হযরত আবু বকরের খেলাফতকাল

 “ইসলামি খেলাফতের চার অধ্যায়” এর আজকের উপস্থাপনা প্রথম অধ্যায় অর্থাৎ রাশেদিন খেলাফতের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর রা. এর খেলাফতকাল নিয়ে। এরপর আমরা একে এক উমর, উসমান এবং আলী রা. এর সময়কাল নিয়ে কিছুটা আলোকপাত করার চেষ্টা করবো।

হযরত আবু বকরের খেলাফতকাল 632 থেকে 634

পরিচিতি : নাম আবদুল্লাহ, উপনাম আবু বকর। উপাধি আতিক, সিদ্দিক বা সত্যবাদি । পিতার নাম ওসমান। উপনাম আবু কুহাফা। মাতার নাম উম্মুল খায়ের সালামা বিনতে সাখার। তিনি ইসলামের প্রথম খলিফা, আশারায়ে মুবাশশরা তথা জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত। বিশ্বনবী সা: এর শ্বশুর। আবু বকর ৫৬৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৬৩৪ সালের ২৩ আগস্ট ইন্তেকাল করেন।

হযরত মোহাম্মদ (স) এর ওফাতের মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাসের প্রথম যুগ ও নবুয়তের সমাপ্তি ঘটে। মুসলিম উম্মাহ হারায় তার অভিভাবক ও পথ প্রদর্শক। মদিনা রাষ্ট্র হয়ে পড়ে নেতৃত্ব শুন্য।

খিলাফতের আসন গ্রহণ : নবিজির কোন পুত্র সন্তান ছিলো না বা তিনি তার উত্তরসূরী হিসেবে রেখে যান নাই কাউকে। ফলে নবিজির ওফাতের পরে কে হবেন মুসিলিম উম্মার প্রতিনিধি কে দিবে ইসলামী রাষ্ট্রের নেতৃত্ব? এই নিয়ে শুরু হয় এক সংকটময় পরিস্থিতির।

এমন মুহুর্তে খিলাফতের সমস্যা সমাধানের জন্য আনসার মুহাজির সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ মদিনার বানি সায়িদা নামক মিলনায়তনে মিলিত হন। উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে খেলাফতের প্রশ্নে চারটি দলের সৃষ্টি হয়। তখনো নবীজির দাফন কাফন সম্পন্ন হয়নি।

প্রথম দল মুহাজির : তারা দাবি করে তারাই সর্বপ্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছেন এবং ইসলামের জন্য সর্বপ্রকার ত্যাগ স্বীকার করেছেন। সুতরাং খলিফা নির্বাচিত হবে মুহাজিরদের মধ্য থেকে।

দ্বিতীয় দল আনসার : তারাও দাবী করে ইসলামের দুর্দিনে মহানবী (সা) ও মুসলমানদের আশ্রয় দিয়েছেন এবং সর্বপ্রকার সাহায্য সহায়দা প্রদান করেছেন। তাই তাদের ভেতর থেকেই হবে খলিফা।

দ্বিতীয় দল কুরাইশ : তাদের দাবী, মুহাম্মদ কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহন করেছেন। আর এই বংশ প্রাচীন কাল থেকেই মক্কায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। খলিফা তাদের ভেতর থেকেই হওয়া উচিত।

চতুর্থ দল আলী র সমর্থক : তাদের দাবী, আলী মহানবীর চাচাতো ভাই। এবং তার একমাত্র জিবীত কণ্যা ফাতেমার স্বামী। সুতরাং মহানবীর যোগ্য উত্তরাধিকার হিসেবে আলীকেই খফিলা বানানো উচিত।

রাজনৈতিক জটিলদা যখন চরমে পৌছলো হযরত আবু বকর জোড় কন্ঠে ঘোষনা করেন : ইসলামের যুগ সন্ধিকালে আনসারদের অবদান চিরস্মরনীয় হয়ে থাকবে কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আরবের লোকেরা কেবল কুরাইশ বংশ থেকেই কোন ব্যক্তিকে খলিফা হিসেবে মেনে নিবে। যেহেতু নবীজর জন্ম এই বংশে। তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ক্ষমতার কথা স্মরন করে দিয়ে, আবু বকর কুরাইশদের বংশ থেকে খলিফা নির্বাাচনের মতামত ব্যক্ত করেন।

এই প্রেক্ষাপটে আনসারগন প্রনরায় প্রস্তাব করে, কুরাইশ ও আনসারদের মধ্য থেতে দুই জনকে খলিফা নির্বাচিত করা হোক।

