ভাগ্য পরিবর্তনের দোয়া

ভাগ্য পরিবর্তনের দোয়া : মানুষ সৌভাগ্যবান হতে চায়। দুর্ভাগ্য কারো কাঙ্ক্ষিত নয়। তাই ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য মানুষ অনেক চেষ্টা করে, দুর্ভাগ্য এড়াতে বিভিন্ন ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করে এবং মহান আল্লাহ’র কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে। আর আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার মাধ্যমই হচ্ছে দোয়া। দোয়ার মাধ্যমে মানুষের ভাগ্য এবং ভাগ্যের দুরবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তাকদিরের বিরুদ্ধে সতর্কতা কোনো কাজেই আসবে না। যা ঘটেছে ও যা ঘটতে পারে—তা থেকে শুধু দোয়াই পারে নিষ্কৃতি দিতে। কোনো কোনো দুর্দশার সঙ্গে মোকাবেলা করে বিচার দিন পর্যন্ত লড়াই করতে থাকে দোয়া।’ (তাবরানি আউসাত, হাদিস : ১৫১৯)

হাদিসে দোয়া করাকে স্বতন্ত্র ইবাদত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সাহাবি নোমান বিন বাশির (রা.) এর সূত্রে বর্ণিত,

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৮১)

পবিত্র কোরআনে মহার আল্লাহ তায়ালা নিজেও তার বান্দাদের বেশি বেশি দোয়া করার আহ্বান জানিয়েছেন। বর্ণিত হয়েছে, ‘আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। অহংকারবশত যারা আল্লাহর ইবাদত করে না, তারা লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা : মুমিন, আয়াত : ৬০)

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতির জন্য আলাদা ও স্বতন্ত্র অনেক দোয়া শিখিয়েছেন তাঁর সাহাবীদের এবং তাঁর উম্মতদেরও তা পালনের জন্য বলেছেন। সাহাবি আবু মালিক আশআরী (রা.) তার বাবা সাহাবী আসিম (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে কিছু বাক্য শিখিয়ে বেশি বেশি দোয়া করতে বলতেন। দোয়াটি হলো-

االلّهُـمَّ اغْفِـرْ لي ، وَارْحَمْـني ، وَاهْدِنـي ، وَعافِنـي وَارْزُقْنـي

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মাগ্ ফিরলী, ওয়ার‘হামনী, ওয়াহদিনী, ওয়া ‘আ-ফিনী, ওয়ারযুকনী।

অর্থ: হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করুন, আমাকে দয়া করুন, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমাকে সার্বিক নিরাপত্তা ও সুস্থতা দান করুন এবং আমাকে রিজিক দান করুন। (সহীহ মুসলিম, হাদিস, ২০৭৩, ২৬৯৭।

ছোটটো এই দোয়াটিতে মহান আল্লাহর কাছে একজন মানুষের জীবনের সকল চাওয়া পাওয়ার আকুতি ফুটে উঠেছে। তাই মুমিনের উচিত সব ধরনের ব্যস্ততার মধ্যে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি এই দোয়াটি করা এবং নিজের ভাগ্য পরিবর্তনে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া।

পরিশেষে, ভাগ্য পরিবর্তনের দোয়া বেশী বেশী পাঠ করুন।




দোয়ায়ে ইউনুস – বিপদের সময়ে বেশি বেশি পড়ুন

দোয়ায়ে ইউনুস সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরানে বলেন : فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْغَمِّ ۚ وَكَذَٰلِكَ نُنجِي الْمُؤْمِنِينَ – ফাসতাজাবনা লাহু  ওয়া নাজ্জাইনা মিনাল গাম্মি, ওয়া কাজালিকা নুনাজ্জিল মুমিনিন। [আমি তাঁর (নবী ইউনুসের) ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম। তাঁকে দু:খ থেকে মুক্তি দিয়েছিলাম। মুমিনদের আমি এভাবেই উদ্ধার করি। -সূরা আল আম্বিয়া: ৮৮]

সুরা আম্বিয়ার ৮৭ নং আয়াতের শেষ অংশই হচ্ছে দোয়ায়ে ইউনুস –

لَا إِلَـٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ

উচ্চারন : লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজজলিমীন।

অর্থ: ইয়া আল্লাহ, আপনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই। আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। অবশ্যই আমি পাপী। –সূরা আল আম্বিয়া: ৮৭

হযরত ইউনুস (আ:) অত্যন্ত সম্মান, বিনয় ও কাতর স্বরে এই দোয়া পাঠ করে মাছের পেট থেকে পরিত্রান পেয়েছিলেন বলেই একে দোয়ায়ে ইউনুস বলা হয়। হযরত ইউনুস (আ:) ৪০ দিন পর্যন্ত অন্ধকার মাছের পেটে থেকে শুধু তাসবিহ-তাহলিল করে নিজের পাপের জন্য অনুশোচনা ব্যক্ত করে কান্নাকাটি করেছিলেন।

