ডুবে আছি অন্ধকারে
মানবতার জন্য মিথ্যে আস্ফালন

ডুবে আছি অন্ধকারে

5
(3)

আমাদের বেড়েছে জ্ঞানের পরিধি, হয়েছি জ্ঞানি, বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজিবি, দার্শনিক, অর্থনিতিবিদ, সমাজ সংস্কারক, ধর্মের দায়ী। বড় বড় ডিগ্রি আর মোটা মোটা সনদ। এত্তোসবের পরেও কি একটু মানবিক হয়েছি ? মানবতা নিয়ে কি একটু চিন্তা ভাবনা করি ? নিজেকে এই প্রশ্নটা করি তো ? লোক দেখানো, আর অভিনয়কে পেছনে ঠেলে বুকে হাত দিয়ে উত্তরটা দিই।

কোথায় আজ মানবতা ? মানবতা আজ ভুলুন্ঠীত, নিগ্রিহিত, অদৃশ্য । দেশে দেশে। সমগ্র পৃথিবী জুড়ে। আমাদের আজ সময় নেই মানবতা নিয়ে ভাববার, মানবতা নিয়ে কাজ করবার। মানবতা নামের এই বাজে নোংরা একটি শব্দ নিয়ে দু এক সেকেন্ড সময় নষ্ট করার। আমরা আমাদের নিয়েই ব্যস্ত। বিজ্ঞানী ব্যস্ত তার আবিস্কারে, সমাজ সংস্কারক ব্যস্ত বড় নেতা হতে, ধর্মের দায়ী ব্যস্ত ওয়াজ নসিহতে আর কোন দোয়ায় কি উপকার তা প্রচারে। অর্থনিতিবিদ ব্যস্ত কিভাবে ঘরের চাল চুলো বিক্রি করে একজন মানুষ নিস্ব হতে পারে – সেই সুত্র আবিস্কারে.. মানবতা নিয়ে কি কারো মাথা এতটুকু কাজ করে? করেনা।

দেশে দেশ চলে আজ ধ্বংসযজ্ঞের হলি খেলা। মায়ের বুকে গুলি খেয়ে কাতরায় দুগ্ধপোষ্য শিশু। বাবার চোখের সামনের ধর্ষিত হয় কন্যা। পথে পথে পরে থাকে মানুষ নামের একটি প্রানীর মৃত গলিত লাশ। তা খেয়ে দেয়ে স্বাস্থ্য সমৃদ্ধ করে পোকামাকড়।

আজ হাতের তালুতে তাকিয়েই ভ্রমন করি জগত সংসার। বিশাল সমুদ্র আর পর্বতমালার গহীনের নিস্বর্গীয় সোন্দর্যতা উপভোগ করি। উন্নয়নের জোয়ারে ভাসে সারা বিশ্ব। এক কেজি চাল বিলি করে ১০০ মুখের সেলফি উঠাই, মৃতুর খবরে জানাযায় শরিক না হয়ে ইন্নালিল্লাহ শব্দের কপি পেষ্ট মেরে ঝড় তুলি সোশাল মিডিয়ায়, বাবা মার ভরন পোষন না দিয়ে রাস্তার কুকুরের সাথে সেলফি তুলে করুনা দেখাই। উপদেশের বাণী আওরাই হাজার বিজারে, সোশাল মিডিয়ায় ভিউ বাড়ে, ইমোজি রিয়েকশানে আপ্লুত হই.. বোধের ফেরিওয়ালা ডুকরে ডুকরে কাঁদে.. আমাদের লজ্জাহীন তান্ডবলীলায়।

মানবতা কি ? ভূলে গেছি আজ। কিভাবে গড়বো অর্থের পাহাড়, নাম, যশ, খ্যাতি, বিত্ত-বৈভব। ব্যস্ত সর্বদা। আমরা সকলেই। মানবতাকে পিষ্ট করে এগিয়ে যাচ্ছি তো যাচ্ছি.. গন্তব্যহীন ঠিকানায় নির্লজ্জের মতো।

মানবতা আজ শুধুই একটি শব্দ। নোংরা কাগজে লিখিত সঙ্গহীন শুধুই একটি শব্দ।

ধর্ম মানি। ধর্মের জন্য করি হই হুল্লোর, ধর্ম নিয়ে করি যুদ্ধ। ধর্মের প্রচারে হই নির্মম। ধর্মের শ্রেষ্টত্ব প্রকাশে করি প্রতিযোগিতা। ধর্মের কিতাব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে স্বগোত্রীয়দের নিয়ে করি বিজয় উদযাপন। মসজিদ ভাংগি, মন্ধির ভাংগি, গির্জায় করি অগ্নি সংযোগ- আমরা ধর্ম প্রেমী। আমরা খুবই ধার্মিক । মানবতার টুটি চেপে ধর্মের নদীতে করি পবিত্র হবার স্নান। ধর্ম থেকে আজ মানবতাকে দিয়েছি বিদায়। ধর্মের সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জনে নিজেরাই যেনো আজ সাজিয়েছি নিজের ধর্মের অমিয় বানি। ধর্ম গ্রন্থ শুধুই আজ বুক শেলফে সাজানো একটি বৃহৎ আকৃতির সুন্দর বই। মানবতার বানিগূলো আজ ঢেকে আছে ধর্মগ্রন্থের মোটা মোটা মলাটের নিচে..

..আর আমরা ডুবে আছি ঘোর অন্ধকারে।

image_printআর্টিকেল প্রিন্ট করুন

আর্টিকেল পড়ে আপনার অনুভূতি কি?

রেট দিতে তারকায় ক্লিক করুন!

গড় রেটিং 5 / 5. ভোট কাউন্ট হয়েছে: 3

এখন পর্যন্ত কোনো ভোট হয়নি! আপনিই প্রথম

আর্টিকেল পড়ে ভালো লাগলে...

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন!

We are sorry that this post was not useful for you!

Let us improve this post!

আমাদের জানান কিভাবে আমরা এই আর্টিকেল আরো উন্নত করতে পারি?

About মুর্খের গলাবাজি

মুর্খের গলাবাজি
মুর্খের গলাবাজি আর ছাইভস্ম সমান জিনিস! যাহা কখনোই কোনো কর্মে প্রয়োজন পরেনা। যাহা বেকারই যত্রতত্র পরিয়া থাকে।

Check Also

প্রার্থনা

প্রার্থনা..

5 (2) প্রার্থনা.. হে আল্লাহ তোমার কাছে হাত তুলে ক্ষমা চাই। ক্ষমা করো। তুমি রহমান, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »