গায়ে হলুদের প্রচলন যেভাবে

গায়ে হলুদের প্রচলন : বিয়ে মানেই বিরাট খাওয়া দাওয়া, সাজগোজ আর বিভিন্ন আচারঅনুষ্ঠান। গায়ে হলুদ হিন্দু সম্প্রদায়ের বিয়ের অন্যতম একটি রিতি। অনেকে মনে করেন, গায়ে হলুদের প্রচলন হয়েছে হিন্দু ধর্ম থেকে। কিন্তু ভারতিয় ইতিহাস বলছে ভিন্ন কথা।

ঐতিহাসিকদের মতে, বর্তমান বিয়ের রিতি অনেকটাই মোঘল যুগ থেকে চলে আসছে। আগে নিয়ম ছিল সুচের ছোয়া নেই এমন পোশাক পরেই বিয়ে হবে। পরে মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গিরের স্ত্রি নূরজাহান জরির সুতার তৈরি বেনারসির প্রচলন করেন। শাড়িগুলো দেখতে সুন্দর এবং আকর্ষনিয় হওয়ায় বিয়ের পোশাক হিসাবে হিন্দুমুসলিম নির্বিশেষে এই পোশাক ব্যবহার শুরু করেন। ইতিহাসবিদরা বলছেন, বিয়েতে গায়ে হলুদের প্রচলন কোন ধর্মিয় কারনে নয় বরং বেশ কিছু উপকারি দিকের কথা ভেবেই শুরু হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কাচা হলুদ প্রাকৃতিক ভাবে জিবানু নাশক। হলুদ শরিরকে পরিষ্কার করে সংক্রমণ ঠেকায়। শরিরে তাপের ভারসাম্য রাখার পাশাপাশি ঠাণ্ডা রাখতেও সাহায্য করে হলুদ। 

বিয়ের সময় এমনিতে অনেকে মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন। হিন্দু বিয়ের ক্ষেত্রে অনেকে উপোসও থাকেন। ধারনা করা হয়, বিয়ের সময় বরকনের শরির ভাল রাখার জন্য এবং বিভিন্ন সংক্রমন থেকে বাচাতে হলুদ ব্যবহার করা হতো প্রাচিনকাল থেকেই  সেটাই এখন আধুনিকরূপ পেয়ে আলাদাভাবেগায়ে হলুদে অনুষ্ঠানে পরিনত হয়েছে। বিয়েতে হলুদের ছোয়া মঙ্গল জনকও ভাবা হত। 

ছাড়া হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে ত্বকের যে কোনও সমস্যাকে ঢেকে রাখে। উপমহাদেশে রূপচর্চায় প্রাকৃতিক উপাদানের অন্যতম অনুষজ্ঞ ছিল এই হলুদ। হলুদের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ক্ষমতা যে কোনও ত্বকের জন্যই উপকারি। চড়া মেকআপেও ত্বকের ক্ষতি করতে দেয় না হলুদ। 

মুলত এসব কারনেই যুগ যুগ ধরে হলুদকে বিয়ের অন্যতম উপকরণ হিসাবে ধরা হয়। তবে রিতি ধর্ম অনুযায়ি এর প্রয়োগ এবং আচারের অনুষ্ঠান ধিরে ধিরে আলাদা রূপ পেয়েছে।