হযরত ওমর এর প্রতিবাদ করে বলেন, এক খাপে যেমন দুইটি তরবারি স্থান পায় না। তেমনি এক রাষ্ট্রে দুইজন খলিফা হতে পারেনা।  দুইজন খলিফা নির্বাচিত হলে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য বিনষ্ট হবে। অতপর অরাজকতা ও অচলাবস্থা দূরীকরনে আবু  বকর বিখ্যাত সাহাবী আবু উবায়দা অথবা ওমর কে খলিফার দায়িত্ব গ্রহনের অনুরোধ করেন।

হযরত উমর আর আবু উবায়দা বয়স, পদর্মাদা ও সন্মান বিবেচনা করে আবু বকর কে মদিনা রাষ্ট্রের পরবর্তী নেতা বা খলিফা হওয়ার ঘোষনা দেন এবং তার হাতে বাইয়াত গ্রহন করেণ। এরপর আবু উবায়দা, আব্দুর রহমান, উসমান, আলী (রা) সহ সকল আনসার, মুহাজীররা আবু বকর (রা) এর হাতে বাইয়াত গ্রহন করেণ এবং খলিফা হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

এভাবে আবু বকর (রা) খলিফাতুল রাসূল বা রাসূলের উত্তরসূরী অর্থাৎ খলিফা নির্বাচিত হন এবং এর মাধ্যমে মুসলিম জাতি খলিফা নির্বাচনের সংকট থেকে মুক্তি পায়। সুচনা হয় রাশেদিন খেলাফতের প্রথম অধ্যায় তথা ইসলামের সোনালী যুগের ।

হযরত আবু বকরের খেলাফতকাল ইসলামের সোনালী যুগের সুচনা : আবু বকর (রা) মহানবী (সা) এর ওফাতের পর সৃষ্ট বিভিন্ন বিদ্রোহ বিশৃংখলা দমন করে, ইসলামী রাষ্ট্রে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্টা করেন। বিশেষ করে যাকাত অস্বীকারকারী এবং ধর্মত্যাগী ভন্ডনবীদের দমন করে, মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে তিনি সক্ষম হন। 

সমস্যা : খলিফার আসনে অধিষ্টিত হয়ে আবু বকর যেসব সমস্যার সম্মুখীন হন :

  1. কিছু সংখ্যক লোকের যাকাত প্রদানে অস্বীকৃতি;
  2. কিছু গোত্রের মুরতাদ হওয়া বা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ;
  3. কয়েকজন ভণ্ড নবীর আবির্ভাব।

১. যাকাত দানে অস্বীকৃতি : একদল মুসলমান সিদ্ধান্ত নেয়, তারা রোজা রাখবে, নামাজ পড়বে কিন্তু যাকাত প্রদানে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে নতুন খলিফা হযরত আবু বকর রা: তাদের কথা শুনে ভীষণ রেগে যান এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।

হযরত উমর রা: বললেন, তাদের বিরুদ্ধে আপনি কিভাবে যুদ্ধ করবেন ? যারা যকাত ছাড়া অন্য সব ইবাদত পালনক করার ঘোষণা দিচ্ছে। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘কালেমার সাক্ষ্য না দেয়া পর্যন্ত আমাকে মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা তো কালেমার সাক্ষ্য দিচ্ছে।

হযরত আবু বকর রা: বলেন, নামাজ যাকাত উভয়ই ফরজ। আল্লাহ উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করেননি। আল্লাহর শপথ! যদি তারা একটি রশিও দিতে অস্বীকার করে, যা তারা রাসূলুল্লাহ সা: এর সময় প্রদান করত, অবশ্যই তা প্রদানে অস্বীকৃতির কারণে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করব নিজের ভুল বুঝতে পেরে উমর রা: যুদ্ধে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

অতঃপর আবুবকর রা: হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদের নেতৃত্বে একদল সৈন্য প্রেরণ করেন। খালিদ ইবনে ওয়ালিদ রা: তাদেরকে বন্দী করেন। অতঃপর তারা যাকাত দানের প্রতিশ্রুতি দেয়।

২. মুরতাদ বা ধর্মত্যাগ : মহানবী সা: এর ওফাতের সাথে সাথে তিনটি মসজিদের বাসিন্দা ছাড়া আরবের সব লোক মুরতাদ তথা স্বীয় ধর্ম ত্যাগ করেছিল। মসজিদ তিনটি হলো :

  1. মসজিদে হারাম; মক্কায় অবস্থিত।
  2. মসজিদে নববী; মদিনায় অবস্থিত।
  3. মসজিদে জুয়ায়ি। মদিনার বাইরে মসজিদেই সর্বপ্রথম জুমার নামাজ পড়া হয়। যা বাহরাইনে অবস্থিত।

