামেস্ক শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে এবং শাসক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই কমে গেছে। এতে দেশের শাসনব্যবস্থা অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে এবং আসাদের অবস্থান এখন একেবারে অজানা।

আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে দেশটির পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। বিদ্রোহী বাহিনী ইতিমধ্যেই দামেস্ক এবং অন্যান্য প্রধান শহরগুলিতে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করেছে, তবে পুরো দেশজুড়ে এই অস্থিরতা এখনো চলছে। আসাদের সান্নিধ্যে থাকা সামরিক ইউনিটগুলো কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হলেও, তারা বিদ্রোহীদের অগ্রগতিকে ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিদ্রোহীদের সমর্থন জানিয়েছে, তবে তারা এখনও একটি স্থিতিশীল সরকারের জন্য তৎপর নয়। অন্যদিকে, রাশিয়া ও ইরান, যারা সিরিয়ার আসাদ সরকারের প্রধান মিত্র, তাদের তরফ থেকে উদ্বেগজনক কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও আসেনি, তবে তারা আগের মতোই আসাদের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট আসাদের অবস্থান নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। কিছু সূত্র বলছে, তিনি একটি নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন এবং বিদ্রোহীদের কাছে ধরা পড়তে চান না। অন্যদিকে, কিছু প্রতিবেদন দাবি করছে যে তিনি দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন, তবে এর সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। আসাদ নিজে এখনও কোনও বিবৃতি দেননি, যা পরিস্থিতির আরও জটিলতা তৈরি করছে।

এই রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্যে, সিরিয়ার জনগণের জন্য হতাশার এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিনের সংঘর্ষ এবং যুদ্ধের কারণে বহু মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়েছে, এবং এখন ক্ষমতার পরিবর্তন তাদের আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের পাশাপাশি, আসাদবিহীন সিরিয়ার শাসনব্যবস্থা কেমন হবে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।

বিদ্রোহীদের নেতৃত্বে থাকা গোষ্ঠীগুলির মধ্যে পারস্পরিক বিভাজন এবং ক্ষমতার জন্য তীব্র লড়াইও সবার নজর কেড়েছে। তারা কি একত্রে একটি স্থিতিশীল সরকার গড়ে তুলতে সক্ষম হবে, নাকি নতুন সমস্যার সৃষ্টি হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

তবে বর্তমান পরিস্থিতি স্পষ্টতই জানাচ্ছে যে, সিরিয়া এক নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে, যেখানে আসাদ আর শাসনক্ষমতায় নেই এবং দেশটির ভবিষ্যৎ এখন এক অনিশ্চিত পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

Ads

Start Now.. showkatbd eDocs




বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে এই দুই দেশের সম্পর্ক বেশ জটিল এবং সংবেদনশীল ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে উভয় দেশ নিজেদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে এই দুই দেশ নতুন করে একে অপরের দিকে এগিয়ে আসছে।

ইতিহাস ও অতীতের প্রেক্ষাপট 

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক মূলত মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ দ্বারা প্রভাবিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের ভূমিকা এই সম্পর্ককে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। যদিও ১৯৭৪ সালে পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়, তবে দুই দেশের মধ্যে আস্থার সংকট অনেকদিন ধরে চলমান ছিল।

বিগত কয়েক দশকে, বিশেষ করে ২০০০-এর দশক থেকে, দুই দেশই কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থিতিশীল করার চেষ্টা করে আসছে। তবে কিছু ঐতিহাসিক এবং রাজনৈতিক ইস্যু এই সম্পর্ককে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে দেয়নি।

সম্প্রতি সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষণ

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক গভীর করার কয়েকটি দিক বিশেষভাবে লক্ষণীয়:

