যদি সত্যিই হয়

যদি সত্যিই হয়; কবিতাটি আগষ্ট, ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যা নিয়ে রচিত। বাংলাদেশ বলেছে আগাম সতর্কতা ও প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ না দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ডাম্বুর বাঁধ খুলে দেয়ার কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আর ড্যাম খুলে দেয়ার অভিযোগটি নাকচ করে দিয়েছেন ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ।

যদি সত্যিই হয়
– মোহাম্মদ শওকত আকবার

স্বেচ্ছায় তুমি খুলে দিলে বাধ
ভাই ত্রিপুরা,
শত শত মানুষ করিলে নিধন
লাখো গৃহহারা।

ঘর বাড়ি, ফসলি জমি
সবি কাড়িয়া নিলে,
গোয়ালের গরু, পুকুরের মাছ
বানে ভাসাইয়া দিলে।

কি অন্যায় ছিলো আমাদের
আমরা তোমার পর?
ক্যামনে করিলে এমন বর্বরতা
হলে বর্বর।

এ যে নিষ্ঠুরতা , এ যে অন্যায়,
একবারই কি উঁকি দেয় নাই
বোধের আংগিনায়।

মানব হয়ে মানব নিধন
আমাদের কি শোভা পায়?
কে আছে আসাম, উড়িষ্যা, মেজোরাম,
কেবা ত্রিপুরা, বাংলায়।

মানবের কি কোনো দেশ হয়?
হয় কি জাত পাত?
সাড়া পৃথিবিই মানব আবাস
সবাই রহিম, রতন লাল নাথ।

ত্রিপুরা আর পুর্ব বাংলা
দুই পারে দুই ভিটি,
আমরাতো মানুষ একই পরিবার
একই আমাদের মাটি।

দুইদিকে দুইখান হতে পারে ভিটি
মানুষের আকার দুই নয়,
হিন্দু মুস্লিমের রক্ত তো লাল,
কারো কৃষ্ণকায় নয়।

স্বার্থের টানে যদি হয় এই
ঘটনার সুত্রপাত,
মোদি কিংবা মানিক সাহা
বলবো “নিপাত যাক”।

শত্রুতার ফল হয় কি ভালো
মনে রেখো মানিক আর মোদি,
তোমাদের জনতাই কাড়িয়া নিবে
তোমাদের ঐ গদি।

জাত পাত ভুলে জনতা
ধরবে চেপে  টুটি,
“রাম, রাম” যপোনা যতোই
হবেনা মুক্তি।
ভাংবে সেদিন জনতা মিলিয়া
সকল অসংগতি?

তারা তো কভু নিবেনা মানিয়া
জুলুম এই অন্যায়,
মানব খুনের দায়ে
হতে হবে দাঁড়
জনতার কাঠগড়ায়।

সৃষ্টি করেছো বিভেদ তোমরাই
হিন্দু মুসলমানে,
তোমরাই রাঙাও সবুজ মাটি
মানবের লাল খুনে।

মজলুমের কি তাগত দেখো,
উদাহরন বাংলাদেশ,
“হরি বল”, বলে তোমার জনতাই
করবে দিনের শেষ।

সেদিন আর বেশি দুরে নয়
মানিক সাহা আর মোদি,
তোমাদের দিকেই বাক নিবে দেখো
মানব খুনের নদী।

ভয়াবহ বন্যা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বশীল কোনো কোনো উপদেষ্টাকে বন্যার ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে। তারা অভিযোগ করেছেন, “বাংলাদেশকে আগাম সতর্কতা ও প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ না দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ডাম্বুর বাঁধ খুলে দেয়ার কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”
আগাম সতর্কতা ছাড়াই ড্যাম খুলে দেয়ার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ।

সম্পাদকীয়, দৈনিক সংবাদ
রোববার, ২৫ আগস্ট ২০২৪




বানভাসির আহাজারি

বানভাসির আহাজারি; এ আহাজারি আমার মায়ের, আমার বোনের, আমার প্রিয় কণ্যার। সে জাত পাতহীন একজন মানুষ। বানের তান্ডব তার সিঁদুর কেড়ে নিয়েছে।  তার আব্রু খুলে নিয়েছে। তার কোলের বাছারে গ্রাস করেছে। তার মাথা গোঁজার ঠাই ভাসিয়ে নিয়েছে। সকল হারিয়ে আজ নি:স্ব, সহায় সম্বলহীন এক গ্রামের রমনী। আমার মা, আমার বোন, সে আমারি কণ্যা।

বানভাসির আহাজারি
– মোহাম্মদ শওকত আকবার

বানের স্রোতে ভাসলো মানুষ
ডুবলো ঘর বাড়ি,
দুধের বাছা, জোয়ান, বৃদ্ধ,
ফসল সারি সারি।

ঘর গেলো চুলো গেলো
গেলো গোয়ালের গরু,
মাথার ছাদও ভেসে গেলো হায়
আরো গেলো আব্রু।

মৃতের সতকারে কিঞ্চিত মাটি নাই
জলে জলে ভরপুর,
সলিল সমাধি হইলো অযুত
মুসলিম আর হিন্দুর।

ভাসাইয়া দিয়া মৃতের সৎকার
করিতে হইলো আজি,
বান আসিলো, বান আসিলো
রাক্ষুসি সাজি।

গলাগলি করে বসবাস করি
সাপ বিচ্ছুর সাথে,
নৃশংস জানোয়ার কেঁদে ভাসায় বুক
মানবের বেদনাতে।

বানভাসির আহজারি

চারিদিকে অথৈ পানি
যতখানি চোখ যায়,
নীল আসমানও কষ্টের জল
অহর্নিশ ঝড়ায়।

সব হারিয়ে বিলাপ করি,
দানা পানি নাই পেটে,
সহিতে পারিনা ক্ষুদার যাতনা
বক্ষ যায় ফেটে।

ক্ষুধার তাড়নায় এসেছিলো যেজন
ফিরাই নাই তো কভু,
সেই আমি আজ ভিখেরি হলাম
দুখ নেই তো তবু..

আমারি মতোন লাখো মানুষের
নেই কোনো আজ ঠাই,
বানের স্রোতে ভেসে থাকি খানিক
খানিকটা সাতরাই।

সিঁথির সিঁদির মুছে গেলো হায়
শুন্য হইলো বুক,
বানবাসি হইলাম আজিকে,
হারাইলাম সব সুখ।

বানভাসির আহাজারি

হয়তো এক সময় কেটে যাবে এই দুর্যোগ। কিন্তু বানভাসীর এই মনের ক্ষত কি সহজে মুছবে? আমরা ফিরিয়ে দিতে পারবো তাদের উজ্জল অতীত। পারবোন। যে মা সন্তান হারিয়েছে, যে বোন তার সিঁদুর হারিয়েছে, যে ভাই তার মাথার ছাদ হারিয়েছে, যে বাবা তার ফসল হারিয়েছে। আমরা এসব কিছুই আর ফিরিয়ে দিতে পারবোনা। মুখ ভরে হয়তো আমরা আফশোশ করতে পারবো। যা তাদের কোনো উপকারেই আসবেনা।

তাদের বিন্দুমাত্র উপকারের জন্য আসুন বানভাসিদের পাশে দাঁড়াই। আপনার আমার যার যা আছে তা নিয়েই তাদের পাশে দাঁড়াই। মহান আল্লাহ তাদের সহায় হোক।

বানভাসির আহাজারি শুধু কি তাদের? এ আহাজারি আজ সমগ্র বাংলার আঠারো কোটি জনতার।




কষ্টের জারিজুরি

কষ্টের জারিজুরি – এই পোষ্টটি এক সময় একটি সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে প্রচার হয়েছিলো। বেশ কয়েকটি ভালো কমেন্টস্ এর পাশাপাশি বিশ্রী রকমের কমেন্টস্ এরও আবির্ভাব হয়েছিলো। প্রচারের পরের দিন দেখি, এডমিন লিখাটি সরিয়ে ফেলেছে। খারাপ লাগেনি। উৎসাহ পেয়েছিলাম এই ভেবে যে, আমার মতো একজন মুর্খ মানুষের দু’একটি কথা হয়তো বিচক্ষন এডমিন পড়েছেন। ভেবেছেন, হয়তো এই লিখাটির জন্য যদি তিনি বিতর্কিত হবেন ।

নিজের পোষ্ট নিয়ে আশা পেয়েছিলাম যে, হয়তো কিছু একটা হচ্ছে। আর তা ভালো বা খারাপ। আর আজ নিজের সাইটেই তা পাবলিশ করে দিলাম।

কষ্টের জারিজুরি
– মোহাম্মদ শওকত আকবার

মরি হায়রে হায়
দুখ্যে পরান যায়,
সোনার বাংলা লুইট্যা খাইলো
শেখ হাসিনায়,
মরি হায়রে হায়।

উন্নয়নের নামে করছে
রাস্তা, ঘাট, রেল, সেতু,
জাতীরে বানাইছে যেনো
আহাম্মক আর চদু।
হাজার টাকার বানাইছে বিল
লক্ষ টাকায়,
বাকী টাকা বস্তায় ভইরা
বিদেশে পাঠায়।
মরি হায়রে হায়
দুখ্যে পরান যায়,
সোনার বাংলা লুইট্যা খাইলো
শেখ হাসিনায়,
মরি হায়রে হায়।

খাদ্য পণ্যের বাড়াইছে দাম
কইরা সিন্ডিকেট,
জুলুমবাজী করছে কায়েম
জয় বাংলা ইজ গ্রেট।
ফ্ল্যাট, প্লট কিন্যা লইছে
বেগম পাড়ায়,
টাকার পাহাড় করছে আরো
খাটেরও তলায়।
মরি হায়িরে হায়
দুখ্যে পরান যায়,
সোনার বাংলা নষ্ট করলো
শেখ হাসিনায়,
মরি হায়িরে হায়।

জন্ম দিছে ঘরে ঘরে
নেতা, পাতি নেতা,
হাজার কোটির মালিক হইছে
ছিলোনা যার খ্যাতা।
খ্যাতা ছাইড়া এখন তারা
ম্যাট্রেসে ঘুমায়,
সাথে লইয়া মক্ষিরানী
জান্নাতে হারায়।
মরি হায়িরে হায়
দুখ্যে পরান যায়,
সোনার বাংলা লুইট্যা খাইলো
শেখ হাসিনায়,
মরি হায়িরে হায়।


শিক্ষা দিক্ষা খাইছে গিল্যা
মুজিব কর্নারে,
বাচ্চাদের উতসাহ দেয়
ট্রাঞ্জেন্ডারে।
বইয়ের ভিতর ভুল ভালের
ইতিহাস ভরা,
ছাত্র, শিক্ষক সবাই মিল্যা
ছাড়ছে লেখা পড়া।
আবোল তাবোল শিক্ষা দিয়া
জাতিরে ঠকায়।
যা দেইখা শয়তানেও
কান্দিয়া পালায়।
মরি হায়িরে হায়
দুখ্যে পরান যায়,
সোনার বাংলা ধ্বংস করলো
শেখ হাসিনায়,
মরি হায়িরে হায়।

কি বলবো আর তাদের কথা
টাকলা, কাঊয়া অলি,
টাকার লোভে ন্যায়, সততা
দিছে জ্বলাঞ্জলি।
সংসদ যেনো হইলো তাদের
রংগের বাইজিখানা,
নাইচা দেখাইছিলো নুর
মমতা গাইছে গানা।
মরি হায়িরে হায়
দুখ্যে পরান যায়,
সোনার বাংলা ধ্বংস করলো
শেখ হাসিনায়,
মরি হায়িরে হায়।

তোমার কাছে বিচার দিলাম
প্রভু দয়াময়,
বিচার কইরো এই জালিমদের
জনতার কাঠগড়ায়।
তোমার রহমত দিয়া
উদ্ধার করো দেশ,
তানা হইলে বিরান হইবো
সোনার বাংলাদেশ।
মরি হায়িরে হায়
দুখ্যে পরান যায়,
সোনার বাংলা ধ্বংস করলো
শেখ হাসিনায়।
মরি হায়িরে হায়

জুলাই ৩০, ২০২৪ইং

সুদীর্ঘ ষোলটি বছর নির্মম ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলো আওয়ামীলীগ সরকার। খুন, গুম, অর্থপাচারসহ এহেন কোনো ঘৃন্য ও জঘন্যতম কর্ম নেই যা এই সরকার কায়েম করে নাই। রাজ্যের প্রতিটি সেকটর তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে করেছে নিঃস্ব, শেয়ার মার্কেট করেছে ধ্বংসা, শিক্ষা ব্যবস্থাকে করেছে পঙ্গু। যার ফর্দ তৈরি করেও শেষ করা যাবেনা।

ভেতরে ভেতরে ফুঁশে উঠেছিলো জাতি। আর আল্লাহ্ রাহমানীর রাহিম অবশেষে নিজের অশেষ রহমত দিয়ে মুক্ত করেছেন এই দেশ।