যাকাত দিতে অস্বীকার কারীরাও মুরতাদদের অন্তর্ভুক্ত আরো কিছু গোত্র মুরতাদ হয়েছিল। তারা হলো : বনি ফাজারাহ, বনি গাতফান, বনি সুলাইম, বনি ইয়ারবু বনি তামিমের কিছু লোক (তাদের মধ্যে ভণ্ড নবীর দাবিদার মুসায়লামা কাজজাবের স্ত্রীও ছিল), বনি কুনদাহ এবং বনি বকর বিন ওয়ায়েল। আবুবকর রা: এসব গোত্রকে সম্পর্ণরূপে পরাস্ত করে সত্য দ্বীন ন্যায় রাষ্ট্রের ভিত মজবুত করেন।

৩. ভণ্ড নবীর আবির্ভাব : আবুবকর রা: এর শাসনামলে তিনজন ভণ্ড নবীর আবির্ভাব ঘটে। তারা হলো :

  • আসওয়াদ আনামি : বনি মুজহারের সর্দার। সে ছিল একজন দক্ষ জাদুকর গণক। রাসূল সা: এর সময়ই ইয়েমেনে সে নবুয়ত দাবি করে। সে ইয়েমেনের একটি শহর দখল করেছিল। মহানবী সা: ইয়েমেনের গভর্নর হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রা: কে আসওয়াদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নির্দেশ দিলে, হযরত মুয়াজ রা: এর নির্দেশে ফিরোজ দায়লামি আসওয়াদকে তার গৃহে হত্যা করেন। কিন্তু মহানবী সা: এর কাছে সংবাদ পৌঁছার আগেই মহানবী সা: ইন্তেকাল করেন।
  • মুসায়লামা কাজজাব : বনি হুনাইফার সর্দার। দশম হিজরির শেষ ভাগে নবুয়ত দাবি করে। তার ধারণা মুহাম্মদ সা: এর সাথে তাকেও নবুয়ত দেয়া হয়েছে। সে দুজন দূতের মাধ্যমে রাসূল সা: এর কাছে পত্র প্রেরণ করে যে, এই পৃথিবীর অর্ধেক আপনার আর বাকি অর্ধেক আমার  । রাসূল সা: বলেন, ‘যদি দূত হত্যা করা জায়েজ হতো, তবে আমি তোমাদেরকে হত্যা করতাম।রাসূল সা: পত্রের জবাবে বলেন, ‘পৃথিবী আল্লাহর, তিনি যাকে ইচ্ছা নবুয়ত দান করেন। এর কিছুকাল পরেই মহানবী সা: ইন্তেকাল করেন। আবুবকর রা: হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদের নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী প্রেরণ করেন। যুদ্ধে হয়রত ওয়াহশি বল্লমের আঘাতে মুসায়লামা কাজজাবকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দেন।
  • তুলায়হা ইবনে খুয়াইলিদ : বনু আসাদের সর্দার ছিল সে। নবুয়ত দাবিদারদের মধ্যে সেই ছিল সর্বশেষ ব্যক্তি। মহানবী সা: এর ওফাতের আগেই সে নবুয়ত দাবি করেছিল। হজরত আবুবকর রা: তার বিরুদ্ধে হজরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদ রা: কে প্রেরণ করলে তুলায়হা ভয়ে সিরিয়া চলে যায়। কিছুদিন সেখানে বসবাসের পর পুনরায় মুসলমান হয়ে মদিনায় ফিরে আসে এবং খাঁটি মুমি হিসেবে জীবন যাপন করে।

উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা বলেন, রাসূল সা:-এর ওফাতের সাথে সাথে আরব বাসীর অনেকে মুরতাদ হয়ে যায়। আমার পিতার কাধে আপতিত হয় চরম মুসিবত। ওই মুসিবত কোনো পাহাড়ের ওপর পতিত হলে নিশ্চয় সেই পাহাড়ের চূড়া ভেঙে পড়ত

হযরত আবু বকরের মৃত্যুর পর খেলাফতে অধিষ্টিত হন হযরত উমর রা. । পরের পর্বে আমরা জানবো কেমন গিয়েছিলো হযরত উমরের শাসন কাল, রাষ্ট্র পরিচালনা, ধর্ম প্রচার। তার সময়ে কেমন কেটেছিলো মুসলিম উম্মাহর জীবনকাল।




ইসলামী খেলাফতের চার অধ্যায় ..