  1. অর্থনৈতিক সহযোগিতা:
  • উভয় দেশই নিজেদের বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহ দেখাচ্ছে। পাকিস্তান বাংলাদেশের তৈরি পোশাক আমদানিতে আগ্রহী, আর বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে কাঁচামাল এবং অন্যান্য পণ্য আনতে চায়।
  • SAARC এবং OIC-এর মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চেও এই দুই দেশ একে অপরের সঙ্গে কাজ করছে।
  1. কূটনৈতিক সংলাপ:
  • সাম্প্রতিক সময়ে উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক বৈঠকগুলোতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের ইচ্ছা প্রকাশ পেয়েছে।
  • পাকিস্তানের পক্ষ থেকে অতীত ভুলগুলো নিয়ে দুঃখ প্রকাশ এবং সম্পর্ক পুনর্গঠনের আহ্বান বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন আলাপের সুযোগ তৈরি করেছে।
  1. মানবিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়:
  • দুই দেশের মানুষের মধ্যে সাংস্কৃতিক এবং মানবিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।
  • শিক্ষার্থী বিনিময় প্রোগ্রাম, সাংস্কৃতিক উৎসব, এবং খেলাধুলায় অংশগ্রহণ এই সম্পর্ককে আরও গভীর করতে পারে।

চ্যালেঞ্জ ও সীমাবদ্ধতা 

যদিও সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তবে কিছু চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে:

  • ইতিহাসের প্রভাব: ১৯৭১ সালের যুদ্ধের স্মৃতি এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশের জন্য একটি সংবেদনশীল ইস্যু।
  • আঞ্চলিক রাজনীতি: ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব এবং চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক এই দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ককে জটিল করে তোলে।
  • বিশ্বাসের সংকট: অতীতের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের কারণে উভয় দেশের জনগণের মধ্যে এখনও আস্থা তৈরির ঘাটতি রয়ে গেছে।

সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা

বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দৃষ্টিকোণ থেকে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের একাধিক সম্ভাবনা রয়েছে:

  1. বাণিজ্য সম্প্রসারণ: দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর মাধ্যমে উভয় দেশ নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।
  2. আঞ্চলিক শান্তি স্থাপন: দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ভালো হলে দক্ষিণ এশিয়ায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।
  3. সাংস্কৃতিক সহযোগিতা: খেলাধুলা, সংগীত, সাহিত্য এবং চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব।

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, যা দুই দেশের জন্যই লাভজনক হতে পারে। অতীতের ভুল এবং মানসিক দূরত্ব কাটিয়ে উঠতে হলে উভয় দেশকেই আন্তরিকতা এবং কৌশলগত দূরদর্শিতার সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। সম্পর্কের এই নতুন অধ্যায় উভয় দেশের জনগণের জন্য নতুন সুযোগ এবং সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করতে পারে।

 




দায়িত্ব ও কর্তব্য সততার সাথে পালন: জীবনের সাফল্যের চাবিকাঠি

দায়িত্ব ও কর্তব্য জীবনের এমন দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, যা একটি সুশৃঙ্খল এবং উন্নত সমাজ গঠনে অপরিহার্য। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করলে সমাজে শৃঙ্খলা, ন্যায়বিচার এবং শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু দায়িত্ব পালনে সততা না থাকলে এর প্রকৃত মূল্য নষ্ট হয়ে যায়। তাই, দায়িত্ব ও কর্তব্য সততার সাথে পালন করা শুধু নৈতিকতার অংশ নয়, বরং এটি ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে সফলতার মূল ভিত্তি। 

 

দায়িত্ব ও কর্তব্যের গুরুত্ব

মানুষ তার অবস্থান, পেশা এবং সম্পর্ক অনুযায়ী বিভিন্ন দায়িত্বের মুখোমুখি হয়। একজন ব্যক্তি পরিবারের সদস্য, কর্মজীবী, সমাজের অংশ এবং দেশের নাগরিক হিসেবে আলাদা আলাদা দায়িত্ব পালন করে।

  • ব্যক্তিগত জীবন: নিজের প্রতি দায়িত্ব হলো সৎভাবে জীবনযাপন এবং নিজেকে উন্নত করা।
  • পরিবারে: পরিবারের প্রতি দায়িত্ব হলো ভালোবাসা, যত্ন এবং সম্পর্কের সুরক্ষা।
  • কর্মস্থলে: পেশাগত ক্ষেত্রে সততার সাথে কাজ করা এবং সংস্থার প্রতি নিজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা।
  • সমাজে: সমাজের সদস্য হিসেবে অন্যদের প্রতি সহানুভূতি এবং দায়িত্বশীল আচরণ করা।
  • রাষ্ট্রের প্রতি: একজন নাগরিকের রাষ্ট্রের আইন মেনে চলা এবং দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা কর্তব্য।