দুনিয়াবি যে কোনো বিপদ আপদ থেকে পরিত্রানে এই দোয়াটি একাগ্রচিত্তে পাঠ করলে নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সেই বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন। এ প্রসঙ্গে কোরআনুল কারিমের (সূরা আস সাফফাত : ১৩৯-১৪৪) এ ইরশাদ হয়েছে,

وَاِنَّ يُوۡنُسَ لَمِنَ الۡمُرۡسَلِيۡنَؕ‏ – ইউনুসও ছিল রসূলদের একজন।

اِذۡ اَبَقَ اِلَى الۡفُلۡكِ الۡمَشۡحُوۡنِۙ‏ – স্মরণ কর, যখন সে পালিয়ে বোঝাই নৌকায় পৌঁছেছিল।

فَسَاهَمَ فَكَانَ مِنَ الۡمُدۡحَضِيۡنَ​ۚ‏ – অতঃপর (দোষী খুঁজার জন্য যে লটারী করা হল সেই) লটারীতে সে অংশ নিল আর তাতে হেরে গেল।

فَالۡتَقَمَهُ الۡحُوۡتُ وَهُوَ مُلِيۡمٌ‏ – পরে এক বৃহদাকার মাছে তাকে গিলে ফেলল। তখন সে নিজেকে ধিক্কার দিতে লাগলো।

فَلَوۡلَاۤ اَنَّهٗ كَانَ مِنَ الۡمُسَبِّحِيۡنَۙ‏ – সে যদি (অনুতপ্ত হয়ে) আল্লাহর তাসবীহকারী না হত,

لَلَبِثَ فِىۡ بَطۡنِهٖۤ اِلٰى يَوۡمِ يُبۡعَثُوۡنَ​ۚ‏ – তাহলে নিশ্চিতই তাকে কিয়ামত পর্যন্ত মাছের পেটে থাকতে হত।

তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত, বিপদ আপদে বা সংকটপূর্ন মুহুর্তে অস্থির না হয়ে ধৈর্য ধারন করে শুধু আল্লাহ পাকের কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করা আর তার তাসবীহ তাহলিল পাঠ করা।

আল্লাহ আমাদের তার উপর পরিপূর্ন আস্থা এনে সবুর করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

Showkatbd eDocs is a full-featured online documents organized application site. Which is going to prepare document from just a form. It will save your time ! Bengali, English and Arabic letter generator is available here.




ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির দোয়া

ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির দোয়া : জীবন চলার পথে আমরা প্রতিনিয়তই মানুষের ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি প্রকাশ্যে বা চোখের আড়ালে। একটি ষড়যন্ত্র ধ্বংস করে দিচ্ছে এক একটি ফ্যামিলি। ষড়যন্ত্রের শিকারে ভাই হারাচ্ছে ভাই, সন্তান হারাচ্ছে বাবা, বন্ধু হারাচ্ছে তার মন খুলে কথা বলার মতো লোকটিকে। জীবনের সব অশান্তি আর দূর্ঘটনা গুলো ঘটে শুধু এই ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়ার কারনেই।

পবিত্র কোরানে জীবন চলার পথের সকল সংকট আর বিপদ থেকে মুক্তির জন্যও রয়েছে দিক নির্দেশনা। এসব নির্দেশনা অনুস্বরন করাও প্রতিটি মুমিনের কর্তব্য।

ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির দোয়া – رَبِّ اِنِّىْ مَغْلُوْبٌ فَانْتَصِر    

উচ্চারণ: রব্বি আন্নি মাগলুবুন ফানতাসির।

অর্থ: হে আল্লাহ, আমি তো অসহায়। অতএব তুমি আমাকে সাহায্য করো।

নুহ (আ.) তার উম্মতদের দ্বারা কোণঠাসা হয়ে, আল্লাহর হুকুমে তিনি এই দোয়া করেছিলেন। আর মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মহাপ্লাবন দিয়ে তাকে সাহায্য করেন। আর তার শত্রুদের নিশ্চিহ্ন করে দেন। (সুরা: কামার, আয়াত : ১০, তাফসিরে তাবারি)

Showkatbd eDocs is a full-featured online documents organized application site. Which is going to prepare document from just a form. It will save your time ! Bengali, English and Arabic letter generator is available here.

“হে আল্লাহ, আমি তো অসহায়। অতএব তুমি আমাকে সাহায্য করো।”




আল্লাহ্’র প্রশংসায় পড়ুন

আল্লাহ্’র প্রশংসায় পড়ুন :

سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ العَظِيم, لا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ إِلا بِالله, اللّهُـمَّ اغْفِـرْ لي
সুব্হানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী, সুবহানাল্লাহিল আযিম, লা হাওলা ওয়ালা, ক¦ুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্, আল্লাহুম্মাগ ফিরলি
অর্থ: মহান সেই আল্লাহ এবং তারই সকল প্রশংসা। মহান সেই আল্লাহ যিনি সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী। আল্লাহ ছাড়া কোনো ভরসা নেই; কোনো ক্ষমতা বা শক্তি নেই, হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন।

আল্লাহ্’র প্রশংসায় পড়ুন :

উচ্চারন ও অর্থ:

سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ العَظِيم
উচ্চারন: সুব্হানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী, সুবহানাল্লাহিল আযিম
অর্থ: মহান সেই আল্লাহ এবং তারই সকল প্রশংসা। মহান সেই আল্লাহ যিনি সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী।

لا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ إِلا بِالله
উচ্চারন: লা হাওলা ওয়ালা ক¦ুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো ভরসা নেই; কোনো ক্ষমতা বা শক্তি নেই

اللّهُـمَّ اغْفِـرْ لي
উচ্চারন: আল্লাহুম্মাগ ফিরলি
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র, সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বশক্তিমান। মানুষের ব্যক্তিগত শক্তি, সামর্থ্য, ক্ষমতা ও সাহস যতই থাকুক না কেনো যদি আল্লাহ তায়ালা তাওফিক না দেন তা কোনো ধরনের উপকারেই আসে না। আল্লাহ তায়ালার সত্ত্বা সব কিছুর ঊর্ধ্বে, সব শক্তিধর বস্তু আল্লাহ তায়ালার সামনে একেবারে তুচ্ছ ও ছোট।

আর আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তারই গুনগান করার জন্য। তার আদেশ নিষেধ মেনে জীবন চালানোর জন্য।

আমাদের মানব জাতির করনীয় সর্বদা সেই স্রষ্টার প্রশংসা করা, তাঁর কাছে আত্নসমর্পন করা এবং তাঁরই কুদরতি পায়ে নিজেদের মাথা ঠেকানো। আর মুখে ‍মুখে সব সময় তাঁরই তাসবিহ পাঠ করা ও তাঁরই প্রশংসা করা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ছোট ছোট এইসব আমলগুলো করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

আল্লাহ্’র প্রশংসায় পড়ুন

Showkatbd eDocs is a full-featured online documents organized application site. Which is going to prepare document from just a form.  It will save your time ! Bengali, English and Arabic letter generator is available here.




৫ ওয়াক্ত নামাযের অজিফা

৫ ওয়াক্ত নামাযের অজিফা : মুসলমানদের জন্য আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ফরজ এবাদত। আর এই সকল ফরজ ইবাদত গুলোর মধ্যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হচ্ছে অন্যতম। একজন মুমিন বান্দা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর সব সময় আল্লাহ তাআলার বিভিন্ন ধরনের আমল করে থাকেন। আর যে যত বেশি আমল করতে পারবে আল্লাহ তাআলা তার উপর তত বেশি সন্তুষ্ট হবেন এবং তাকে তত বেশি সওয়াব দান করবেন।

৫ ওয়াক্ত নামাযের অজিফা :

১. ফজরের নামাযের পর ১০০ বার পড়ুন :

আরবি :   هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ

উচ্চারণ : হুয়াল হাইয়্যুল কাইউম ।

অর্থ : তিনি জীবিত ও অবিনশ্বর ।

২. যোহরের  নামাযের পর ১০০ বার পড়ুন:

আরবি :   هُوَ اَعْلَى الْعَظِيْم

উচ্চারণ : হুয়াল আলীউল আজীম ।

অর্থ : তিনি শ্রেষ্ঠতম ও অতি মহান ।

৩. আসরের নামাযের পর ১০০ বার পড়ুন:

আরবি :    هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيْمُ

উচ্চারণ : হুয়াল রাহমানুর রাহীম ।

অর্থ : তিনি কৃপাময় ও করুণানিধান।

৪. মাগরিব নামাযের পর ১০০ বার পড়ুন:

আরবি :    هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ

উচ্চারণ : হুয়াল গাফুরুর রাহীম ।

অর্থ : তিনি পাপ মার্জনাকারী ও দয়াময় ।

৫. ঈসা নামাযের পর ১০০ বার পড়ুন:

আরবি : هُوَ اللَّطِيْفُ الْخَبِيْرُ

উচ্চারণ : হুয়াল লতিফুল খাবির ।

অর্থ : তিনি অতিশয় সতর্কশীল ।

মহাল আল্লাহ্ আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামায বাদ উক্ত তসবিহ পাঠ করার তৌফিক দান করুন । আমীন!

৫ ওয়াক্ত নামাযের অজিফা

Showkatbd.com is a full-featured online documents organized application site. Which is going to prepare document from just a form.   It will save your time !

  FORM2Dox

  DOCUMENTCreation Tools

আল্লাহ সবাইকে ভালো রাখুন, সুস্থতার সাথে নেক আয়ু দান করুন এই দোয়ায়..