ইসলামী খেলাফতের চার অধ্যায় হচ্ছে নবী মোহাম্মদের ওফাতের পর সৃষ্ট রাজ্য শাসন ব্যবস্থা যথাক্রমে :  ১. রাশেদিন খেলাফত ২. মুয়াবিয়া খেলাফত ৩. আব্বাসীয় খেলাফত ও সর্বশেষ ৪. উসমানীয় খেলাফত। এই চার শাসন ব্যবস্থাকেই ইতিহাসে ইসলামী খেলাফত হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আমি সংক্ষিপ্ত আকারে চেষ্টা করবো ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি খেলাফতের ইতিহাস তুলে ধরতে। যা অধ্যয়নে ধৈর্যের কোনরকম বিচ্যুতি হবেনা বলেই আশা রাখি।

৬৩২ খ্রিস্টাব্দে ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী, হযরত মুহাম্মদ (স:) ইন্তেকাল করেন। মুহাম্মদ (সা:) এর জীবদ্দশ্যায়, তিনি মানবজাতীর জন্য সঠিক দিক নির্দেশনা স্বরূপ, পৃথিবীর একমাত্র সত্য ধর্ম ইসলাম এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য, মদীনা কেন্দ্রীক ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে যান। মূলত তাঁর ওফাতের পর, ইসলাম ধর্ম, ইসলামী রাষ্ট্র এবং মুসলিম উম্মাহর প্রতিনিধিত্ব করার জন্য, ইসলামে খেলাফতের শাসন ব্যবস্থার উৎপত্তি হয়। খেলাফতের এই  শাসন ব্যবস্থার প্রধানকেই বলা হয় খলিফা ।

খলিফা ( خليفة‎) আরবী শব্দ, অর্থ : প্রতিনিধি), আভিধানিক অর্থ উত্তরাধিকারী, প্রতিনিধিত্বকারী, স্থলাভিষিক্ত ব্যক্তি, কর্মাধ্যক্ষ, জনসমষ্টির দেখাশোনার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি। ইসলামী পরিভাষায় খলিফা হলেন এমন ব্যক্তি যিনি যাবতীয় বিষয়ে শরিয়ত (আরবি শব্দ : شريعة‎‎‎, শারি’আহ্ বা অর্থ  : “কর্মপদ্ধতি”) বা ইসলামি আইন বা শরিয়ত আইন হচ্ছে জীবনপদ্ধতি ও ধর্মীয় আইন যা ইসলামিক ঐতিহ্যের একটি অনুষঙ্গ। ইসলামি পরিভাষাকোষ অনুযায়ী, মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ এবং নবি হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) যেসব আদেশ-নিষেধ, নিয়ম-নীতি ও পথনির্দেশনা মুসলমানদের জন্য প্রদান করেছেন, তার সমষ্টিই হচ্ছে শরিয়ত। এটি ইসলাম ধর্মের নিয়ম-কানুন হতে উৎসরিত, প্রধানত কুরআন ও হাদিস হতে, যা ইসলামের দৃষ্টিতে যথাক্রমে আল্লাহ ও তার রাসূল হযরত মুহাম্মাদে(সঃ) এর দিক নির্দেশনার উৎস। আরবিতে, স্রষ্টার অমোঘ স্বর্গীয় আইন বুঝাতে শরিয়ত শব্দটি ব্যবহৃত হয়। অনুযায়ী সমস্ত উম্মত (বহুসংখ্যক জাতির সমন্বয়ে গঠিত সামগ্রিক মুসলিম জনগোষ্ঠীকে বোঝায়) পরিচালিত করেন। ইসলামী রাষ্ট্রে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অধিকারী হচ্ছেন একজন খলিফা । তিনি রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে গভর্নর, শাসক, নেতা, কাযী” (قضى আরবি ভাষায় কাজি অর্থ বিচারক। ইসলামের প্রারম্ভিক যুগে কাজির বিচার কুরআন, হাদিস কিংবা ইজমার ভিত্তিতে হত। কাজী বাংলাদেশ এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের পদবি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে ) নিযুক্ত করে থাকেন।

ইসলামী খেলাফতের চার অধ্যায় এর প্রথম অধ্যায় :

রাশেদিন খেলাফত

ইসলামের প্রথম ফেলাফত | রাজত্বকাল : 632 থেকে 661 পর্যন্ত

ইসলামের প্রথম খেলাফত হলো রাশেদিন খেলাফত। মহানবী (স:) এর ওফাতের পর, ইসলামী রাষ্ট্র ও মুসলিম জাতির নেতৃত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে, ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে হযরত আবু বকর (রা:) ইসলামের প্রথম খলিফা হিসেবে নির্বাচিত হন। প্রথম খলিফা আবু বকর (রা) এর, খেলাফত লাভের পর থেকে শুরু করে, দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রা), তৃতীয় খলিফা উসমান (রা) এবং ৬৬১ খ্রিস্টাব্দে চতুর্থ ও সর্বশেষ রাশেদিন খলিফা, হযরত আলী (রা) এর ইন্তেকাল পর্যন্ত, মোট চারজন খলিফার দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছরের শাসনকালকে, রাশেদিন খিলাফতের শাসনকাল হিসেবে অভিহিত করা হয়। যা ইসলামের ইতিহাসে সোনালী যুগ হিসেব পরিচিত। মূলত আরবের বিখ্যাত কুরাইশ বংশ হতে মুহাম্মদ (স) এবং ইসলামের চার খলিফার গোত্রের উৎপত্তি।

