মূত্রের উপর কর : আয়ুর্বেদের মতে, পৃথিবীর কোনো জিনিসই ফেলনা নয়। সব কিছুই ব্যবহার্য, যদি তা সঠিক অনুপাতে ব্যবহার করা হয়। সে হিসেবে গোমূত্র তো বটেই, মনুষ্যমূত্রও নাকি বেজায় কাজের জিনিস! গা ঘিনঘিন করে উঠলেও জানা গেছে, প্রাচিন রোমানরা মনুষ্যমূত্র বা পেশাবকে ব্যবহার করতো দাতের মাজন হিসেবে। আবার লন্ড্রি অর্থাৎ কাপড় ধোয়ার কাজেও ব্যবহার করা হত এটিকে। এমনকি রোমার সম্রাট পেশাবের ওপর করও বসিয়েছিলেন।
মূত্রের উপর কর:
রোমান আয়ুর্বেদীদের ধারণা ছিল, দাঁত ঝকঝকে ও মজবুত করতে কাজ করে মূত্র। সে কারণে তারা মূত্রকে মাউথওয়াশ ও টুথপেস্ট হিসেবে ব্যবহার করত। শুধু এতটুকুতেই তারা থেমে ছিল না, গবেষণা করে বের করেছিল, সবচেয়ে দামি মূত্র পর্তুগিজদের। তাতে নাকি দাঁত পরিষ্কারের কাজ হত সবচেয়ে ভালো। ফলে সে মূত্রের কদরও ছিল বেশি।
রোমানরা তাদের গবেষণায় দেখেছে, মনুষ্যমূত্রের সংস্পর্শে এলে পোষাক পরিষ্কার হয়, ঝকঝকে হয়। ফলে সে যুগে ডিটারজেন্টের জায়গা দখল করে নিয়েছিল এ পদার্থটি। বৈজ্ঞানিক সূত্র হিসেবেও তারা ভুল ছিল না। কারণ, পেশাবে থাকে অ্যামোনিয়া, যেটা আজকের দিনের বেশিরভাগ ক্লিনারে ব্যবহার করা হয়। ফলে বহুগুণে ব্যবহার বেড়ে গিয়েছিল পদার্থটির দাম।
মনুষ্যমূত্র সংগ্রহের স্থান
চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সীমিত নগরবাসীর বাসস্থান রোমান রাজ্যে বাধ্য হয়ে জনসাধারণের মূত্র সংগ্রহে নেমে পড়তে হয়েছিল এসব পেশার সাথে সংশ্লিষ্টদের। পরিকল্পনা মাফিক নগরের প্রধান সড়কগুলোর পাশে কিছু দূর পরপর মূত্রত্যাগের বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হতো।
আরো পড়ুন : স্তনকর একটি জঘন্য কর ব্যবস্থা
নিয়ম করে সেখানেই মূত্রত্যাগ করত নগরবাসী। সেই মূত্রই পরে কাজে লাগানো হত জামাকাপড় কাচা ও দাঁত মাজার কাজে। সংগ্রহের পর প্রথমে সেই মূত্র থিতানোর সময় দেওয়া হত। তারপর তা ব্যবহার করা হত। অবশ্য এই দুই কাজ ছাড়া চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা, বাগানে সার হিসেবে ব্যবহার, পশুর চিকিৎসায় ব্যবহার করা ইত্যাদি কাজেও পেশাবের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়।
বিষয়টি নজরে পড়ে যায় তৎকালীন রোমান সম্রাটের। আয়ের উৎস খুঁজে বেড়ানো সম্রাটের কাছে সংবাদটি ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। রোমান আমজনতা প্রচুর পরিমাণ মূত্র ব্যবহার করছে জানতে পেরে তৎকালীন রোমান সম্রাট মূত্রের উপর চড়া কর বসিয়ে দেন।
পরিশেষে,
হায়রে প্রিথিবি, অবাক প্রিথিবি! আমার জানা মতে, মুত্রকর, স্তনকর, নিলকরের পরে বাকি থাকলো শুধু মলকর। কবে, কখন, কোন্ দেশে যে মলকরের নতুন বিধান সৃষ্টি হয়ে মনুষ্যজাতির উপর চালানো হবে মলকরের ষ্টিমরোলার তা একমাত্র উপরওয়ালাই ভালো জানেন।
সুস্থ থাকেন, ভালো থাকেন-এই কামানায়..