আজ আমরা ফ্যাসিবাদী সরকারের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত। অন্তর্বতী সরকার ক্ষমতায়। এ সরকারের কাছে জাতির অনেক প্রত্যাশা। জাতি আজ চেয়ে আছে তাদের দিকে। সততা আর একনিষ্টতার সাথে তারা দেশকে নিয়ে যাবে শান্তির দোড়গোড়ায়।

জাতি তাদের সময় দিবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলও সময় দিবে। যদি জাতির প্রত্যাশা পূরনে কোনো রকম ব্যর্থতার পরিচয় দেয় এই সরকার, তাহলে এদেশ এখানেই থমকে যাবে। হারিয়ে যাবো আমরা, বিলীন হয়ে আমার সোনার বাংলা।

বাংলাদেশ দীর্ঘজীবি হোক।




আওয়ামী সরকারের বন্দনা নামা, 2024

আওয়ামী সরকারের বন্দনা নামা, 2024 সালের 5 আগষ্ট,  দুর্ধর্ষ খুনী, নব্য সীমার, ফ্যাসিবাদি শেখ হাসিনা ও তার সাঙ্গ পাঙ্গদের ক্ষমতার অবসান, সাড়া বাংলাদেশ থেকে আওয়ামীলীগের দূর্নীতিবাজ মন্ত্রি, এমপি, আমলারা জীবন বাঁচানোর জন্য খোলশ পরিবর্তন এবং দেশ ত্যাগের পরের চিত্র নিয়ে রচিত একটি গণ-সঙ্গীত। ধিক সেই সব জুলুমবাজদের। যারা নিজের মাকে অন্ধকার গলিতে বেঁচে দিতেও দ্বিধাবোধ করেনা।

আওয়ামী সরকারের বন্দনা নামা, 2024
– মোহাম্মদ শওকত আকবার

দেখো জনগনের ঠেলায়
দেশ ছাইড়া পালায়,
দুর্নিতীবাজ মন্ত্রি, এমপি
আমলারা সবায়,
হাসিনাও ঠাই নিলো
মোদির হেরেম খানায়,
দেখো জনগনের ঠেলায়
দেশ ছাইড়া পালায়।

অস্ত্রবাজি, খুন, গুম আর ভোটের প্রহসন,
ষোল বছর এম্নি করছে দেশের উন্নয়ন।
লুইট্যা পুইট্যা খাইছেরে দেশ বইসা ক্ষমতায়।
কাউয়া, ফেউয়া, দরবেশ, অলি, ভন্ডরা সবায়,
দেখো, প্রান বাঁচানোর আশায় গর্তে যে লুকায়।

মাথা মোটা, আবাল চোদা মন্ত্রি মিনিষ্টার,
নর্তকি আর বাইজি দিয়া দেশ করছে ছারখার।
দেশটা নাকি  বাপেরি তার
চিল্লায়া যে কয়,
বাপের ভিটা ছাইড়া শেষে
পালায় ইন্ডিয়ায়।
দেখো, প্রান বাঁচানোর আশায়
দেশ ছাইড়া পালায়।

বুদ্ধিজীবি দিছে ফাশি বইলা রাজাকার,
বীর সেনাদের বধের নাটক পিলখানা ঘটনার।

বাপের খুনের বদলা নিলো
নিজের কাঠগড়ায়।
নতুন রুপে বইসা সে
সিমারের জায়গায়।
দেখো, প্রান বাঁচানোর আশায়
দেশ ছাইড়া পালায়।

আওয়ামী সরকারের বন্দনানামাপাপের বোঝা করছে ভারি
ষোল বছর ধরে,
হাজার মানুষ করছে্রে খুন
রাইখা আয়না ঘরে,
অপকর্মের করছে পাহাড়
জয় বাংলার দোয়ায়।
পাতি নেতা, ছাতি নেতা গর্তে যে লুকায়।
দেখো, প্রান বাঁচানোর আশায়
দেশ ছাইড়া পালায়।

গল্প বলার রাক্ষুসিরে
দেখলো কচি কাচা,
যার হাতেই বাংগালির
ছিলো মরা বাঁচা।
ইবলিশও যে মানছে হার
শেখ হাসিনার কাছে,
ইবলিশে কয় আমার গুরু
বাংলাদেশেই আছে।
হাসিনারে রাইখা ইবলিশ
শান্তি মনে পায়,
তার দায়িত্ব হাসিনারে
অর্পন কইরা যায়।
দেখো জনগনের ঠেলায়,
দেশ ছাইড়া পালায়।

জুলুমবাজি কইরা কেউ
পায় নাতো পাড়,
আল্লাহ পাক করেন একদিন
জুলুমের বিচার।
জুলুমকারির মান সন্মান
আল্লায় কাইড়া নেয়,
নাস্তা নাবুদ কইরা ছাড়ে
এই দুনিয়ায়।
আখিরাতের বোনাস বিচার
থাকে বাকির খাতায়।
দেখো, জনগনের ঠেলায় দেশ ছাইড়া পালায়।

পরিশেষে, আঠারো কোটি নিষ্পেষিত বাঙ্গালী আজ একটি সুখী, সমৃদ্ধ, মত প্রকাশের স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখি। অতীতের শিক্ষা নিয়ে নতুন রাজনীতিবিদরা সাদা মন নিয়ে, দেশ গঠনের অঙ্গিকার নিয়ে এগিয়ে যাবেন, তা-ই আমাদের প্রত্যাশা। বাংলাদেশ দীর্ঘজীবি হোক।




প্রার্থনা..

প্রার্থনা.. হে আল্লাহ তোমার কাছে হাত তুলে ক্ষমা চাই। ক্ষমা করো। তুমি রহমান, তুমি রহীম। তুমি ছাড়া তো কেউ আর ক্ষমা করার নাই। হে আল্লাহ্ ক্ষমা করো।

প্রার্থনা..
মোহাম্মদ শওকত আকবার

মাফ করো আমারে প্রভূ
মাফ করো আমারে,
কি নিয়ে যাবো আমি
অন্ধকার কবরে,
থাকবো কি করে সেথায়
সাপ বিচ্ছুর ঐ ঘরে,
মাফ করো আমারে
আল্লাহ্ মাফ করো আমারে।

ঘুরলাম, ফিরলাম, খাইলাম, দাইলাম
করলাম কতো কি
মিছে মায়ায় বাঁধলাম আমি
ঠুনকো বসতি।
লোভের মাঝে রইলাম পড়ে
জনম ভরে..
মাফ করো আমারে
আল্লাহ্ মাফ করো আমারে।