৬৬১ খ্রিস্টাব্দে হযরত আলী (রা:) এর ওফাতের পর, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও কারবালার মতো মর্মান্তিক ঘটনার অবতারনার পর আলী পুত্র হাসান (রা) এক সন্ধিচুক্তির মাধ্যমে মুয়াবিয়া (রা) কে খেলাফতের দায়িত্ব অর্পণ করেন।

ইসলামী খেলাফতের চার অধ্যায় এর দ্বিতীয় অধ্যায় :

উমাইয়া খেলাফত

ইসলামের দ্বিতীয় ফেলাফত | রাজত্বকাল : 661 থেকে 750 পর্যন্ত

মুয়াবিয়া (রা) এর খেলাফত লাভের মধ্যদিয়ে রাশেদিন খেলাফতের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং উমাইয়া খেলাফতের উত্থান হয়। মুয়াবিয়া (রা) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত শাসনব্যবস্থা বংশানুক্রমিক ছিল বলে এটিকে উমাইয়া রাজবংশও বলা হয়। উমাইয়া খেলাফতের ১৪ জন খলিফা ৬৬১ খ্রি. থেকে ৭৫০ খ্রি. পর‌্যন্ত সাথে ইসলামী বিশ্বের নেতৃত্ব দিয়েছিল। ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান গণি (রাঃ) খিলাফত লাভের মাধ্যমে উমাইয়া পরিবার প্রথম ক্ষমতায় আসে। তবে উমাইয়া বংশের শাসন হযরত আমির মুয়াবিয়া (রাঃ) কর্তৃক সূচিত হয়।

ইসলামী খেলাফতের চার অধ্যায় এর তৃতীয় অধ্যায় :

আব্বাসীয় খেলাফত

ইসলামের তৃতীয় ফেলাফত | রাজত্বকাল : 750 থেকে 1258 পর্যন্ত

৭৫০ খ্রিস্টাব্দে উমাইয়া রাজবংশের পতনের পর ইসলামী খেলাফতের মহান দায়িত্ব লাভ করে আব্বাসীয় রাজবংশ। আব্বাসীয় বংশ ছিল মক্কার বিখ্যাত হাশেমী গোত্রের একটি শাখা। মূলত আব্বাসীয় বংশের নামকরণ করা হয় হযরত মুহাম্মদ (স) এর চাচা আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিবের নাম অনুসারে। ৬৫৪ খ্রিস্টাব্দে আব্বাস (রা) এর মৃত্যুর পর তার পুত্র আব্দুল্লাহ আব্বাসীয় পরিবারের কর্তৃত্ব লাভ করেন। আব্দুল্লাহ ইসলামের ইতিহাস ও হাদিস শাস্ত্রে ইবনে আব্বাস নামে সর্বাধিক পরিচিত।

আব্বাসীয় খেলাফত ছিল ইসলামের তৃতীয় খেলাফত । রাজ্য বিজয়, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় এই খিলাফতকে ইসলামের ইতিহাসে স্বর্ণযুগ হিসেবে বিবেচিত করা হয়। ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে উমাইয়া খেলাফতের পতনের পর উত্থান হওয়া আব্বাসীয় খেলাফত ১২৫৮ খ্রিস্টাব্দ পর‌্যযন্ত দীর্ঘ প্রায় ৫০০ বছর মুসলিম বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়েছিল। ১২৫৮ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গলদের আক্রমণের ফলে এই খেলাফতের পতন ঘটলেও, ১৫১৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আব্বাসীয় খলিফারা মিশরের মামলুক সুলতানতের অধীনে মুসলিম জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছিল।

হিজরি সপ্তম শতাব্দী। মোঙ্গলীয়দের আক্রমণে লণ্ডভণ্ড আব্বাসীয় খেলাফত । কনস্টান্টিনোপলের খ্রিষ্টানদের সাথে লড়াইয়ে রোমের সালজুক সালতানাতের প্রাণ ওষ্ঠাগত প্রায়। ইসলামি ইতিহাসের এক চরম দুর্যোগপূর্ণ সময়। ঠিক এই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে মেঘের আড়াল থেকে উঁকি দিয়ে হেসে ওঠে এক নবারুণ সূর্য। দিগ-দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে সেই সূর্যের দীপ্তি। ইসলামি সাম্রাজ্যের মেঘলা আকাশকে স্বচ্ছ এবং প্রখর রোদের আকাশে পরিণত করা সেই সূর্যের নাম ‘উসমানি সালতানাত’।

ইসলামী খেলাফতের চার অধ্যায় এর সর্বশেষ ও চতুর্থ অধ্যায় :