সততার ভূমিকা 

দায়িত্ব পালন করতে গেলে সততা অপরিহার্য। কারণ সততা ছাড়া কোনো দায়িত্ব সঠিকভাবে সম্পন্ন হয় না।

  • বিশ্বাস স্থাপন: সততা দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে অন্যদের আস্থা অর্জন করে।
  • ন্যায়পরায়ণতা বজায় রাখা: সততার মাধ্যমে নিজের দায়িত্ব পালন করলে অন্যের প্রতি সুবিচার নিশ্চিত হয়।
  • আত্ম-উন্নতি: সৎভাবে কাজ করলে ব্যক্তি হিসেবে মানসিক এবং নৈতিক উন্নতি হয়।
  • সমাজের কল্যাণ: সৎভাবে দায়িত্ব পালন করলে সমাজে শৃঙ্খলা ও শান্তি বজায় থাকে।

 সততার অভাবের ফলাফল 

যদি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সততার অভাব ঘটে, তাহলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ব্যক্তিগত এবং সামষ্টিক জীবনে।

  • কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায় বা ভুলভাবে সম্পন্ন হয়।
  • মানুষের মধ্যে আস্থা এবং বিশ্বাস হারিয়ে যায়।
  • সমাজে দুর্নীতি, অবিচার এবং বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পায়।
  • দীর্ঘমেয়াদে ব্যক্তি নিজেও মানসিক এবং নৈতিক সংকটে ভোগে।

কর্তব্যে সততা বজায় রাখার উপায়

  • নৈতিক শিক্ষার চর্চা: নৈতিক মূল্যবোধ শেখা এবং তা জীবনে প্রয়োগ করা।
  • নিজের প্রতি সৎ থাকা: কাজের প্রতি আন্তরিকতা এবং প্রতিশ্রুতি বজায় রাখা।
  • অন্যের কল্যাণ চিন্তা করা: নিজের দায়িত্ব পালনে অন্যের কল্যাণ নিশ্চিত করার মানসিকতা রাখা।
  • জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা: নিজের কাজের জন্য সবসময় দায়ী থাকা এবং তা স্বচ্ছতার সাথে সম্পন্ন করা।

 

দায়িত্ব ও কর্তব্য সততার সাথে পালন করা শুধু একজন মানুষের ব্যক্তিগত সাফল্যের কারণ নয়, এটি পুরো সমাজের উন্নয়ন ও কল্যাণে অপরিহার্য। একজন সৎ এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তি শুধু নিজের জীবনে সাফল্য অর্জন করে না, বরং সে অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে ওঠে। তাই, প্রতিটি মানুষের উচিত নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে এবং সততার সাথে পালন করা, যা একটি সুন্দর ও উন্নত সমাজ গঠনে অবদান রাখে।




প্রশ্নপত্র ফাঁস: শিক্ষাব্যবস্থার জন্য এক ভয়াবহ সংকেত

বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ক্রমাগত উন্নতির পথে এগোলেও একাধিক বাধা ও সংকট তা বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত এবং উদ্বেগজনক সমস্যা হলো *প্রশ্নপত্র ফাঁস*। শিক্ষার মান ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার প্রতি মানুষের আস্থাকে নষ্ট করে দেওয়া এই ঘটনা কেবল শিক্ষাব্যবস্থার জন্যই নয়, পুরো সমাজের জন্য একটি বড় হুমকি।

প্রশ্নপত্র ফাঁসের ধরন ও প্রক্রিয়া

প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা সাধারণত পরীক্ষা শুরুর আগে কিংবা পরীক্ষার দিনই ঘটে। এই ফাঁসের জন্য অনেক সময় কিছু অসাধু শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মচারী, কিংবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দায়ী থাকেন। ফাঁস হওয়া প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়, যা দ্রুত অনেক শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে যায়।

ফাঁসের পদ্ধতিগুলো:

১. মুদ্রণকেন্দ্র থেকে ফাঁস: প্রশ্নপত্র প্রিন্টিং প্রক্রিয়ার সময় অসাধু ব্যক্তিরা তা বাইরে সরবরাহ করে।
২. পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ফাঁস: কিছু ক্ষেত্রে পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা পরীক্ষার আগে প্রশ্ন ফাঁস করেন।
৩.  অনলাইন মাধ্যমে ছড়ানো: সোশ্যাল মিডিয়া, যেমন ফেসবুক বা মেসেঞ্জার গ্রুপে দ্রুত ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়ে।