শওকতবিডি হোক আপনার প্রতি মুহর্তের সঙ্গী। হয়ে উঠুক আপনার সেমিঅফিস




ইসমে আজম দোয়া

ইসমে আজম দোয়া : ইসমে আজম হচ্ছে আল্লাহর মহান নাম। আল্লাহর বড়ত্বকে বোঝানো। আলেমদের মতে, ইসমে আজম সহকারে আল্লাহর নিকট দোয়া করলে অবশ্যই আল্লাহ্‌ এই দোয়া কবুল করে থাকেন। (আল্লাহই ভালো জানেন)।

দোয়া নং ১

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্নি আশহাদু আন্নাকা আংতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আংতাল আহাদুস সামাদুল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়া লাম ইকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি। কারণ আমি সুদৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করি যে, তুমিই আল্লাহ। তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তুমি এক, অমুখাপেক্ষী। যার কোনো সন্তান নেই, তিনিও কারো সন্তান নন এবং তার সমকক্ষ কেউ নেই।

যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালারএই নামের মাধ্যম্য দোয়া করে থাকেন, যার উছিলায় কিছু প্রার্থনা করে থাকেন মহান আল্লাহ তায়ালা তার দোয়া কবুল করে থাকেন এবং তা প্রদান করে থাকেন।

দোয়া নং ২

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لك الْمَنَّانُ بَدِيعَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ، يَا ذَا الْجَلالِ وَالإِكْرَامِ، يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আস-আলুকা বি-আন্না লাকাল হা’মদু লা-ইলা-হা ইল্লা-আনতা ওয়াহ’দাকা লা-শারিকা লাকাল মান্না-ন, ইয়া বাদিআ’স্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি। কারণ তুমিই প্রশংসার যোগ্য। তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমি হান্নান ও মান্নান (দয়ালু ও দাতা)। তুমিই আসমান-যমীনের স্রষ্টা। হে শ্রেষ্ঠত্ব ও বদান্যতার অধিকারী। হে চিরঞ্জীব। হে বিশ্ব জাহানের ব্যবস্থাপক।

وَإِلَٰهُكُمْ إِلَٰهٌ وَاحِدٌ ۖ لَّا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ ‎﴿١٦٣﴾‏

দোয়া নং ৩

لَا إِلَـٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ

উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনায যলিমীন। (সূরা আম্বিয়া: ৮৭)

অর্থ: তুমি ব্যতীত সত্য কোনো উপাস্য নেই; তুমি পুতঃপবিত্র, নিশ্চয় আমি জালিমদের দলভুক্ত।

হযরত সাদ ইবনে ওয়াক্কাস (রা) বলেন, রাসুল সাঃ বলেন যে- আমি কি তোমাদেরকে আল্লাহর ইসমে আযম জানিয়ে দিব না? হযরত ইউনূস (আ) এর দুআই হলো ইসমে আযম। তখন এক ব্যক্তি বলল, এটা কি হযরত ইউনূস (আ) এর জন্যই নির্ধারিত। তখন রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, তুমি কি শোন নাই এরপর আল্লাহ তাআলা কি বলেছেন-

এরপর তাকে আমি উদ্ধার করলাম দুঃখ-দুশ্চিন্তা হতে। এমনিভাবে আমি মুমিনদেরকে উদ্ধার করে থাকি। (সূরা আম্বিয়া: ৮৮)

ইসমে আজম পড়ার নিয়ম ও সময়

যে কোন নেক প্রয়োজনে ইসমে আজম সহ আল্লাহর নিকটে দোয়া করলে আল্লাহ পাক তা কবুল করেন। নামাযের সালাম ফিরানোর পর আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা সহকারে ইসমে আজম বা আল্লাহর সুমহান নাম ধরে ডেকে তার নিকটে দোয়া করতে হয়।

ইসমে আজম কি এবং কেন এই দোয়া পড়তে হয়?

আরবি শব্দ الاسم الأعظم, নামসমূহ দিয়ে আল্লাহর বড়ত্বকে বোঝানো হয়ে থাকে। ইসমে আজমকে আল্লাহর মহান নাম (اسم الله الأکبر)-ও বলা হয়ে থাকে। তবে ইসমে আজম আল্লাহর কোন নাম এটা সুনিদিষ্টভাবে জানা যায়না। শিয়া ও সুন্নি মুসলমানদের নিকট ইসমে আজম হচ্ছে আল্লাহর এক বিশেষ নাম এবং এক বিশেষ দোয়া। ইসলামি স্কলারদের মতে, ইসমে আজম সহকারে আল্লাহর নিকট দোয়া করলে অবশ্যই আল্লাহ্‌ এই দোয়া কবুল করে থাকেন। আল্লাহ্‌ই ভালো জানেন।

যে আর্টিকেল পড়লাম এখন : ইসমে আজম

ইসমে আজম






চাশতের নামাজ – আদায়ের সময় ও নিয়ম

চাশতের নামাজ : চাশতের নামাজ নফল ইবাদাত বা নফল নামাজ। আর নফল ইবাদত হচ্ছে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভের মাধ্যম। প্রিয় নবী সা. ফরজ সব নামাজের পাশাপাশি এসব নফল নামাজ নিজেও আদায় করতেন এবং অন্যদের আদায়েও উৎসাহিত করেছেন। সাহাবা আজমাইন থেকে শুরু করে তাবে-তাবেইনরা এসব নামাজ আদায় করতেন। চাশতের নামাজকে সালাতুদ দুহাও বলা হয়।