উসমানীয় খেলাফত

ইসলামের সর্বশেষ ফেলাফত। রাজত্বকাল : 1517 থেকে 1923পর্যন্ত

ইসলামি ইতিহাসের এক সোনালি অধ্যায় জুড়ে ছড়িয়ে যে সালতানাতের ব্যাপ্তি। যারা শতাব্দীর পর শতাব্দী দোর্দণ্ড প্রতাপের এবং ন্যায়নিষ্ঠার সাথে শাসন করে গেছেন মুসলিম বিশ্ব। একের পর এক রাজ্য বিজয় করে ইসলামকে করেছেন সমুন্নত এবং সম্প্রসারিত। সারা বিশ্ব যাদেরকে জানে ‘অটোমান সাম্রাজ্য’ নামে। দীর্ঘকাল যাদের কথা চর্চা হয়ে আসছে ইতিহাসের পাতায় পাতায়।

তের শতকের শেষ ভাগে ওঘুজ তুর্কী গোত্র নেতা ওসমান গাজীর হাত ধরে আনাতোলিয়ার উত্তর-পশ্চিমাংশে যাত্রা শুরু করে উসমানীয় সাম্রাজ্য। ইতিহাস বিখ্যাত এ সাম্রাজ্য পৃথিবীর বুকে টিকে ছিলো প্রায় ছয় শতাব্দী ধরে। চৌদ্দ শতকের মাঝামাঝি সময়ে তারা ইউরোপের দিকে অগ্রসর হয় এবং বলকান অঞ্চল জয়ের মাধ্যমে একটি আন্তঃমহাদেশীয় শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। পনের শতকের মাঝামাঝি সময়ে কনস্টান্টিনোপল জয়ের মাধ্যমে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের পতন ঘটান উসমানীয় সুলতান দ্বিতীয় মোহাম্মদ।

ইতিহাস বিখ্যাত উসমানীয় সুলতান সুলাইমানের পিতা সুলতান সেলিম ১৫১৭ খ্রিস্টাব্দে মারজ-ই-দাবিকের যুদ্ধে মামলুক সাম্রাজ্যকে পরাজিত করে আরব দেশ সমূহ জয় করেন। এবং তখনকার আব্বাসীয় খলিফা থেকে খেলাফতের দায়িত্ব লাভ করেন। উসমানীয় সাম্রাজ্য মূলত সুলতান সেলিমের শাসনামল থেকেই উসমানীয় খেলাফত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

আমি একে একে ইসলামী খেলাফতের চার অধ্যায় অর্থাৎ মহানবী সা. এর ইসলামি সাম্রাজ্য থেকে শুরু করে (অটোম্যান) উসমানীয় সালতানাদের পরিসমাপ্তি পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে শুধু রাষ্ট্র পরিচালনার ইতিহাস উপস্থাপন করবো।

যদি আমার এই উপস্থাপনা বা সংকলনের কোথাও কোনোরকম ভুল ভ্রান্তি বা অসত্য মনে হয়, দয়া করে জানালে কৃতজ্ঞ হবো।

পড়ুন দ্বিতীয় পর্ব :




আসুন প্রতিদিন অন্তত একটি ভালো কাজ করি

আসুন প্রতিদিন অন্তত একটি ভালো কাজ করি। আপনি আমি উভয়েই চলে যাবো। আমাদের একটি ভালো কাজই অবিনশ্বর ঐ পৃথিবীতে আমাদের ভালো থাকার পথ বের করে দিবে.. মোহাম্মদ শওকত আকবার




শবে কদরের বিশেষ দোয়া

হজরত মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা পেয়ারা নবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে জানতে চাইলেন, যদি আমি শবে কদর পেয়ে যাই, তাহলে কী দোয়া করব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বললেন –

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي

উচ্চারন : আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফাফু আন্নি।

অর্থ : হে আল্লাহ, আপনি তো ক্ষমাশীল, ক্ষমা পছন্দ করেন, তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।

আসুন জানি, শব্দে শব্দে উচ্চারন ও অর্থ –

আরবী –    উচ্চারন –      অর্থ

اللَّهُمَّ – আল্লাহুম্মা –  হে আল্লাহ

إِنَّكَ – ইন্নাকা – নিশ্চয় আপনি

عُفُوٌّ – আফুউন – ক্ষমাশীল, ক্ষমার আধার

تُحِبُّ – তুহিব্বুল – আপনি পছন্দ করেন

الْعَفْوَ – আফওয়া – ক্ষমা করতে

فَاعْفُ – ফাফু – অত:পর ক্ষমা করুন

عَنِّي – আন্নি –  আমাকে।

আল্লাহ্ সুবহানাহু তায়ালা মর্তবা সম্পন্ন এই দোয়াটি আমাদের সকলের জীবনে লাইলাতুল ক্বদরের রাত্রিতেই শুধু নয়, সদা সর্বদা আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।




বীজ বপন..