ফাঁসের প্রভাব

প্রশ্নপত্র ফাঁস শিক্ষাব্যবস্থার ওপর একাধিক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে:
১. শিক্ষার মানহানি: শিক্ষার্থীরা সৃজনশীল চর্চার পরিবর্তে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন মুখস্থ করার দিকে ঝুঁকে পড়ে।
২. মেধার ক্ষতি: মেধাবী শিক্ষার্থীরা ন্যায্য প্রতিযোগিতার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।
৩. সমাজে দুর্নীতি বৃদ্ধি: ফাঁস প্রক্রিয়ায় অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে একটি অবৈধ চক্র তৈরি হয়।
৪. অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ: প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে পরীক্ষা বাতিল কিংবা পুনরায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত অনেকের জন্য চাপ হয়ে দাঁড়ায়।
৫. দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ: এই ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেয়।

কারণ ও দুর্বলতা

প্রশ্নপত্র ফাঁসের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে, যা শিক্ষাব্যবস্থার গঠনগত সমস্যাকে নির্দেশ করে।
১. দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা: প্রশ্নপত্র সংরক্ষণ ও পরিবহনের সময় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয় না।
২. অসৎ ব্যক্তিদের জড়িত থাকা: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কিছু ব্যক্তি নিজেদের লাভের জন্য প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত হন।
৩. প্রযুক্তির অপব্যবহার: স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন দ্রুত ছড়িয়ে যায়।
৪.শাস্তির অভাব: প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয় না।

সমাধান ও প্রতিরোধের উপায়

প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রতিরোধে সঠিক উদ্যোগ ও কঠোর নীতিমালা প্রয়োজন।
১. নিরাপত্তা জোরদার করা: প্রশ্নপত্র সংরক্ষণ, মুদ্রণ ও পরিবহনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
২. ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার: পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি ও বিতরণের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত পদ্ধতি, যেমন এনক্রিপশন, প্রয়োগ করা যেতে পারে।
৩. কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা: প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে।
৪. গোপনীয়তা রক্ষা: প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণের সময় সংশ্লিষ্টদের কঠোরভাবে নজরদারি করতে হবে।
৫. সচেতনতা বৃদ্ধি: শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ব্যবহার না করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।

প্রশ্নপত্র ফাঁস বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি বড় সংকট, যা শিক্ষার গুণগত মান ও নৈতিকতার ওপর দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এই সমস্যা সমাধানে শিক্ষাবিদ, প্রশাসন এবং সরকারের সমন্বিত প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি। সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ করা গেলে শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি হারানো আস্থা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।




সরকারি আমলাদের দুর্নীতি: শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের উপাখ্যান

বাংলাদেশে সরকারি প্রশাসন দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রধান চালিকাশক্তি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি আমলাদের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা বারবার প্রকাশিত হচ্ছে। এ ধরনের দুর্নীতির কাহিনিগুলো শুধুমাত্র প্রশাসনিক সিস্টেমের দুর্বলতাকেই সামনে আনে না, বরং দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থাকেও নষ্ট করছে।

র্নীতির ধরন ও কৌশল

সরকারি আমলাদের দুর্নীতির ঘটনাগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ঘটে। এখানে ভুয়া প্রকল্প গ্রহণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় দেখানো, কিংবা নথিপত্রে ভুয়া তথ্য সংযোজনের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত করা হয়।

উদাহরণস্বরূপ:
– একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পে দেখানো হয়েছে যে কাজ সম্পন্ন হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে সেসব কাজের কোনো অস্তিত্ব নেই।
– নির্মাণ কাজ বা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অযৌক্তিক অগ্রিম অর্থ প্রদান করা হয়, যা পরবর্তীতে আত্মসাৎ করা হয়।
– আবার, প্রকল্পে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করেও সম্পূর্ণ অর্থ আত্মসাতের ঘটনা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রভাব ও পরিণতি