চিনলাম না কি সত্য মিথ্যা
ভালো কি আর মন্দ,
কাটলো নাতো এই জীবনের
কোনো দ্বিধাদ্বন্ধ,
পাপের বোঝা করলাম ভারি
নফসের ধোকায় পড়ে।
মাফ করো আমারে
আল্লাহ্ মাফ করো আমারে।

প্রার্থনা

অচিন পাখি ধোকা দিয়ে
যাবে উড়িয়া,
পোষলাম যারে এতোটাকাল
আপন করিয়া।
ভাবিনি সে চলে যাবে
আমায় একা করে।
মাফ করো আমারে
আল্লাহ্ মাফ করো আমারে।

স্ত্রী সন্তান ভুলেই যাবে
তিনদিনেরও পরে,
বুকে টেনে নিবেনা কেউ
আপনও করে।
একলা শুধুই কানবো পড়ে
অন্ধকার কবরে,
আল্লাহ অন্ধকার কবরে।
মাফ করো আমারে
আল্লাহ্ মাফ করো আমারে।

তুমি ছাড়া সঙ্গী নাই কেউ
মাটির অইনা ঘরে
একটু আলো জ্বালিয়ে দিও
আমার শিয়রে,
থাকতে একা পারবোনা সেথায়
যাবোই মরে ডরে।
মাফ করো আমারে
আল্লাহ্ মাফ করো আমারে।




ধর্ম আমার মানবতা

ধর্ম আমার মানবতা – এ যেন ব্যথিত হৃদয়ের ক্রন্দন। যে মানবতা আজ নিষ্পেষিত ধর্ম আর ক্ষমতার ষ্টিম রোলারে। সেই মানবতা নিয়েই কবির আর্তনাদ।

ধর্ম আমার মানবতা
-মোহাম্মদ শওকত আকবার

ধর্ম আমার মানবতা
আমি মানুষ জাতী,
এরচে বেশী দেয়ার নেইতো
আমার পরিচিতি।
মানবতার জয়গান করি আমি নিরন্তর,
হিন্দু, মুস্লিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান নই,
আমি মানবতার কারিগর।

মসজিদ, মন্দির নিয়ে মাথা ব্যাথা নাই
সাম্যের কথা বলি,
মানবের বুকে চলছে কেনো
ট্যাংক, কামানের গুলি,
একই স্রষ্টার সৃষ্টি তো সকলেই
কেউ নয়তো পর,
হিন্দু, মুস্লিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান নই,
আমি মানবতার কারিগর।

ধর্ম আসেনি আগে ধরায়
এসেছে মানব জাতী,
মানব জন্মই অন্ধকারে
জ্বেলেছে বাতি।
তাহলে কেনো ধর্ম নিয়ে
হানাহানি করে,
লাশের পাহাড় উঠছে গড়ে
প্রথিবীটা জুড়ে।
মানব খুনের নেশায় কেনো
হয়েছি বর্বর,
হিন্দু, মুস্লিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান নই,
আমি মানবতার কারিগর।

মানব আমার পরিচয় হোক
ধর্ম হোক পরে,
ধর্ম আমি মানি কিকরে যদি
মানুষ গুলিতে মরে।
কাদের শুনাবো ধর্মের বানী
কোরান, বাইবেল, গীতা
ধরনী থেকে যায় যদি ভেগে
সাম্য আর মানবতা।
হে মানব জাতি, এ অসংগতি
পারিনা সইতে আর,
মানুষের খুনে শোধ্রাতে হয় কেনো
ধর্ম নামের কর।
হিন্দু, মুস্লিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান নই,
আমি মানবতার কারিগর।

মানুষে মানুষে এ কেমন ভেদাভেদ চলছে আজি হায়?
ধর্ম নিয়ে ধর্ম গুরুরা নেমেছে ব্যবসায়।
পুরোহিত যেন খড়্গ চালায়
ইমামের ’পর,
ফাদার আজি নেয় কেড়ে হায়
পুরোহিতের ধর।

ধর্ম আমার মানবতা

সহিতে পারিনা এই উন্মাদনা,
দগ্ধ হয় অন্তর।
হিন্দু, মুস্লিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান নই,
আমি মানবতার কারিগর।

হে মানুষ জাতি, শোনো কান পাতি,
তোমার রক্তে আমার রক্তে
তফাত কি কোনো পাও,
লাল, কালো বা সাদা?
নিজেকে শুধাও।
এ কেমন বিভেদের ধর্ম
মেনেছো অগত্যা,
বাইবেল, গীতা কোরানে কি বলেছে
করিতে মানব হত্যা।
ফেরি করে কেনো বেচে দিচ্ছো
পুরোটা মানবতা,
মসজিদ, মন্দির নিয়ে
মাথা ব্যাথা নাই
বাঁচুক জনতা,
হে দয়াময়, তোমার রহমে
শুদ্ধ করো অন্তর।
হিন্দু, মুস্লিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান নই,
আমি মানবতার কারিগর।

কে ইমাম, কে পুরোহিত
কে ফাদার পেগোডার,
মানবতার গান গাইতে যেয়ে আজ
ধারিনা কারো ধার।
মানবের কথা বলে যেজন
ভক্তি করি আজ তারে,
তার পেছনেই দাঁড়িয়ে সিজদা
করবো স্রষ্টারে।

ধর্ম আর ক্ষমতার জালে
যে মানবতা আজ বন্দি,
হায়েনার সাথে মানব খূনের
ভাংবোই এ সন্ধি।

চাহিনা আর মানব খুনে
ধরা হোক সয়লাব,
প্রভূ দয়াময়, দেখতে চাইনা ধরায়
নরকের আজাব।
মসজিদ, মন্দির নিয়ে
মাথা ব্যাথা নাই
বাঁচলে জনতা,
তোমার আমার এই পৃথিবী
হবে যে সুন্দর,
হিন্দু, মুস্লিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান নই,
আমি মানবতার কারিগর।

ধর্ম আমার মানবতা

পরিশেষে, আসুন সকলেই আমরা আজ মানবতার গান গাই। ধর্ম আর ক্ষমতা দিয়ে মানবতা ধ্বংস করার প্রত্যয়ে যারা নিবেদিত, আসুন তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। তা যে দেশেই হোক না কেনো? এশিয়া থেকে ইউরো, ইউরোপ থেকে আফ্রিকা। যে ধর্মেরই হোক না কেনো? হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান? মানুষ হিসেবে আসুন প্রতিজ্ঞা করি : ধর্ম আমার মানবতা




নতুন দিনের কবিতা

নতুন দিনের কবিতা হচ্ছে, ষোল বছর ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্যাতনের কবল থেকে মুক্তির স্বাদ গ্রহনের আনন্দে উল্লাসিত কবির মনের ভাবাবেগ। যা প্রতিটি বাংগালীর মনের কথা।

নতুন দিনের কবিতা
মো: শওকত আকবার

চাইনা আর আওয়ামীলীগ
বিএনপি, বিজেপি, জামাত,
যাক কেটে যাক অনানিশা
আসুক শান্তির সুপ্রভাত..