চাশতের নামাজের সময়: সূর্য এক-চতুর্থাংশ উপরে উঠলে, গ্রীষ্মকালে ৯টা-১০টা, আর শীতকালে ১০টা-১১টার সময় সাধারণত তা আদায় করতে হয়। সূর্যের তাপ যখন প্রখর হতে শুরু করে তখন এই নামাজ আদায় করা উত্তম। কেননা, নবী কারীম (সা.) বলেছেন, صلاة الأوابين حين ترمض الفصال- ‘চাশতের নামাজ পড়া হবে যখন সূর্যের তাপ প্রখর হয়।’

চাশতের নামাজ আদায়ের নিয়ম: চাশতের নামাজের নিয়মও  অন্যান্য নফল নামাজের মতোই।

চাশতের নামাজের নিয়ত: কিবলামুখী হয়ে নফল দুই রাকাত চাশতের নামাজের নিয়ত করেছি আল্লাহু আকবার।

চাশতের নামাজ পড়ার ধারাবাহিক বর্ননা:

১- কিবলামুখী হয়ে নফল দুই রাকাত চাশতের নামাজের নিয়ত করেছি আল্লাহু আকবার (তাকবিরে তাহরিমা) বলে নিয়ত বাঁধা।

২- অতঃপর ছানা পড়া –  سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالِىْ جَدُّكَ وَلَا اِلَهَ غَيْرُكَ (বাংলা উচ্চারণ : সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তাআ-লা জাদ্দুকা, ওয়ালা ইলাহা গায়রুক)।

৩- বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম বলে সূরা ফাতিহা পাঠ করা।

৪- এরপর কোরানের যে কোনো আয়াত বা সুরা মিলানো । সুরা শেষে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে গমন।

৫- রুকুতে সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম পাঠ করা এবং সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদাহ বলে দাড়ানো এবং

৬- রাব্বানা লাকাল হামদ বলে সিজদায় যাওয়া।

৭- ১ম সিজদায় গিয়ে ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা‘ পড়া। আল্লাহু আকবার বলে প্রথম সিজদাহ থেকে উঠে- আল্লাহম্মাগ ফিরলি ওয়ার হামনি, ওয়ার জুকনি, ওয়াহদিনি পাঠ করা এবং আল্লাহু আকবার বলে

৮- আবার ২য় সিজদায় গমন এবং “সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা” পড়া।

৯- অত:পর আল্লাহু আকবার বলে পরবর্তী রাকা’আতে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ানো,

১০-  আবার “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” বলে সূরা ফাতিহা তেলাওয়াত।

১১- এবং কুরআনের আরেকটি অংশ বা সূরা পাঠ করা। পাঠ শেষে আল্লাহু আকবার বলে

১২- দ্বিতীয় রুকুতে যাওয়া এবং আবার “সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম” পাঠ করা।

১৩- সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদাহ বলে দাড়ানো এবং ফের

১৪- রাব্বানা লাকাল হামদ পাঠ শেষে সিজদায় যাওয়া।

১৫- ২য় রাকাতের সিজদায় গিয়ে ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা‘ পড়া। আল্লাহু আকবার বলে প্রথম সিজদাহ থেকে উঠে- আল্লাহম্মাগ ফিরলি ওয়ার হামনি, ওয়ার জুকনি, ওয়াহদিনি পাঠ করা এবং আল্লাহু আকবার বলে

১৬- আবার ২য় সিজদায় যাওয়া এবং “সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা” পড়া। পাঠ শেষে আল্লাহু আকবার বলে উঠে বসা।

১৭- অতঃপর বসাবস্থায় তাশাহহুদদরূদ ও দোয়া মাছুরা পড়ে আস্সালামু আলাইকুম বলে প্রথমে ডানে এবং পরে বাম দিকে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে  পাঁচ ওয়াক্ত নামায এবং মুসলিম উম্মাহকে প্রতিটি দিন সুন্নতের ওপর অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আরও পড়ুন: সালাতুল হাজতের নিয়ম

চাশতের নামাজের রাকাত সংখ্যা:

চাশতের নামাজ সর্বনিম্ন দুই রাকাত। তবে চার রাকাত পড়াই উত্তম। আরও বেশিও পড়া যায়। উপরে ৪, ৮, ১২ রাকাত পর্যন্ত হাদীসে পাওয়া যায়। কেননা এটি নফল নামাজ। নফল নামাজ বেশি পড়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা নেই, বরং সওয়াব রয়েছে। মক্কা বিজয়ের দিন দুপুরের আগে রাসুল (স.) আলী (রা.) এর বোন উম্মে হানি (রা.)-এর ঘরে খুবই সংক্ষিপ্তভাবে ৮ রাকাত পড়েছিলেন বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। সংক্ষিপ্তভাবে পড়লেও রুকু এবং সেজদায় তিনি পূর্ণ ধীরস্থিরতা বজায় রেখেছিলেন এবং প্রতি দুই রাকাত অন্তর সালাম ফিরিয়েছিলেন।

হাদিসে এসব নফল নামাজ দুই রাকাত করে পড়ার কথা রয়েছে। হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, صلاة الليل والنهار مثنى مثنى ‘দিন ও রাতের নফল নামাজ দুই দুই রাকাত করে।’

Google News এ বৈশাখীবার্তা24 গুগল নিউজ এ শওকত বিডি

যে আর্টিকেল পড়লাম এখন :