সরকারি আমলাদের এই ধরনের দুর্নীতির প্রভাব সুদূরপ্রসারী।
১. অর্থনৈতিক ক্ষতি: উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত অর্থ অপচয় হওয়ায় জনগণ প্রত্যাশিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়।
২. সমাজে আস্থার সংকট: জনগণের মধ্যে প্রশাসন ও সরকারের প্রতি বিশ্বাস কমে যায়।
৩. উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা: অপরিকল্পিত ও দুর্নীতিগ্রস্ত প্রকল্পের কারণে দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাহত হয়।
৪. বৈদেশিক বিনিয়োগে সংকট: আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিনিয়োগকারীরা দেশের সুশাসন নিয়ে প্রশ্ন তোলে, যা দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনায় বাধা সৃষ্টি করে।

দুর্নীতির কারণ সমূহ:

সরকারি আমলাদের দুর্নীতির পেছনে মূলত কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করা যায়:
১. জবাবদিহিতার অভাব: অনেক ক্ষেত্রেই আমলাদের কার্যক্রমের ওপর তদারকি কম থাকে, ফলে তারা নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করেন।
২. রাজনৈতিক প্রভাব: কিছু অসৎ আমলা রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করেন।
৩. কঠোর শাস্তির অভাব: দুর্নীতির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, যা অন্যদের জন্য প্রেরণা জোগায়।
৪. টেকসই সিস্টেমের অভাব: ডিজিটালাইজড ও স্বচ্ছ প্রশাসনিক ব্যবস্থা না থাকায় দুর্নীতি সহজে ঘটানো সম্ভব হয়।

সমাধান ও প্রতিরোধ:

সরকারি আমলাদের দুর্নীতি রোধে নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা জরুরি:

১. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালনা ও তদারকির ক্ষেত্রে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা।

২. কঠোর শাস্তি: দুর্নীতির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

৩. ডিজিটাল নজরদারি: প্রকল্প বাস্তবায়নের সব কার্যক্রম ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এনে জনগণের পর্যবেক্ষণের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।

৪. সুশাসন প্রতিষ্ঠা: প্রশাসনিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কমিয়ে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।

সরকারি আমলাদের দুর্নীতি দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তবে, এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের সদিচ্ছা এবং জনগণের সচেতনতা একসঙ্গে কাজ করতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং জনগণের আস্থা ফিরে আসবে। এজন্য প্রয়োজন কঠোর নীতিমালা এবং তার কার্যকর বাস্তবায়ন।




বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন, অত:পর স্বাধীনতা ও আমরা..

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পাকিস্তানের শাসনামলে দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) পশ্চিম পাকিস্তানের হাতে শোষিত হয়েছে।

এই শোষণ শুধু রাজনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং প্রশাসনিক প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছিল সুস্পষ্ট। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামই ধাপে ধাপে রূপ নেয় স্বাধীনতার আন্দোলনে, যা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে।

বৈষম্যের মূল কারণ

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর ভারত বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান নামে একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। এই রাষ্ট্র দুটি ভৌগোলিক অংশে বিভক্ত ছিল—পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) এবং পশ্চিম পাকিস্তান (বর্তমান পাকিস্তান)। যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ পূর্ব পাকিস্তানে বাস করত, রাষ্ট্রীয় সম্পদ, প্রশাসন এবং ক্ষমতা পশ্চিম পাকিস্তানের হাতে কেন্দ্রীভূত ছিল।

১. অর্থনৈতিক বৈষম্য:


পূর্ব পাকিস্তান দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৭০ শতাংশেরও বেশি সরবরাহ করত, প্রধানত পাট রপ্তানির মাধ্যমে। কিন্তু উন্নয়ন বাজেটের মাত্র ২৫ শতাংশ পূর্ব পাকিস্তানে বরাদ্দ হতো, যেখানে পশ্চিম পাকিস্তান পেত ৭৫ শতাংশ।

২. রাজনৈতিক বৈষম্য:
প্রশাসনিক ও সামরিক ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব ছিল খুবই সীমিত। এছাড়া, পূর্ব বাংলার মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত ছিল। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন এবং ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ও পশ্চিম পাকিস্তান মেনে নিতে পারেনি।

৩. ভাষাগত বৈষম্য:
১৯৪৮ সালে পাকিস্তান সরকার উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করলে পূর্ব বাংলার মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। বাঙালি জনগোষ্ঠীর ৫৬ শতাংশের মাতৃভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও এই সিদ্ধান্ত তাদের সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পরিচয়কে হুমকির মুখে ফেলেছিল।

বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন

১. ভাষা আন্দোলন (১৯৪৮-১৯৫২):