দেশকে ভালোবাসবে যারা
করবেনা আর লুটপাট,
দেশ সেবার ব্রত নিয়ে
রাখবে যারা হাতে হাত-

তারাই হবে জাতীর নেতা
ধরবে দেশের হাল,
গড়বে দেশ সুখ শান্তির
সরিয়ে জঞ্জাল,

দেখবে বিশ্ব অবাক হয়ে
বাংগালি এক জাতি,
অদম্য এক শক্তি নিয়ে
আধারে জ্বালায় বাতি।

হেন করেংগা, তেন করেংগা
শুনতে আমরা চাইনা আর,
যেজন ঝাড়বে ফাঁকা বুলি
মটকাবে তার ঘাড়।

বয়কট হবে সন্ত্রাসীরা
মেধার হবে বিকাশ,

নতুন দিনের কবিতা

অস্ত্র নয়, মেধা দিয়েই
অন্যায় হবে নাশ।

সংসদে আর ঠাঁই নাই,
বাঁচাল, আবাল, মাথা মোটা,
সংসদ হোক সবার তরে
মসজিদ, মন্দির, পেগোডা।

অস্ত্র বাজি, অর্থ বাজি
নয় আর পেশি শক্তি,
রাজনীতি হোক মানব সেবা
শান্তির জন্য চুক্তি।

হানাহানি, টেন্ডারবাজি
বন্ধ হোক চিরতরে,
সুখের পিদীম উঠুক জ্বলে
বাংলা মায়ের ঘরে ঘরে।

আবু সাইদ, মুগ্ধরা সব
শান্তি যেনো পায়,
ওদের রক্ত হাতে নিয়ে
শপথ করি সবায়।




এ্যালার্জির নাম মোল্লা..

এ্যালার্জির নাম মোল্লা বা হুজুর। আমাদের সমাজে এক প্রকারের মনুষ্য শ্রেনি মোল্লা বা হুজুরদের লইয়া প্রচন্ড রকম এ্যালার্জিতে ভোগেন। আর উহাই মোল্লা বা হুজুর এ্যালার্জি নামে অভিহিত। ”The name of the allergy is Molla“. উহারা মোল্লা, উহারা হুজুর, উহারা মাদ্রাসায় পড়ে, উহারা এতিমখানায় থাকিয়া লালিত পালিত হইয়াছে, উহাদের শরিরে শুধুই গন্ধ, উহারা মানুষের বাড়িতে খায়.. ইত্যাদি ইত্যাদি।।

উহারা মুর্খ, উহারা বলদ, উহারা ধর্ষক, উহারা নিজের জন্যি হারাম কর্মকে হালাল করিয়া থাকে, উহারা সমাজের কিট, উহারা সমাজে চলার অযোগ্য। উহারা মোল্লা, উহারা হুজুর..

এ্যালার্জির নাম মোল্লা এজন্য যে, উহারা আল্লাহ তায়ালার আসমানি কিতাব অধ্যয়ন করিয়াছে, উহারা জাতিকে ইসলামের সূধা পানের আমৃত্যু আমন্ত্রন জানায়। উহারা কালিমার প্রতিটি শব্দকে মনে প্রানে বিশ্বাষ করিয়া থাকে। প্রানপন উহারা প্রিয় নবিজির সুন্নাত ধারন করিয়া থাকে, উহারা সমাজে ভালো কর্মের আদেশ দেয়, নিকৃষ্ট কর্ম হইতে বিরত থাকার আহবান জানায়।

বাংলা ভাষার অভিধানে যত রকমের অশ্লিল, গন্ধযুক্ত কন্টকাকির্ন শব্দ রহিয়াছে তাহা কেবল সমাজের অই এক শ্রেনির মোল্লা বা হুজুরদের জন্যিই সম্ভবত ভাষাবিদগন  সংগ্রহ করিয়া অই পুস্তিকায় সংযোজন করিয়াছেন।

যাহারা এলার্জিতে ভুগেন তাহারা নাকি এই সামাজের শিক্ষিত বুদ্ধিজিবি, সাদা মনের মানুষ, তাহারা সুশিল সমাজ।

তাহাদের কাছে আমার ছোটটো একখানা প্রশ্ন : যেই সকল মোল্লা বা হুজুরদের আপনারা এতোটাই ঘৃনা করিয়া থাকেন, সেই মোল্লা বা হুজুররাই কিন্তু আপনার বাবা মায়ের শারিরিক সম্পর্ককে হালাল করিয়াছিলেন বিবাহ নামক একখানা সামাজিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে। তাহা যদি না হইতো আপনার পরিচয়টাই আজ পরিবর্তিত হইয়া ঘৃনিত হইতো। আপনার বাবা মায়ের শারিরিকি সম্পর্কটাই অবৈধ হইয়া যাইতো।  অবৈধ সম্পর্কে যে সন্তানাদি জন্মগ্রহন করিয়া থাকে সেই সকল সন্তানদের পরিচয় আমাদের সমাজ অবৈধ সম্পর্কের সন্তান বা জারজ সন্তান বলিয়াই আখ্যা দিয়া থাকে। এই লজ্জাজনক বিশেষন খানা আপনি আজ কিভাবে গ্রহন করিতেন?

আর আপনার জন্ম গ্রহনের পরে এই মোল্লা বা হুজুরদের ডাকিয়াই কিন্তু আপনার বাবা আজানের ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। সমাজে আপনার আগমনের বার্তা জানাইয়া ছিলেন। আবার আপনার বাবা বা মায়ের মৃতুর পর আপনিই কিন্তু এই মোল্লাদের গ্রুপ করিয়া ডাকিয়াছিলেন কোরান তিলাওয়াতে জন্যি। একটুসখানি হাত তুলিয়া আল্লাহর দরবারে দোয়ার জন্যি। আর এই মোল্লা বা হুজুররাই কিন্ত আপনার জন্ম দাতা পিতা বা গর্ভধারিনি মায়ের দাফন কাফন বা অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করিয়া ছিলেন।

আমি মূর্খ মানব। ধর্ম কর্ম কিছুই শিখিতে পারি নাই। পৈত্রিক সুত্রে মুসলমান। তাই উহা আগলে ধরিয়াই রহিয়াছি। উহাই মানিয়া চলার চেষ্টা করি। আর একজন পৈত্রিক সূত্রে মুসলমান হওয়া মানব হিসেবে ছোটটো এই প্রশ্ন খানা আমার ছোটটো মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায় অবিরত। আর তাহাই উপস্থাপন করার চেষ্টা করিলাম।

আপনিও যদি পৈত্রিক সূত্রে মুসলমান হইয়া থাকেন, বা নিজেকে মুসলমান দাবি করিয়া থাকেন, দয়া করিয়া এই ধরনের উদ্ভট চিন্তা মাথা হইতে ভালো মানের শ্যাম্পু দ্বারা ধুইয়া মুছিয়া ফেলুন। স্বীয় মাথাখানা আবর্জনাপুর্ন চিন্তা- ভাবনা হইতে ঝাড়িয়া ফেলিয়া পরিস্কার করিয়া ফেলুন।

ঠিক আছে, মোল্লা বা হুজুরদের আপনার ভালো লাগে না, তাহাদের পছন্দ হয় না, তাহাদের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেন। দেশের কানুন মোতাবেক তাহাদের বিচার করেন। আইন মোতাবেক একজন মোল্লা বা হুজুর খারাপ করিয়াছে, তাই বলিয়া সমগ্র মোল্লা বা হুজুরদের ঢালাওভাবে ঘৃনা করিতে পারেন না.. সেই অধিকার আপনাদের নাই।

একজন খুনির জন্যি তো আর সমগ্র মানব জাতি খুনি উপাধি পাইতে পারে না। ইহা বড়ই অন্যায়।

যদি পারেন পাপকে ঘৃনা করেন, পাপীকে নহে।

বোধোদয় ঘটুক সকল সুশিল সমাজের বাসিন্দাদের।




জ্ঞানের বিস্ফোরন ও মুর্খের দৃষ্টিভঙ্গি..

জ্ঞানের বিস্ফোরন হচ্ছে যতো আমরা ততোই পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছি, বদলে যাচ্ছি। মানবতা, ভালোবাসা, প্রেম, মায়া, মমতা, ধর্ম – বিলিন হচ্ছে আমদের ভেতর থেকে। আমরা এক গভির অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছি দিনের পর দিন।

মুঠোফোন ও সোশাল মিডিয়া :

”মুঠোফোন” আর ”সোশাল মিডিয়া একটির সাথে আরেকটি যেনো অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। একটি ব্যতিত আরেকটি যেনো অচল, অসাড়। এই দুইটি মাধ্যম একত্রিত হয়ে বর্তমানে আমাদের নিত্য প্রয়োজনিয় ও ব্যবহার্য ”মাধ্যম” হয়ে দাড়িয়েছে। আনন্দ বিনোদন, ব্যবসা বানিজ্য প্রতিটি সেক্টরেই এদের বিচরন, সর্বত্রই এদের ব্যবহার। এদের উপকারিতা বর্ননা করেও শেষ করা যাবে না।

সোশাল মিডিয়ার বদৌলতে আমরা আজ মুহুর্তেই জানতে পারছি দেশ বিদেশের খবরাখবর, ইতিহাস-ঐতিহ্য, টেনকোলজির সর্বশেষ আদোপ্যান্ত। আনন্দ, বিনোদন, কান্না, হাসি, কষ্ট, বেচা কেনা, পর্নগ্রাফি, জ্ঞান বিজ্ঞান, আলোচনা সমালোচলা, রাজনিতি, অর্থনিতি, ধর্ম, শিক্ষা, সংস্তৃতি – সকল কিছুই.. । এত্তো এত্তো উপকারি একটি মাধ্যমকে আজ আমরা একদম ফেলনা, খেলনা, যন্ত্রনা, বিরক্তিকর বানিয়ে ফেলেছি। (আমার এই আর্টিকেল শুধুই আমার দেশের বাংলা ভাষা ভাষির জন্যই রচিত) ।

একি খেলা চলছে হর্দম :

ব্যস্ত, সবাই ব্যস্ত.. প্রচার প্রসার, নিজেকে জাহির করার মানসে। আজ সবাই অভিনেতা, ব্যবসায়ি, উপদেষ্টা, জ্ঞানি, ডাক্তার, কবিরাজ, সকলেই ধর্মের দায়ি। বাদ নাই কিছুই। কারো তৈরি করা কিছু দেখার বা শুনার মতো সময় নেই কারোরই। সবাই দেখাতেই ব্যস্ত.. ব্যস্ত প্রচার আর প্রশারের জন্যি।

আমার একটি বদনা আছে, আমি অমুক ব্রান্ড হতে একটি জাংগিয়া কিনেছি, আমার বাল কাটার মেশিন টা সূদুর মরুভুমির দেশ দুবাই হতে আমদানী করা, আমি সর্বদা মানুষের উপকারের জন্যি আইক্কা ওয়ালা বাশ নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে দৌড়াচ্ছি, আমার মতোন এই সমাজে বড় কোনো দাতা নাই, আমার মতোন এমন পতিভক্তি কারো নাই, স্বামী সন্তান, শ্বশুর শ্বাশুরি লইয়া এই প্রথিবীতে আমার মতোন সুখি কেউ নাই। আমার মতোন জ্ঞানি নাই কেউ, আমি সবজান্তা শমসের… আমার অমুকটাই সবার চাইতে উৎকৃষ্ট.. সকলেরটা নিকৃষ্ট.. আবার ঠিক উল্টোটাও আছে। কাকে কে ছোটো করে দেখবে, কার পোষ্টে কে একখানা জব্বর উত্তর দিয়ে ধরাশায়ি করবে, এক বিকৃত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করছি প্রতিনিয়ত। হিনমন্যতায় ডুবে যাচ্ছি দিনের পর দিন।

ভাইরাও নামক ডিজিস :

ভাইরাও (শওকত বিডির ভাষায়, নিজেকে প্রচারের আরেক নাম) হবার নতুন আজিব এক কর্মশালা ছুটে চলছি অনন্তর । কেউ থেমে নাই, দাদা, দাদি, নানা নানি, বাবা, মা। আর সন্তান.. কেমন যেনো একখানা জগা খিচুরি মার্কা সময় অতিবাহিত করছি সকলেই। প্রযোজক, পরিচালক, ফটোগ্রাফার, ক্যামেরাম্যান, ভিডিও এডিটর, স্ক্রিপ্ট রাইটার, আমরা সকলেই। তৈরি করছি ভিডিও।