চাশতের নামাজ – আদায়ের সময় ও নিয়ম

চাশতের নামাজের সময়




সালাতুল হাজতের নিয়ম

সালাতুল হাজতের নিয়ম : সালাতুল হাজত নামাজ হচ্ছে হাজত বা মনের বাসনা বা ইচ্ছে পুরনের উদ্দেশ্যে যে নামায আদায় করা হয়। সালাতুল হাজত একটি সাধারন নফল সালাত বা নফল ইবাদাত। বান্দা তার গুনাহ মাফের জন্য, বিশেষ প্রয়োজনে কিংবা শারীরিক সুস্থতা, মানসিকভাবে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে এ নামাজ পড়তে হয়।

সালাতুল হাজত নামাজের উপযুক্ত সময় : মাশায়েখ ও ওলামায়ে কেরাম হতে বর্ণিত যে, মুসলিম নর-নারী বিশেষ প্রয়োজেন এবং যে কেনো বিপদ মুক্তির জন্য রাত্রের শেষভাগে নিদ্রা হতে জাগ্রত হয়ে পাক পবিত্র হয়ে, ইয়াকিনের সাথে কয়েকবার দুরুদ শরীফ ও এস্তেগফার পাঠ করে চার রাকাত নফল ‘সালাতুল হাজত’ নামাজ শেষে আল্লাহর নিকট খালেছ দিলে অনুনয়-বিনয়ের সাথে স্বীয় উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রার্থনা করবেন। আল্লাহর অসীম রহমেত তার দোয়া কবল হবে ইনশা আল্লাহ্।

সালাতুল হাজতের ধারাবাহিক বর্ননা :

আরবী নিয়তঃ

نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى رَكْعَتِ صَلَوةِ الْنَفْلِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ-

নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাক’আতাই ছালাতিল হাজাতি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার ।

বাংলা নিয়তঃ আমি ছালাতিল হাজতের চার রাকাত নফল নামাজের নিয়ত করছি। আল্লাহু আকবার।

এরপর আউজুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, সানা এবং সূরা ফাতিহা পাঠ করে-

لَا إِلَـٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ – فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْغَمِّ ۚ وَكَذَٰلِكَ نُنجِي الْمُؤْمِنِينَ-

লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ্ জো’য়ালিমীন। ফাজ্তাজাবনা লাহু ওয়া নাজ্জাইনাহু মিনাল গাম্মি, ওয়া কাজালিকা নুনজিল মু’মিনিন এই আয়াত ১০০ বার পাঠ করবেন।

এবং রুকু সিজদা করে সোজা হয়ে দাঁড়াবেন।

দ্বিতীয় রাকাত:

সূরা ফাতিহার পর رَبَّي أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ – রাব্বি আন্নি মাস্সানিয়ায যুররো ওয়া আনতা আরহামার রাহিমীন  ১00 বার পাঠ করবেন।

এবং রুকু সিজদা করে সোজা হয়ে দাঁড়াবেন।

তৃতীয় রাকাত:

তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ওয়া উফায়য়িজুি আমরি ইলা আল্লাহ, ইন্নাললাহা বাসিরুম বিল ইবাদ ১০০ বার পাঠ করবেন।

এবং রুকু সিজদা করে সোজা হয়ে দাঁড়াবে।

চতুর্থ রাকাত:

চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার পর حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ نِعْمَ الْمَوْلَى وَنِعْمَ النَّصِيْرُ হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল, নি’মাল মাওলা ওয়া নি’মান-নাসির’ ১০০ বার পাঠ করবেন।

এবং রুকু সিজদা করে বসবেন।

যথারীতি তাশাহহুদদরূদ ও দোয়া মাছুরা ইত্যাদি পাঠ করে ছালাম ফিরায়ে নামায শেষ করবেন।

নামায শেষে সিজদায় গিয়ে رَبِّ اِنِّىْ مَغْلُوْبٌ فَانْتَصِر রব্বি আন্নি মাগলুবুন ফানতাসির ১০০ বার পাঠ করবেন এরপর সিজদা হতে উঠে আল্লাহর দরবারে হাত উঠায়ে মোনাজাত করবেন। আল্লাহর অসীম রহমেত তার দোয়া কুবল হবে ইনশা আল্লাহ্।

সালাতুল হাজতের নিয়ম

সালাতুল হাজত নামাজের আয়াত সমুহের বাংলা উচ্চারনসহ অর্থ: 

لَا إِلَـٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ – فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْغَمِّ ۚ وَكَذَٰلِكَ نُنجِي الْمُؤْمِنِينَ-

উচ্চারন : (লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ্ জো’য়ালিমীন। ফাজ্তাজাবনা লাহু ওয়া নাজ্জাইনাহু মিনাল গাম্মি, ওয়া কাজালিকা নুনজিল মু’মিনিন)

অর্থ : তুমি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। তুমি দোষমুক্ত, নিশ্চয় আমি গোনাহগার। অতঃপর আমি তার আহ্বানে সাড়া দিলাম। এবং তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিলাম। আমি এমনিভাবে মুমিনদের মুক্তি দিয়ে থাকি’’