ভাষার অধিকারের দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার রাজপথে ছাত্ররা জীবন দেয়। এই আন্দোলন বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রথম বড় পদক্ষেপ এবং বাঙালির জাতীয়তাবাদী চেতনার ভিত্তি স্থাপন করে।

২. ছয় দফা আন্দোলন (১৯৬৬):


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা দাবি মূলত পূর্ব বাংলার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শোষণের অবসানের প্রস্তাব ছিল। এটি স্বাধীনতার আন্দোলনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

৩. গণঅভ্যুত্থান (১৯৬৯):
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান পশ্চিম পাকিস্তানের শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালির দীর্ঘ দিনের ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটায়।

৪. ১৯৭০ সালের নির্বাচন:
১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এটি বাঙালিদের ক্ষোভকে চরমে নিয়ে যায়।

স্বাধীনতা যুদ্ধ ও বিজয়

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালিকে স্বাধীনতার প্রস্তুতি নিতে উদ্বুদ্ধ করে। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা শুরু করে, যা “অপারেশন সার্চলাইট” নামে পরিচিত। এর পরপরই ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা আসে এবং শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে।

স্বাধীনতার পর আমরা

স্বাধীনতার ৫২ বছর পর আজ বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে উন্নতি করেছে। তবে বৈষম্যের কিছু চিত্র এখনো রয়ে গেছে, যেমন—
১. আঞ্চলিক বৈষম্য: শহর এবং গ্রামের মধ্যে উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধার পার্থক্য।
২. শ্রেণী বৈষম্য: ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান আয় বৈষম্য।
৩. লিঙ্গ বৈষম্য: নারীর কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ বেড়েছে, তবে বৈষম্য এখনো পুরোপুরি দূর হয়নি।

 

বাংলাদেশের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ছিল আমাদের স্বাধীনতার মূল চালিকাশক্তি। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের উচিত সব ধরনের বৈষম্য দূর করে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও সমতাপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। এ লক্ষ্য অর্জনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশই হতে পারে আমাদের স্বাধীনতার প্রকৃত স্বপ্ন পূরণের পথ।

Ads

Start Now.. showkatbd eDocs




অতীতের সকল সরকারের কাছ থেকে আমাদের শিক্ষনীয় ও বর্জনীয়

বাংলাদেশের ইতিহাসে বিভিন্ন সরকার এসেছে ও গেছে, প্রতিটি সরকারের রয়েছে তাদের নিজস্ব সাফল্য ও ব্যর্থতার গল্প। এই নিবন্ধে আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারের কাছ থেকে কী শিখতে পারি এবং কোন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা উচিত তা বিশ্লেষণ করব।

শিক্ষনীয়:

১. স্বাধীনতার সংগ্রাম ও নেতৃত্ব:

বাংলাদেশের প্রথম সরকার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন, আমাদের শিখিয়েছে স্বাধীনতা ও জাতীয়তাবাদ কীভাবে একটি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম আমাদের দেখিয়েছে কীভাবে দৃঢ় সংকল্প ও নেতৃত্বের মাধ্যমে একটি জাতি স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে।

২. গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা:

১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের আমলে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। এই সময়কালে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার গুরুত্ব আমাদের বুঝতে সাহায্য করেছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও সুশাসনের মাধ্যমে একটি দেশের উন্নয়ন কতটা সম্ভব, তা এই সময় থেকে আমরা শিখতে পারি।

৩. অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রাইভেট সেক্টরের ভূমিকা:

২০০৯ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন এবং প্রাইভেট সেক্টরের উন্নয়নে সরকারের ভূমিকা আমাদের শিখিয়েছে কিভাবে অর্থনৈতিক নীতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব।

৪. নারী উন্নয়ন ও শিক্ষা:

বিগত কয়েক দশকে বিভিন্ন সরকারের সময়ে নারী উন্নয়ন ও শিক্ষা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। নারীশিক্ষা ও ক্ষমতায়নের উপর জোর দেওয়ার মাধ্যমে একটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা অর্জন করা সম্ভব তা আমাদের সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ থেকে শেখা যায়।

Ads

Start Now.. showkatbd eDocs

বর্জনীয়:

১. দুর্নীতি:

