এক পর্যটক মেক্সিকোয় গেলেন। জেলেদের মাছের ও মাছ ধরার খুব প্রশংসা করলেন। এক পর্যায়ে বললেন,
– আচ্ছা, মাছ ধরতে তোমাদের কত সময় লাগে ?
– বেশিক্ষণ না, জেলেদের উত্তর।
– তাহলে তোমরা আরো বেশি সময় দিয়ে আরো বেশি মাছ ধরো না কেনো ? পর্যটক প্রশ্ন করেন।
জেলেরা বললো – আমরা যে মাছ ধরি তাতে আমাদের প্রয়োজন মিটে যায় ।
– তাহলে মাছ ধরার পর বাকি সময় তোমরা কি করো ? লোকটা জিজ্ঞাসা করে।
জেলেরা উত্তরা দেয় – মাছ ধরার পরের বাকি সময় আমরা ঘুমাই, বৌয়ের সাথে খাই, বাচ্চাদের সাথে খেলা ধুলা করি, সন্ধ্যায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেই, মজা করি, গলা ছেড়ে গান গাই।
পর্যটক তাদেরকে থামিয়ে বলেন – আমি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছি। আমি তোমাদের বুদ্ধি দিয়ে সাহায্য করতে পারি। তোমাদের আরো বেশি সময় দিয়ে মাছ ধরতে হবে, বাড়তি মাছগুলো বিক্রি করে মাছ ধরার বড় নৌকা কিনতে হবে।
– তারপর? জেলেদের প্রশ্ন।
– বড় নৌকার সাহায্যে বেশি মাছ ধরবে। বেশি আয় হবে। আর সেই আয় দিয়ে আরো বড় দুটা, তিনটা বা আরো বেশি নৌকা কিনবে। এক সময় মাছ ধরার নৌবহর বানিয়ে মাছ ধরতে যাবে। মধ্যসত্ত্বভোগি ব্যবসায়িদের কাছে মাছ বিক্রি করবে না। সরাসরি মাছ বিক্রি করবে মাছ প্রসেসিং ফ্যাক্টরির কাছে। তারপর এক সময় তোমরা নিজেরাই মাছ প্রসেসিং এর ফ্যাক্টরি খুলে বসবে। এক পর্যায়ে তোমরা অনেক ধনি হয়ে যাবে। তারপর গ্রাম ছেড়ে মেক্সিকোর রাজধানিতে অথবা আমেরিকার লসএঞ্জেলেস বা নিউ ইয়র্কে চলে যাবে। সেখান থেকে তোমরা মেগা প্রজেক্ট চালু করবে।
– এসব করতে কত সময় লাগবে? জেলেদের প্রশ্ন।
কুড়ি/পচিশ বছর তো লাগবেই। জবাব দেয় পর্যটক।
– তারপর, জেলেরা জানতে চায়।
পর্যটক হেসে জবাব দেয়, -ব্যবসায় যখন আরো বড় হবে তখন তোমরা শেয়ার বাজারে যাবে, মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আয় করবেন।
– মিলিয়র ডলার ! ধরুন পেলাম মিলিয়ন ডলার। কিন্তু, তারপর ? জেলেরা সবিস্ময়ে প্রশ্ন করে।
পর্যটক তখন জবাব দেন, তোমরা তখন অবসরে যাবে। শান্ত গ্রামে ফিরে এসে সমুদ্রের ধারে ঘুমাবে, বাচ্চাদের সাথে খেলা করবে, বৌয়ের সাথে খাবার খাবে, সন্ধ্যায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিবে, মজা করবে…,।
তখন জেলেরা বলে – সেই কাজটাই তো আমরা এখন করছি। তাহলে এই বিশ/পচিশ বছরের এই কষ্টের জিবনের মানে কি ?