এ্যালার্জির নাম মোল্লা..

এ্যালার্জির নাম মোল্লা বা হুজুর। আমাদের সমাজে এক প্রকারের মনুষ্য শ্রেনি মোল্লা বা হুজুরদের লইয়া প্রচন্ড রকম এ্যালার্জিতে ভোগেন। আর উহাই মোল্লা বা হুজুর এ্যালার্জি নামে অভিহিত। ”The name of the allergy is Molla“. উহারা মোল্লা, উহারা হুজুর, উহারা মাদ্রাসায় পড়ে, উহারা এতিমখানায় থাকিয়া লালিত পালিত হইয়াছে, উহাদের শরিরে শুধুই গন্ধ, উহারা মানুষের বাড়িতে খায়.. ইত্যাদি ইত্যাদি।।

উহারা মুর্খ, উহারা বলদ, উহারা ধর্ষক, উহারা নিজের জন্যি হারাম কর্মকে হালাল করিয়া থাকে, উহারা সমাজের কিট, উহারা সমাজে চলার অযোগ্য। উহারা মোল্লা, উহারা হুজুর..

এ্যালার্জির নাম মোল্লা এজন্য যে, উহারা আল্লাহ তায়ালার আসমানি কিতাব অধ্যয়ন করিয়াছে, উহারা জাতিকে ইসলামের সূধা পানের আমৃত্যু আমন্ত্রন জানায়। উহারা কালিমার প্রতিটি শব্দকে মনে প্রানে বিশ্বাষ করিয়া থাকে। প্রানপন উহারা প্রিয় নবিজির সুন্নাত ধারন করিয়া থাকে, উহারা সমাজে ভালো কর্মের আদেশ দেয়, নিকৃষ্ট কর্ম হইতে বিরত থাকার আহবান জানায়।

বাংলা ভাষার অভিধানে যত রকমের অশ্লিল, গন্ধযুক্ত কন্টকাকির্ন শব্দ রহিয়াছে তাহা কেবল সমাজের অই এক শ্রেনির মোল্লা বা হুজুরদের জন্যিই সম্ভবত ভাষাবিদগন  সংগ্রহ করিয়া অই পুস্তিকায় সংযোজন করিয়াছেন।

যাহারা এলার্জিতে ভুগেন তাহারা নাকি এই সামাজের শিক্ষিত বুদ্ধিজিবি, সাদা মনের মানুষ, তাহারা সুশিল সমাজ।

তাহাদের কাছে আমার ছোটটো একখানা প্রশ্ন : যেই সকল মোল্লা বা হুজুরদের আপনারা এতোটাই ঘৃনা করিয়া থাকেন, সেই মোল্লা বা হুজুররাই কিন্তু আপনার বাবা মায়ের শারিরিক সম্পর্ককে হালাল করিয়াছিলেন বিবাহ নামক একখানা সামাজিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে। তাহা যদি না হইতো আপনার পরিচয়টাই আজ পরিবর্তিত হইয়া ঘৃনিত হইতো। আপনার বাবা মায়ের শারিরিকি সম্পর্কটাই অবৈধ হইয়া যাইতো।  অবৈধ সম্পর্কে যে সন্তানাদি জন্মগ্রহন করিয়া থাকে সেই সকল সন্তানদের পরিচয় আমাদের সমাজ অবৈধ সম্পর্কের সন্তান বা জারজ সন্তান বলিয়াই আখ্যা দিয়া থাকে। এই লজ্জাজনক বিশেষন খানা আপনি আজ কিভাবে গ্রহন করিতেন?

আর আপনার জন্ম গ্রহনের পরে এই মোল্লা বা হুজুরদের ডাকিয়াই কিন্তু আপনার বাবা আজানের ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। সমাজে আপনার আগমনের বার্তা জানাইয়া ছিলেন। আবার আপনার বাবা বা মায়ের মৃতুর পর আপনিই কিন্তু এই মোল্লাদের গ্রুপ করিয়া ডাকিয়াছিলেন কোরান তিলাওয়াতে জন্যি। একটুসখানি হাত তুলিয়া আল্লাহর দরবারে দোয়ার জন্যি। আর এই মোল্লা বা হুজুররাই কিন্ত আপনার জন্ম দাতা পিতা বা গর্ভধারিনি মায়ের দাফন কাফন বা অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করিয়া ছিলেন।

আমি মূর্খ মানব। ধর্ম কর্ম কিছুই শিখিতে পারি নাই। পৈত্রিক সুত্রে মুসলমান। তাই উহা আগলে ধরিয়াই রহিয়াছি। উহাই মানিয়া চলার চেষ্টা করি। আর একজন পৈত্রিক সূত্রে মুসলমান হওয়া মানব হিসেবে ছোটটো এই প্রশ্ন খানা আমার ছোটটো মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায় অবিরত। আর তাহাই উপস্থাপন করার চেষ্টা করিলাম।

আপনিও যদি পৈত্রিক সূত্রে মুসলমান হইয়া থাকেন, বা নিজেকে মুসলমান দাবি করিয়া থাকেন, দয়া করিয়া এই ধরনের উদ্ভট চিন্তা মাথা হইতে ভালো মানের শ্যাম্পু দ্বারা ধুইয়া মুছিয়া ফেলুন। স্বীয় মাথাখানা আবর্জনাপুর্ন চিন্তা- ভাবনা হইতে ঝাড়িয়া ফেলিয়া পরিস্কার করিয়া ফেলুন।

ঠিক আছে, মোল্লা বা হুজুরদের আপনার ভালো লাগে না, তাহাদের পছন্দ হয় না, তাহাদের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেন। দেশের কানুন মোতাবেক তাহাদের বিচার করেন। আইন মোতাবেক একজন মোল্লা বা হুজুর খারাপ করিয়াছে, তাই বলিয়া সমগ্র মোল্লা বা হুজুরদের ঢালাওভাবে ঘৃনা করিতে পারেন না.. সেই অধিকার আপনাদের নাই।

একজন খুনির জন্যি তো আর সমগ্র মানব জাতি খুনি উপাধি পাইতে পারে না। ইহা বড়ই অন্যায়।

যদি পারেন পাপকে ঘৃনা করেন, পাপীকে নহে।

বোধোদয় ঘটুক সকল সুশিল সমাজের বাসিন্দাদের।