বাংলাদেশের অনেক সরকারের সময়ে দুর্নীতি একটি সাধারণ সমস্যা ছিল এবং এখনও আছে। দুর্নীতি দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে এবং জনগণের আস্থা হ্রাস করে। এই সমস্যাটি আমাদের বর্জন করা উচিত এবং সুশাসনের মাধ্যমে এর সমাধান করা প্রয়োজন।

২. রাজনৈতিক সহিংসতা:

বিভিন্ন সরকারের সময়ে রাজনৈতিক সহিংসতা, হরতাল ও সংঘর্ষ দেখা গেছে যা দেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নকে ব্যাহত করেছে। শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এবং সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা উচিত।

৩. বাকস্বাধীনতা হরণ:

কিছু সরকারের সময়ে বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের উপর দমননীতি প্রয়োগ করা হয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তাই, আমাদের উচিত বাকস্বাধীনতা হরণের যে কোন প্রচেষ্টা প্রতিহত করা।

৪. অর্থনৈতিক বৈষম্য:

অতীতের বিভিন্ন সরকারের সময়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে বৈষম্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। ধনী-গরীবের পার্থক্য কমিয়ে আনতে আমাদের সমান সুযোগ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

৫. পরিবেশ অবহেলা:

বিভিন্ন সরকারের সময়ে পরিবেশ সংরক্ষণে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। উন্নয়ন কার্যক্রমের সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরি।

 

বাংলাদেশের অতীতের বিভিন্ন সরকারের কাছ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। সাফল্যগুলো আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়, আর ব্যর্থতাগুলো আমাদের শিক্ষা দেয় কিভাবে সেগুলো এড়িয়ে চলা যায়। সুশাসন, গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, এবং সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আমাদের এই শিক্ষাগুলোকে কাজে লাগাতে হবে এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি নিতে হবে।




ফ্যাসিবাদের ভূত কি তাহলে একটু একটু করে এগিয়ে আসছে

একজন অতি প্রতিভাবান কে বলা হলো আপনাকে দেশের  অন্তর্বর্তি সরকারের উপদেষ্টা করা হলো, উনি দড়ি ছিড়ে দৌড়ে চলে আসলেন আর শপথ বাক্য পাঠ করলেন, হয়ে গেলেন উপদেষ্টা..

আজিব ব্যাপার.. ঘটনাটা টিকটক ভিডিওর মতোই। হ্যা, বলছিলাম, মোস্তফা সারোয়ার ফারুকির কথা।আপাদ্মস্তক যার ফ্যাসিবাদ আর শাহবাগী চাদরে আবৃত। এমন একজন লোকের কিভাবে ঠাই হয় এই সরকারে? তাহলে কি ফ্যাসিবাদের ভুত একটু একটু করে এগিয়ে আসছে জাতির সম্মুখে।




সব আশাই আজ গুড়েবালি

আগষ্ট,২০২৪ স্বাধীনতায় আমাদের মতো সাধারন জনগনের স্বপ্নের আকাশে ঝিলমিল করে জেগে উঠেছিল রংগিন এক টুকরো আশার আলো। কিছু হবে নতুন করে, আশায় বেঁধেছিলাম বুক। সব আশাই আজ গুড়েবালি..

স্বাধীনতার পরে একটি করে দিন যতোই যাচ্ছে, ততোই আশাহত হচ্ছি। ভেংগে যাচ্ছে বুক, নিরাশা যেন জাপটে ধরছে জাতিকে।

একটা সময় আতংকিত ছিলাম, অতিত ফ্যাসিবাদি সরকারের কর্মকান্ডে। আমাদের বীর ছেলেরা সেই ভয়ের কালো চাদর সরিয়ে চোখে ঝলমলে রঙ্গীন চাদড় জড়িয়ে দিলো। এখন সেই রঙ্গীন চাদরও যেনো চোখ দুটোই উপড়ে ফেলতে চাইছে।

কি ছিলো তাহলে আগষ্টের সেই স্বাধীনতায়? তবে কি সেই রক্ত ঝড়ার পেছনে ছিলো কোনো অশুভ শকুনের দৃষ্টিপাত। নাকি তা মুষ্টিমেয় কারো (?) সাজানো চড়ুইভাতি।

বড়ই আফশোসের সাথে জানতে ইচ্ছে হয়,  দেশ কি তাহলে আবার কোনো অন্ধকারের অতলান্তে তলিয়ে যাচ্ছে? 

