নারিদের শাস্তি দিতে আবিষকার হয়েছিলো যেসব যন্ত্র

নারিদের শাস্তি দিতে আবিষকার হয়েছিলো বেশ কিছু লোমহর্ষক যন্ত্র । আজ আমি সেই যন্ত্র নিয়েই আলোকপাত করবো। যন্ত্রগুলো মধ্যযুগিয় অন্ধকার বর্বর সময়ের।

ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার সময়গুলোর একটি ছিলো মধ্যযুগ । যুগটি ছিল অবিচারে পুর্ন। ব্যভিচারে লিপ্ত বা সন্তেহজনক নারিদের উপর চালানো হতো বিভিন্নভাবে  নিষ্ঠুর নির্যাতন। নারিদের শাস্তি দেয়ার জন্য আবিস্কার হয়েছিলো বিভিন্ন ধরনের শাস্তি যন্ত্র আর শাস্তি প্রদানের বর্বর কিছু পদ্বতি।

আজ সেসব শাস্তিগুলোর কিঞ্চিত তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

নারিদের শাস্তিতে কাঠের ঘোড়া :

Source: Youtube

ব্যভিচারে দোষি সাব্যস্ত যে কোনো মহিলাকে শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছিলো এই কাঠের ঘোড়া। দোষি সাব্যস্ত নারিকে নগ্ন করে দুই হাত বেধে ঐ ঘোড়ার উপর বসিয়ে দেয়া হতো। উক্ত কাঠের ঘোড়াটির মাঝ বরাবর একটি পুরুষাঙ্গের মতো কাঠের অংশ ছিলো। এই টুকরাটি চাকার সাথে সংযুক্ত ছিলো। এবং তার চারপাশে কয়েকটি লোহার পেরেক ছিলো। এরপর টানা হতো ঘোড়াটিকে। টানার সময় নারির নিম্নাঙ্গে আছড়ে পড়তো সেই কাঠের পুরুষাঙ্গটি।

এই শাস্তি থেকে যদি কেউ বেচেই যেতো সারা জিবন তাকে অক্ষম অথর্ব হয়েই জিবন অতিবাহিত করতে হতো।

কত বিভৎস একটু চিন্তা করে দেখেন তো। যখন আমি এই আর্টিকেলটি তৈরির জন্য প্রয়োজনিয় পড়া শুনা করছিলাম, আমার শরির কেপে উঠেছিলো কল্পনা করে।

এভাবে শাস্তির চেয়ে ফাসি দেয়া বা গুলি করে মেরে ফেলা আজকের যুগে অনেকটাই মনে হয় (?) মানবিক ।

বুকের উপর নির্যাতন :

Source: The Aquarius

অবৈধভাবে সন্তান জন্ম দেয়া নারিদের জন্যে আবিস্কার হয়েছিলো এই শাস্তি । যন্ত্রটি দানাদার ধারালো বস্তু দিয়ে তৈরি। এটি আগুনে উত্তপ্ত করে এটি দিয়ে অভিযুক্ত নারির বক্ষযুগল কেটে ফেলা হতো। বা মহিলাকে দেয়ালের সাথে বেধে রেখে উত্তপ্ত যন্ত্রটি দিয়ে আস্তে আস্তে তার বুকে লাগিয়ে দেয়া হতো।

নারিদের শাস্তিতে হাত বন্ধনি :

Source: Buzzfeed

মধ্যযুগের নারিদের শাস্তি দেয়ার সবচে জনপ্রিয় যন্ত্রগুলির অন্যতম একটি। এর ব্যবহার শুরু হয় চিনা রাজবংশে। ১৯ শতক পর্যন্ত এর ব্যবহার চলমান ছিলো। এটি কেবল চিনেই নয় ইউরোপিয় দেশগুলোতেও এর ব্যবহার হতো। ইউরোপে এটি হ্যান্ডগ্রিপ নামে পরিচিত ছিলো।

