জানুন জিন্স তৈরীর ইতিহাস

নাম করন

জিন্স তৈরির ইতিহাসের দিকে তাকালে প্রথমেই আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে এর নামের দিকে। অনেকেরই ধারনা, এই নাম এসেছে ইতালির সমুদ্র বন্দর জেনোয়া থেকে। সেখানের নাবিকদের বলা হত জিনি, সহজ ভাষায় দৈত্য। এই জিন এর প্লুরাল নাম্বার জিন্স। অনেকে আবার বলেন, না এই মত ঠিক নয়। ডেনিমের যে কাপড়, ফরাসিতে তাকে বলা হত, ‘জিন ফুস্টিয়া’, সেই থেকেই নামকরণ হয়েছে জিন্সের।

ইতিহাস

জিন্সের সঙ্গে জুড়ে আছে লেভি স্ট্রস নামের এক ব্যবসায়ীর ভাগ্য অন্বেষণ। আঠারো শতকের গোড়ার দিকে ক্যালিফোর্নিয়ার বেশ কিছু অঞ্চলে আবিষ্কার হয়েছিল বেশ কয়েকটি সোনার খনির। খনিগুলিতে কাজের জন্য, লক্ষ লক্ষ মানুষ, এই অঞ্চলে ভিড় জমাত।

লেভি স্ট্রস জার্মানি থেকে এসেছিলেন নিউ ইয়র্কে। এসে তিনি শোনেন, এখানের খনি শ্রমিকদের প্যান্টগুলো পরিশ্রমের কারণে খুব দ্রুত ছিঁড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্ট্রস এদের জন্য বিশেষ এক ধরনের প্যান্ট বানানোর কথা ভাবতে লাগলেন। যা সহজে ছিড়ে নষ্ট হবে না।

তিনি খুঁজে বের করলেন বাদামী রঙের এক ধরনের মোটা কাপড়।  তা দিয়ে তৈরী করালেন প্যান্ট। এরপর যেখানে যেখানে ঘসা লাগার সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে যোগ করলেন তামার পাত । জ্যাকব ডেভিস নামের এক দর্জি লেভি স্ট্রস এর এই ভাবনাকে করলেন বাস্তবায়ন ।

জিনসের রং নীলের কাহিণী

এই প্যান্ট অল্প সময়ের মধ্যেই খনি শ্রমিকদের মধ্যে ভীষন জনপ্রিয় হয়ে উঠল। লেভি স্ট্রস আরও আকর্ষণীয় করতে এই কাপড় প্রাকৃতিক নীল রং দিয়ে ডাই করিয়ে দিলেন। জনপ্রিয়তার মাত্র বেড়ে গেলো দ্বিগুন। তৈরী হল এই প্যান্ট। অনেকেই মনে করেন এই থেকেই ব্লু ডেনিম জিন্সের উৎপত্তি।

এর বহুবছর পরে, ১৮৭৩ সালে বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসলো জিন্স।

জিন্সের পকেট কাহিনী

জিনস্‌-এ পকেটের ওপরে আরও একটি ছোট্ট পকেট দেখেছেন নিশ্চয়। ঐ ছোটটো পকেটেরও আছে আরেকটি ইতিহাস। তা হলো, খনির সেই শ্রমিক আর কাউবয়রা তাদের ঝোলানো ঘড়িটি ওয়েস্ট কোটের পকেটের বদলে জিন্সের এই পকেটে রাখা শুরু করলেন। পকেটটি ছোটো বিধায় ঘড়িটি রাখতেও সহজ হলো । সেই থেকেই এই পকেটের উৎপত্তি। আজ নেই সেই কাউবয়রা, নেই সেই ঘড়িও। কিন্তু আছে জিন্সের সেই পকেট। আর আমাদের জন্য জিন্স।