বর্তমান ক্ষমতার আসনে উপবিষ্টরা কি তাহলে হেরে যাচ্ছেন ? তাদের মেধা দূরদর্শিতা কি রাজনৈতিক ব্যক্তি মননের মেধার কাছে পরাজিত হচ্ছে ?

যদি কখনো তাই হয়, অতিতের ফ্যাসিবাদ সরকার ও তাদের দোশররা (অবৈধভাবে অর্জিত) অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ঠিকই (রাজনীতিতে যা কোনো ব্যাপারই নয়), এবং তারা বেঁচে আছেন (কারো না কারো শেল্টারে), তারা আবার ফিরে আসবেন নতুনরুপে, নতুন আংগিকে, এই সরকার বা জাতির কারোর পক্ষেই আর কিছু করার থাকবে না। কিন্তু এখনকার সরকারের এইসব (উপদেষ্টাদের) কি অবস্থা হবে, তা একমাত্র উপর ওয়ালাই জানেন। আর এই বিপ্লবের সেনানিদের জাতিইবা কিভাবে ভবিষ্যতে গ্রহন করবে, তা আমার বোধগম্য হচ্ছেনা।

কেবিনেটে পরিবর্তন হচ্ছে হবে, এটা স্বাভাবিক। এই ক্যাবিনেটে একের পর এক কিসব (মালের) যে আবির্ভাব হচ্ছে, তা দেখে সাধারন জনতা সত্যিই আজ আশাহত। অনেকের মুখ ফসকে বের হয়ে আসছে সব আশাই আজ গুড়েবালি । এমন ভাবে চলতে থাকলে অল্প সময়ের মাঝেই হয়তো জনতা ধিক্কার দিতে শুরু করবে ক্ষমতার আসনে অধিষ্টিত এই ইউনুস সরকারকে। যা আমাকে খুবি পিড়া  দিবে।

কেননা, আমার কলম কখনোই ফ্যাসিবাদের পক্ষে ছিলোনা, অন্যায়ের পক্ষ্যে ছিলোনা, ছিলো স্বাধীনতার পক্ষ্যে, নতুন দেশ গড়ার লক্ষে, স্বাধীনতাকামী হাজারও বীর  জনতার পক্ষে..

পরিশেষে, আগষ্ট,২০২৪ এ সকল শহীদদের রুহের আত্বার শান্তি কামনায়, আজকের মতো বিদায়..

ADS

showkatbd eDocs আপনার অফিস সহকারিShowkatbd eDocs is a full-featured online documents organized application site. Which is going to prepare document from just a form. It will save your time ! Bengali, English and Arabic letter generator is available here. Visit Now..




অতীত বর্তমান

অতীত বর্তমান নিয়ে মনে হয় প্রেমের পরে পৃথিবীর সব থেকে বেশী গল্প, কবিতা, উপন্যাস রচিত হয়েছে। সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় বিচরন হয়েছে এই শব্দটি। একজন মানুষ যেমন এই তিনটি শব্দের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তেমনি ঘুরে ফিরে এই তিনটি শব্দ দিয়েই গঠিত হয় সমাজ, সংসার, আমি, তুমি আমাদের, আজ, কাল আর আগামীর।

অতীত বর্তমান
– শওতক আকবার

পাখি ডাকা ভোর ছিলো
সোনালী দিন ছিলো
শান্তির ছায়া ছিলো
মায়া ভরা বুক ছিলো
দু নয়নে স্বপ্ন ছিলো
নিশি রাতে ঝিঝি ছিলো
আকাশে চাঁদ ছিলো
রাতে চোখে ঘুম ছিলো
বাবার শাষন ছিলো

মায়ের বকুনি ছিলো
ভাই বোনের খুনসুটি ছিলো
পড়া ফাকির রুটিন ছিলো
কলেজ ফাকির রোগও ছিলো
কবিতা লিখার চেষ্টা ছিলো
প্রেম নিয়ে ভাবনা ছিলো
না পাওয়ার বায়না ছিলো
লিচু চুরির গল্প ছিলো
ছিলনা তো ফেসবুক,
জীবনের পাতা থেকে
কেড়ে নিলো সব সুখ

অতীত বর্তমান

অতীত বর্তমান যুগে যুগে ছিলো, আছে, থাকবে অনাদি অনন্ত। সৃষ্টির শুরু যেমন অতীত, এই যে আমি, তুমি তা বর্তমান।