সৃষ্টি সুখের উল্লাসে :

কিরুপে চুলায় ভাত রান্না করতে হয়, তা নিয়ে ব্যতি ব্যস্ত আমাদের দাদিমা, আলু ভর্তার রেসিপি নিয়ে গলদঘর্মা আমাদের জননি, কিরুপে কেশবতি কন্যারা কৃষ্ঞ কেশে তৈল মেখে সিথি কাটবে, তার একটি সর্ট কোর্স শিখাতে সকাল সন্ধ্যায় ব্যস্ত বইন আমার, শেভ করার ভিডিও বানাতে ব্যস্ত আব্বাজান, আর দাদাজান ব্যস্ত দু একটা ওয়াজ নসিহত সংগ্রহ করে ভিডিও বানাতে, বড় বৈদি ব্যস্থ কিভাবে শাড়ি ছায়া পড়তে হয়, তা শিখাতে, বুয়াও ব্যস্থ কোন বাসার স্যার মেডাম ঝগড়া কাজিয়ায় লিপ্ত তা রেকর্ড করে ভিডিও তৈরিতে। বড়ই ব্যস্ত সকলে.. সৃষ্টি সুখের উল্লাসে।
কেউ থেমে নেই।

হারিয়ে যাচ্ছে নৈতিকতা :

ছোটো ছোটো বাচ্চারা বিস্রি বিস্রি যতসব অঙ্গভঙ্গি করে ভিডিও তৈরি করে প্রচার করছে। সেলিব্রেটি হতে নিজেদের উজার করে দিচ্ছে। ভুলে যাচ্ছে লাজ-শরম। এটাইতো স্বাভাবিক। তারাতো আমাদের কাছ থেকেই শিখছে এসব।

ভিডিও বানাতে হবে, ভাইরাও হতে হবে। ভিউ বাড়াতে হবে। কেউ তা প্রত্যক্ষ করুক আর নাই করুক, কিঞ্চিত ডলার খরচ করে, জোড় করে ফেসবুকে একটি বিজ্ঞাপন দিয়ে তার ভিউর সংখ্যা বাড়াতেই হবে। কি থুইয়া যে কি সৃষ্টি করছি, কেউ কিছুই বলতে পারছি না। ভৈরবি নৃত্য করছি একযোগে।

জ্ঞানের বিস্ফোরন চতুর্দিকে :

জ্ঞানহিন (?) লোক একটি চ্যানেল খুলে মোটিভেশনাল স্পিসের জনক সেজে এখান থেকে কিছু ওখান থেকে কিছু কাট ছাট করে কপি পেষ্ট মেরে প্রতি নিয়ত মোটিভেশনাল স্পিস দিয়ে যাচ্ছে। এটা করিও, ওটা করিওনা, নিজের অধিকার আদায় করে নাও, না বলতে শিখো। কি দিয়ে যে কি হবে স্পিকার মহাশয় নিজেই জানেন না। ভিন্নধর্মী কিছু করতে হবে-তাই যেনো সকলের মন বাসনা। কিছু হোক আর না হোক, সমাজে তা চুলুক আর নাই চলুক, তাকে করতেই হবে।

জব্বর মিয়া, জুম্মার নামাযের সময় রাস্তার সস্তা দোকানে বসে টিক টিক ভিডিও দেখে আপ্লুত হওয়ার পাশাপাশি বিড়ি ফুকতে ফুকতে ”জুম্মা মোবারক” লিখে তার হোয়াটস আপ গ্রুপে পোষ্ট মেরে দিচ্ছে। ।

কবির মিয়া, জুম্মার খুতবায় তার পিচ্ছি পোলার লগে একখানা সেল্ফি তুলে, ফেসবুকে পোষ্ট করে ক্যাপশণে লিখছে, ”আমরা বাপ বেটা এখন অমুক মসজিদে, জুম্মার খুতবায়”।

সোলায়মান খান, কাবা ঘরের সামনে দাড়িয়ে সেলিফি তুলে কেপশন দিচ্ছে – ”হজ্ব করছি। এইবার নিয়ে দুইবার হজ করলাম”।

মদ্যপ মাতাল দেলু মিয়া, একখানা টুপি মাথায় রাস্তার ভিখেরীর সাথে সেলফি তুলে কেপশন দিচ্ছে : ”গরিবের প্রতি সদয় হোন”। কত্তো কত্তো কি ?? বাদ নাই কিছুই। হর্দম চলিতেছে!

বদলে যাচ্ছি আমরা :

দিন যতোই অতিবাহিত হচ্ছে, আমরা ততোই পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছি, বদলে যাচ্ছি। মানবতা, ভালোবাসা, প্রেম, মায়া, মমতা, ধর্ম – বিলিন হতে বসেছে আমদের ভেতর থেকে। আজ মানুষে মানুষে বেড়েছে ভেদাভেদ। মানসিক রোগি হচ্ছি দিনের পর দিন। উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে ভুলে যাচ্ছি নিজেকেই নিজে, নিজস্ব স্বত্তাকে। ভেতরে ভেতরে ক্ষয় হচ্ছে হৃদয়ের স্পন্দন।

মূর্খের মতাদর্শ :

ঠিক আছ মেনে নিলাম, এটা সময়ের দাবি, কিন্তু তাই বলে কি আমরা মনুষ্য সমাজ থেকে বের হয়ে গিয়েছি? যদি তা নাই হয়, তাহলে একজন পরিপুর্ন মানূষ নিজের গুন কির্তন করে এভাবে ? কিভাবে পারে নিজেকে অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপনা করতে পারে? ধর্ম হতেও যদি বের না হয়ে থাকি, তাহলে কিভাবে একজন মানুষ ধর্মের শিক্ষা উপেক্ষা করে নিজের ইবাদত বন্দেগির কথা লোক সম্মুকে এভাবে প্রচার করতে পারে ? এটা কি লোক দেখানো ইবাদত নয় ? কোনো ধর্মে কি লোক দেখানো ইবাদতের কথা উল্লেখ আছে?

নিজে কিভাবে জিবন যাপন করছি, কি খাচ্ছি, কি ক্রয় করছি, কিভাবে সংসার নামক নাট্যমঞ্চে অভিনয় করে যাচ্ছি, তা গর্ব করে অন্যদের জানানো কি ঠিক হচ্ছে ? আমার মাস্তিস্কে এটা খেলে না। হয়ত আমি মুর্খ বলিয়াই এত্তো এত্তো জ্ঞানের বিষয় উপলব্ধি করতে পারিনা । হয়তো আমারই ব্যর্থতা।

তবে যতটুকু বুঝি, এইসব লোক দেখানো কর্মকান্ড আদৌ ঠিক নয়। আমাদের এইসব লোক দেখানো কর্মকান্ড হতে বের হয়ে আসা উচিত। এখই সময় আমাদের সংশোধনের। নচেৎ যেরুপ মিথ্যায় অবগাহন করছি আমরা, সেই মিথ্যা নিয়েই হবে জিবনের যবনিকাপাত।

তাই আসুন সোশাল মিডিয়ার প্রকৃত ব্যবহার শিখি। আর হিনমন্যতার রোগ থেকে নিজেদের রক্ষার্থে মিথ্যে, লোক দেখানো যত রকম অপকর্ম আছে তা হতে নিজেদের মুক্ত করি। সত্যিকারভাবে মানুষকে ভালোবাসতে শিখি, অন্যের প্রাপ্য সন্মান দেই। সমাজ, দেশ, জাতি, ধর্মকে ভালোবসি।




বেহুদা প্যাঁচাল

বেহুদা প্যাঁচাল হলো জীবনের গাড়ি ঠেলতে ঠেলতে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত মানুষগুলোর রোনাজারি আর মন্ত্রী আমলাদের কুৎসিত, বিভৎস জীবনযাপনের ছোটটো একটি ফর্দ । একদিকে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে হিমশিম খাওয়া মানুষ, অন্যদিকে অকস্মাৎ ফুলে ফেঁপে উঠা এমপি, মন্ত্রী, সরকারি আমলা থেকে শুরু করে সরকার দলীয় লোকদের দৃষ্টিভঙ্গির আলোকপাত।

বেহুদা প্যাঁচাল
-শওকত আকবার

চাউলের দাম বাড়ছে দেশে
মাংশের দামো ম্যালা ?
এক জাতের লোক হুদাই চিল্লায়
বাড়ায় দেশে জ্বালা।

মাথা মোটা মুর্খ তারা
বুদ্ধি শুদ্ধিহীন,
দেশের জঞ্জাল বাড়ায় তারা
দিনের পর দিন।

সব্জি টবজি ওরাই খায়
ঐসব খেতে পারিনা,
ঐসবের দাম বাড়লে কমলেও
আমার কিছু যায় আসেনা।

আলু, মরিচ, পিয়াজের দাম
বাড়লে কি আর এমন হয় ?
১০০/২০০ ব্যাপারনা ভাই,
মাসিক আয় তো কম নয়,

বেতন আছে মাস কাবারি
বোনাস আছে সাথে,
সালামি পাই ফাইলে ফাইলে
বাণ্ডেল আসে হাতে

দেশের টাকা শেষ হইলেও
ফাইলের টাকার কমতি নাই,
দ্রব্য মুল্যের চিন্তা করা
সময় নষ্ট বেহুদাই।

এমপি আছে, মন্ত্রি আছে
আছে মজুতদার,
যার যা ইচ্ছা করে করুক
দেখবে তা সরকার।

আমার কাজ ফাইল দেখা
টাকার মেশিন খোঁজা,
বছর বছর হজ্ব করা আর,
করা নামায রোজা

কে মরিলো কে বাঁচিলো
জানার নাই দরকার।
জন্মিলে মরিতে হয়,
বাণী যে স্রষ্টার।

যায় রাজা, আসে রাজা
আমার চেয়ার পারমানেন্ট,
সুপার পাওয়ার এই চেয়ারের
আমিইতো এক গভর্মেন্ট।

নিজে বাঁচলে বাপের নাম
জ্ঞানীদের বানী,
তাদের কথাই হর হামেশা
চলছি আমি মানি।

নিত্যপণ্য আর দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি নিয়ে একশ্রেনীর লোকের উপহাসের চিত্র। তাদের দৃষ্টিতে বেশতো চলছে দিন। উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে দেশ। মানুষের বেড়েছে আয়। দেশে এখন গরীবের সংখ্যা নেই বললেই চলে। সরকার টিকে থাক ক্ষমতায় হাজার হাজার বছর।

বেহুদা প্যাঁচাল

আমি মুর্খ মানুষ, আমিও চাই দেশে অনন্ত সময়কাল ধরিয়া সরকার ক্ষমতার আসনে উপবিষ্ট থাকুক। তাহার এমপি, মন্ত্রী, আমলা, দলীয় লোকের আরো ফুলিয়া ফাঁপিয়া উঠুক। যতো পারুক দেশের ট্যাকা বিদেশে পাঠাক, আমার তাতে কিস্সু আসে যায়না। আমি একটু সুখ শান্তিতে থাকবার চাই। আমার আয়ের সাথে ব্যায়ের মাত্রাটা যেন সমান তালে রাখিতে পারি, আমি তাহাই চাই। চাউলের দাম একটু কম হইলে, মাসের উনত্রিশখান দিন যেন শাক, লতা, পাতা দিয়া ভোজন করিতে পারি। মাসে যেনো একবার, একবেলা সাধের বউ আর জন্ম দেয়া বাচ্চা কাচ্চাগুলারে লইয়া গরুর গোশত দিয়া কয় লোকমা ভাত খাইতে পারি। আমার তো এর চাইতে আর বেশী কিসসুর দরকার নাই।

আমি ভাই অতো ধর্ম কর্ম বুঝিনা। বাপ দাদার ওয়ারিশসুত্রে মুসলমান। বছর বছর হজ্ব করিবারও ইচ্ছা আমার নাই। আমিতো নিজেই চলতে পারিনা। ঐসব পালন করবার ট্যাকা কই ? সারাক্ষন কেবলি বেহুদা প্যাঁচাল পারি, আমারতো বুদ্ধি শুদ্ধি নাই, তাই চর্ম চক্ষ্যে যাহা দৃশ্যমান হয়, তাহা লইয়াই একটুসখানি আকিবুকি করি। আপনেরা আবার এইসব আন্ডাপচা কথাগুলারে প্যাচাইয়েন না। আমি ভাই শান্তিকামী লোক, শান্তিতে থাকবার চাই। আপনারাও শান্তিতে থাকেন, উপর ওয়ালার কাছে আপনাদের জন্যিও দোয়া করিবো। আইজকার মতো বিদায়..

শওকতবিডি ই-ডকস্ - অফিস এখন আপনার হাতেইShowkatbd eDocs is a full-featured online documents organized application site. Which is going to prepare document from just a form. It will save your time ! Bengali, English and Arabic letter generator is available here.