বাবা মায়ের মাগফিরাতের জন্য আপনি আমি আল্লাহ্’র দরবারে হাত তুললে, আপনার আমার সন্তানেরাও এক সময় আমাদের জন্য হাত তুলবে.. মো: শওকত আকবার




বাবা মা’র জন্য দোয়া-৩

আল্লাহ রাহমানির রাহীম পবিত্র কোরানের মাধ্যমে বারংবার জন্মদাতা বাবা-মার জন্য দোয়া করার জন্য সন্তানদের তাগিদ দিয়েছেন। সন্তানদের দোয়া বাবা মার জন্য এক একটি বুলেট। আর বাবা মার দোয়াও সন্তাদের জন্য এক একটি বুলেট। যা কখনোই মিস ফায়ার হয় না। তাই প্রতিটি সন্তাদের উচিত প্রতি নিয়ত জীবিত বা মৃত বাবা মার জন্য আল্লাহ্’র দরবারে হাত তুলে তাদের মাগফিরাতের জন্য কান্নাকাটি করা।

رَّبِّ ٱغْفِرْ لِى وَلِوَٰلِدَىَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيْتِىَ مُؤْمِنًا وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَٰتِ وَلَا تَزِدِ ٱلظَّٰلِمِينَ إِلَّا تَبَارًۢا

উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও ওয়া লিলমুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত ওয়া লা তাযিদিজ জ্বালিমিনা ইল্লা তাবারা।’

অর্থ : ‘হে আমার রব! আমাকে, আমার বাবা-মাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করুন আর আপনি জালিমদের ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না।’ (সুরা নুহ : আয়াত ২৮)

হে আল্লাহ, আমার বাবা-মা, আমার পূর্ব-পুরুষদের আপনি জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করেন।

আজ আমি আপনি আমাদের বাবা-মার জন্য আল্লাহর দরবারে দু’হাত তুলে কান্নাকাটি করলে, আমার আপনার সন্তানেরাও এক সময় আমার আপনার জন্য কান্নকাটি করবে। এটাই আল্লাহর বিধান.. মোহাম্মদ শওকত আকবার




বাবা মায়ের জন্য দোয়া-২

বাবা মায়ের জন্য দোয়া-২ : জন্মদাতা বাবা-মার জন্য প্রতিনিয়ত আমাদের (সন্তানদের) দু’হাত তুলে দোয়া করা উচিত। ইবরাহীম (আঃ) এই দু’আ তখন করেছিলেন যখন তাঁর কাছে স্বীয় পিতা আযর এর ব্যাপারে আল্লাহর দুশমন হওয়ার কথা প্রকাশ পায়নি। যখন প্রকাশ পেয়ে গেল যে, তাঁর পিতা আল্লাহর দুশমন, তখন তিনি সম্পর্কছিন্নতা ব্যক্ত করলেন। কেননা যতই নিকটাত্মীয় হোক না কেন, মুশরিকদের জন্য (ক্ষমা প্রার্থনার) দু’আ করা বৈধ নয়।

رَبَّنَا ٱغْفِرْ لِى وَلِوَٰلِدَىَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ ٱلْحِسَابُ

উচ্চারণ : ‘রাব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিলমুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’

অর্থ : ‘হে আমাদের রব! যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন আপনি আমাকে, আমার বাবা-মাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)

হে আল্লাহ্ বাবা-মায়ের জন্য সেবা শুশ্রুষা কিছুইতো করতে পারি নাই। তুমি আমাকে মাফ করে দাও। মাফ করে দাও অন্ধকার কবরে শায়িত আমার জন্মদাতা পিতা আর গর্ভধারিণী মাকে।

আজ থেকে বাবা মায়ের জন্য দোয়া করা হোক আমাদের প্রতিদিনকার একটি বাধ্যতামূলক রুটিন মাফিক কাজ। আল্লাহ আমাদের এই আমলটি করার তৌফিক দান করুন। আমিন!

Showkatbd.com is a full-featured online documents organized application site. Which is going to prepare document from just a form.   It will save your time ! Bengali, English and Arabic letter generator is available here. Do not heisted to try this! 

  FORM2Dox

  DOCUMENTCreation Tools




বাবা মার জন্য দোয়া..

আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া এক নেয়ামত হচ্ছে  বাবা-মা । সন্তানের জন্য এই দুনিয়ার জীবনে শেষ্ঠ সম্পদও বটে। এমনই এক সম্পদ, যে সম্পদের বিনিময় মূল্য এই পৃথিবীতে এখনো সৃষ্টি হয়নি আর ভবিষ্যতে হবেওনা।

আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরানের মাধ্যমে সেই বাবা-মা জীবিত থাকুক আর নাইবা থাকুন, তাদের জন্য  দোয়া করার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। আর সেই সব দোয়ায় আছে নিজেদের (সন্তানদের) জন্য কল্যান।

বাবা মার জন্য দোয়া
رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا

উচ্চারণ : ‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগিরা।’

অর্থ : (হে আমাদের) পালনকর্তা! তাদের (বাবা-মা) উভয়ের প্রতি দয়া কর; যেভাবে তারা আমাকে শৈশবে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ২৪)

একজন সন্তানের জীবনে বাবা-মায়ের শূন্যতা কোনো কিছুর মাধ্যমেই পূরন করা যায় না.. – মোহাম্মদ শওকত আকবার




নিজের জন্য দোয়া

নিজের জন্য দোয়া : হাদিসে দোয়া করাকে স্বতন্ত্র ইবাদত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সাহাবি নোমান বিন বাশির (রা.) এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৮১)

আল্লাহ তায়ালা নিজেও পবিত্র কোরআনে তার বান্দাদের বেশি বেশি দোয়া করার আহ্বান জানিয়েছেন। বর্ণিত হয়েছে,

وَقَالَ رَبُّکُمُ ادۡعُوۡنِیۡۤ اَسۡتَجِبۡ لَکُمۡ ؕ  اِنَّ الَّذِیۡنَ یَسۡتَکۡبِرُوۡنَ عَنۡ عِبَادَتِیۡ سَیَدۡخُلُوۡنَ جَہَنَّمَ دٰخِرِیۡنَ

তোমাদের প্রতিপালক বলেছেন, আমাকে ডাক। আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। নিশ্চয়ই অহংকারবশে যারা আমার ইবাদত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তারা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা : মুমিন, আয়াত : ৬০)

নিজের জন্য দোয়া : জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির জন্য সর্বদা আমাদের পড়া উচিত, অনেক মর্তবা সম্পন্ন একটি দোয়া :  اللَّهُمَّ أَجِرْنِي مِنَ النَّارِ

উচ্চারন:আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান নার।

অর্থ:হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দাও

শওকতবিডি ই-ডকস্ - অফিস এখন আপনার হাতেইShowkatbd eDocs is a full-featured online documents organized application site. Which is going to prepare document from just a form. It will save your time ! Bengali, English and Arabic letter generator is available here.




ধৈর্য্য ধারনের দোয়া

ধৈর্য্য ধারনের দোয়া : رَبَّنَآ أَفۡرِغۡ عَلَيۡنَا صَبۡرًا وَتَوَفَّنَا مُسۡلِمِينَ

উচ্চারন : রাব্বানা আফরিগ আলাইনা সাবরাও ওয়াতা ওয়াফফানা মুসলিমীন।

বাংলা অর্থ : হে আমার রব, কঠিন পরীক্ষায় আপনি আমাদের ধৈর্য্য ধারন করার শক্তি দান করুন, এবং আপনার অনুগত বান্দা হিসেবে আমাদের মৃত্যু দান করুন।
(সুরা আরাফ – আয়াত – ১২৬)

বিপদে পতিত হলে আমরা অধৈর্য্য হয়ে যাই। হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে আমরা ভ্রান্ত পথ অবলম্বন করি। ইসলাম ধর্মে যেটা সম্পূর্ন নিষেধ। অধৈর্য্য না হয়ে মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করাই একজন মুমিনের কাজ। আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এটাই পছন্দ করে থাকেন।

বিপদ, দুঃখ, দুর্দশা সেতো আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকেই নির্ধারিত। আর সেখান থেকেই তো এর আগমন। যেহেতু মহান আল্লাহ পাক বিপদ দিয়ে থাকেন তিনিই তা সমাধানকারী। বিপদ দিয়ে তিনি তার বান্দার ঈমানী পরীক্ষা নিয়ে থোকেন। অধৈর্য্য হয়ে যাওয়া মানেই বিপদথগামী হয়ে যাওয়া এবং আল্লার উপর থেকে ভরসা হারিয়ে ফেলা। যা একজন মুমিনের কাজ হতে পারেনা।

মুমিনের কাজ হচ্ছে বিপদে ধৈর্য্য ধারন করা। আল্লাহ্ তায়ালার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা। তিনিই যে সমাধান কারী তা মেনে সকল কিছু তার উপরে ছেড়ে দেয়াই একজন মুমিনের কাজ।

আসুন আমরা বিপদে, কষ্টে বেশী বেশী উপরোক্ত আমলটি করি আর আল্লাহ জাল্লা শানুহু’র কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি।

Showkatbd.com is a full-featured online documents organized application site. Which is going to prepare document from just a form.   It will save your time ! Bengali, English and Arabic letter generator is available here. Do not heisted to try this! 

  FORM2Dox

  DOCUMENTCreation Tools