যন্ত্রটি শরিরের যে কোনো অংশকে চুর্ন বিচুর্ন করার ক্ষমতা রাখতো।

ব্যভিচারিনি হিসেবে যাকে সন্দেহ বা সাব্যস্ত করা হতো, তাকে নির্যাতনের জন্য এই বিশেষ এই যন্ত্রে তার হাতের আংগুল রাখতে বাধ্য করা হতো। এই যন্ত্রটি শাস্তি প্রাপ্ত মহিলার আঙুলের ডগা প্রচন্ড জোরে চেপে ধরতো।

যন্ত্রণা সহ্য না করতে পেরে অনেকে অজ্ঞান হয়ে যেতো। অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে ফের ঠান্ডা পানি মেরে জ্ঞান ফিরিয়ে আনা হতো, যেনো সে কষ্ট অনুভব করে।

নারিদের শাস্তি দিতে আবিষকার ভার্জিন চেম্বার :

Source: Nuremberg

আয়রন মেডেন : এই যন্ত্রটি দেখতে একজন নারির আকৃতির মতোই ছিলো। ভেতরের অংশটি একজন মানুষের জন্য পর্যাপ্ত খালি জায়গাসহ একটি চেম্বার ছিলো। এর সামনে ছিলো একটি ঢাকনা ।  ঢাকনার ভেতরের মুখে লাগানো ছিলো কাটা ।

বন্দি প্রবেশ করলে তারা নড়াচড়া করতে পারতো না। নড়াচড়া ককরলেই ঢাকনার মুখের কাটা শরিরের ক্রমাগত আঘাত করতো। আর এটাই ছিলো শাস্তি।

জুডাস ক্র্যাডল :

Source: Quora

জুডাস ক্র্যাডল : এটি স্পেনের আবিস্কৃত নারিদের শাস্তি দেয়ার হাতিয়ার। এটি পিরামিড আকৃতির হাতিয়ার।  দোষিকে রশি দিয়ে শক্তভাবে হাত পা বেধে দেয়া হতো। এরপর দুদিক থেকে উপরে উঠিয়ে তাদের মলদ্বার দোলনার ক্রেষ্ট দ্বারা গভিরভাবে খোচানো হতো। এবং নির্যাতিতাকে উলঙ্গ করে, তাদের নগ্ন শরির সকলের সামনে উন্মোচন করে ভোগ করতো ।

নারিদের শাস্তিতে ভার্জিন বেল্ট :

Source: ScienceInfo.net

ভার্জিন বেল্ট বা আয়রন আন্ডারপ্যান্ট : এই বেল্টগুলি ‘আয়রন আন্ডারপ্যান্ট’ হিসাবেও পরিচিত ছিল। মধ্যযুগিয় ইউরোপিয় পুরুষরা তাদের স্ত্রিদের নিম্নাংগে তালা দেওয়া উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতো। যখন তারা কাজের প্রয়োজনে বাড়ি থেকে দুরে যেতো তখন তারা তাদের স্ত্রিদের এই বেল্ট পরিধান করিয়ে যেতো।

মধ্যযুগে নারিদেরকে পুরুষের সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হতো। নারিরা অন্য পুরুষদের দিকে তাকাতে বা দেখা করতে পারতোনা। পুরুষদের দিকে তাকানো বা দেখা করা ছিলো সম্পুর্নরুপে নিষিদ্ধ।

বিশেষ করে যখন পুরুষরা যুদ্ধের জন্য বাড়ি থেকে বের হতো তখন এই ধরনের বেল্টগুলো সুদির্ঘ সময়ের জন্য নারিদের পরিধান করিয়ে রেখে যেতো।

গরুর মাংসের টেন্ডন দিয়ে তৈরি চাবুক :  এই চাবুকটি ব্যভিচারে দোষি কিংবা রাজাদের আদেশ অমান্য করা নারিদের শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিলো । মহিলাদের নগ্ন করে গরুর মাংশের টেন্ডন দিয়ে তৈরি এই চাবুক দিয়ে সকলের সম্মুখে জোড়ে জোড়ে প্রহার করা হতো।

গরুর মাংসের টেন্ডন দিয়ে তৈরি চাবুকটি দেখতে ছোট হলেও প্রচন্ড জোরে আঘাত হানতো এবং যেখানে এর আঘাত পড়তো সেখানে সারা জিবনের জন্য দাগ থেকে যেতো।