رَبَّي أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ –

উচ্চারন : (রাব্বি আন্নি মাস্সানিয়ায যুররো ওয়া আনতা আরহামার রাহিমীন) 

অর্থ: হে আমার প্রভু! আমি দুঃখে কষ্টে পতিত হয়েছি, তুমিইতো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।

ওয়া উফায়য়িজুি আমরি ইলা আল্লাহ, ইন্নাললাহা বাসিরুম বিল ইবাদ

حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ نِعْمَ الْمَوْلَى وَنِعْمَ النَّصِيْرُ

 উচ্চারণ : হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল, নি’মাল মাওলা ওয়া নি’মান-নাসির’

অর্থ : আল্লাহ তাআলাই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনিই হলেন উত্তম কর্মবিধায়ক; আল্লাহ তাআলাই হচ্ছে উত্তম অভিভাবক এবং উত্তম সাহায্যকারী।অংশের মিলিত রূপ।

رَبِّ اِنِّىْ مَغْلُوْبٌ فَانْتَصِر    

উচ্চারণ: রব্বি আন্নি মাগলুবুন ফানতাসির।

অর্থ: হে আল্লাহ, আমি তো অসহায়। অতএব তুমি আমাকে সাহায্য করো।

আরো জানুন : আজান প্রচলনের ইতিহাস

এই দোয়াগুলো মুখস্ত রাখুন :

যে আর্টিকেল পড়লাম এখন :

সালাতুল হাজতের নিয়ম




জান্নাতে প্রবেশের ছোটটো একটি দোয়া

”রাদিতু বিল্লাহি রব্বাও, ওয়া বিল ইসলামি দিনাও, ওয়া বিমুহাম্মাদিন (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাবিয়্যা”

ভালো কাজের পুরষ্কার জান্নাত। জান্নাত মুমিন মুসলমানের চিরস্থায়ী ঠিকানা। এমন কোনো মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে জান্নাত চায় না। ‘আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে এ দোয়াটি পড়বে, আমি তার (জান্নাতের) দায়িত্ব নিলাম। কেয়ামতের দিন আমি তাকে হাত ধরে জান্নাতে নিয়ে যাব’।দোয়াটি হলো:

رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم نَبِيًّا

উচ্চারণ : রাদিতু বিল্লাহি রব্বাও, ওয়া বিল ইসলামি দিনাও, ওয়া বিমুহাম্মাদিন (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাবিয়্যা।’

অর্থ : আমি আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট আমার প্রতিপালক হিসেবে এবং ইসলামের প্রতি সন্তুষ্ট আমার দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি সন্তুষ্ট আমার নবি হিসেবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয়নবির সঙ্গে জান্নাতে যাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এই দোয়াগুলো মুখস্ত করে রাখুন :




উমর এর খেলাফতকাল

হযরত উমর এর খেলাফতকাল 634 থেকে 644

পরিচিতি : হযরত উমর (রা.) এর পুরো নাম উমর ইবনুল খাত্তাব। ৫৮৩ খ্রিষ্টাব্দে কুরাইশ বংশের বনু আদি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা খাত্তাব ইবনে নুফায়েল এবং মাতা হানতামা বিনতে হিশাম। মৃত্যু ৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দ।

তিনি অন্য দশজন কুরাইশ বালকের মতোই শৈশবে ইটের রাখালী করে বড় হয়েছেন। ইসলাম গ্রহণের পর রাসূল (সা.) এর অন্যতম প্রধান সহকারী হিসেবে পরিনত হন। তিনি ছিলেন রাসূল (সঃ) এর শ্বশুর। উমর (রাঃ) এর মেয়ে হাফসা (রাঃ) ছিলেন রাসূল (সঃ) এর স্ত্রী।

শিক্ষা ও অন্যান্য : তৎকালীন সমগ্র আরবে গুটিকয়েক শিক্ষিত লোকের মধ্যে উমর ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ছিলেন একাধারে কুস্তিগীর, মল্লযোদ্ধা এবং বক্তা হিসেবে ছিলেন খ্যাত। 

ইসলাম গ্রহনের পরের অবদান :

ইসলাম ধর্ম গ্রহনের পরে উমর নিয়েছেন অসংখ্য পদক্ষেপ। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য :

  • তার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ মুসলমানদের প্রথম প্রকাশ্যে কাবায় নামায আদায় করার সাহস জোগায়।
  • নামাযের জন্য যে আযানের ব্যবস্থার প্রচলন হয়, তা নবীজির জীবদ্দশায় হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রা.) এবং হযরত উমর (রা.) এর স্বপ্নের ভিত্তিতেই গ্রহণ করা হয়েছিলো।
  • কোরান সংকলন : হযরত আবু বকর (রা.) হযরত উমর (রা.) এর পরামর্শেই প্রথম কুরআন সংকলনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং এই লক্ষ্যে হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত (রা.) এর নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেন।

খেলাফতে অধিষ্ঠিত : হযরত আবু বকর (রা.) তার ইন্তেকালের সময় হযরত উমর (রা.) পরবর্তী খলীফা নিযুক্তির জন্য মুসলিম জনসাধারণের কাছে সুপারিশ করে যান এবং এই সুপারিশের ভিত্তিতেই হযরত উমর (রা.) ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা হিসেবে নির্বাচিত হন। 

রাজ্য শাসন : উমর এর শাসন আমলেই খিলাফতের সীমানা অকল্পনীয়ভাবে বিস্তৃতি লাভ করে। তার শাসন আমলেই জেরুজালেম মুসলমানদের হস্তগত হয়। তিনি পূর্বের খ্রিষ্টান রীতি বদলে ইহুদিদের বসবাস ও উপসনা করার সুযোগ দিয়েছিলেন। তিনি ইসলামী সাম্রাজ্যকে পূর্বে পারস্য থেকে পশ্চিমে বর্তমান তিউনিসিয়া, দক্ষিনে ইয়েমেন থেকে উত্তরে ককেশাস পর্বত পর্যন্ত বিস্তৃত করেন।

খেলাফতে অধিষ্টিত হবার পরের অবদান :

ইসলামী সাম্রাজ্য পরিচালনায় উমরের রয়েছে বিশাল অবদান। যার মধ্যে :

  • মুসলিম খিলাফতের সচিবালয়, বাইতুল মাল (কোষাগার), সেনানিবাস, প্রাদেশিক শাসন ও বিচার ব্যবস্থা উমর (রা.) প্রথম প্রবর্তন করেন। এছাড়া মুসলিম মুদ্রা ব্যবস্থা এবংহিজরী ক্যালেন্ডারের প্রবর্তন তার হাত ধরেই সম্পন্ন হয়।
  • ৬৩৭ ঈসায়ীতে হযরত উমর (রা.) জেরুসালেম সফর করেন এবং রোমানদের হাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত অসংখ্য নবীর স্মৃতিধন্য বাইতুল মুকাদ্দাস তথা মসজিদুল আকসাকে পুননির্মাণ করেন।
  • উমর এর খেলাফতকাল মুসলিম শাসনের বিস্তৃতির কাল। তার শাসনকালেই তৎকালীন বিশ্বের দুই পরাশক্তি; পারসিক সাসানীয় সাম্রাজ্য এবং রোমান বাইজান্টানীয় সাম্রাজ্যকে মুসলমানরা চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে তাদের শাসনাধীন এশীয় আফ্রিকান অঞ্চলসমূহে মুসলিম শাসনের বিস্তার করে।

চরিত্র : উমর ছিলেন একজন ন্যায়পরায়ন বাদশা। একাধারে ছিলেন ইসলামী আইনের একজন আইনজ্ঞ। তার এই ন্যায় পরায়নতার কারনেই রাসূল (সা.) তাকে আলফারুক (সত্যমিথ্যার পার্থক্যকারী) নামে ভূষিত করেন। তার ক্ষেত্রেই সর্বপ্রথম আমিরুল মুমিনিন (أمير المؤمنين- মুমিনদের নেতা/বিশ্বাসীদের নেতা) সন্মানসূচক উপাধিটি ব্যবহৃত হয়েছে।

ইসলাম গ্রহনের পূর্বে :

1. হযরত উমর (রা.) ইসলাম গ্রহণের পূর্বে ইসলামে প্রচন্ড বিরোধী ছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) কে হত্যার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।

2. হযরত উমর (রা.) এর ইসলাম গ্রহণের পূর্বে তার ভাই হযরত যায়েদ ইবনে খাত্তাব (রা.), বোন হযরত ফাতেমা ইবনে খাত্তাব (রা.) এবং ভগ্নিপতি হযরত সাঈদ ইবনে যায়েদ (রা.) তার পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করেন। 

3. রাসূল (সা.) কে হত্যা করতে গিয়ে তিনি ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন এবং রাসূল (সা.) এর কাছে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। 

শাহাদাত বরন : ঈসায়ী ৬৪৪ সালের ৩রা নভেম্বর, ২৩ হিজরীর ২৬শে জিলহজ্জ্ব মূগীরা ইবেনে শুবার ইরানী কৃতদাস আবুলুলর বিষাক্ত ছুরির আঘাতে (৩দিন যন্ত্রনায় কাটার পর) মুসলিম বিশ্বকে শোক সাগরে নিমজ্জিত করে এই দুনিয়ার জিবনে পরিসমাপ্তি লাভ করেন। হযরত উমর (রা.) প্রথম মুসলিম শাসক যিনি দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় শাহাদাত বরণ করেন।

উমর এর খেলাফতাকাল রাশেদিন খেলাফতের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী খিলাফত। তিনি সুদীর্ঘ ১০ বছর ছয় মাস চারদিন খেলাফতে অধিষ্ঠিত ছিলেন আর এই সমেয়ই মুসলিম সাম্রাজ্যকে পৃথিবীর অর্ধেক জুড়ে করেছিলেন বিস্তৃত।

পরের পর্ব :

  • হযরত উসমানের খেলাফতকাল

পূর্বের পর্ব :

প্রথম পর্ব :