বৃহস্পতিবার , সেপ্টেম্বর ১৯ ২০২৪
টিআইএন (TIN) বা ই-টিআইএন (e-TIN) সার্টিফিকেট
টিআইএন (TIN) বা ই-টিআইএন (e-TIN) সার্টিফিকেট এর প্রয়োজনীয়তা, সুবিধা ও অসুবিধা..

টিআইএন (TIN) বা ই-টিআইএন (e-TIN) সার্টিফিকেট এর প্রয়োজনীয়তা, সুবিধা ও অসুবিধা..

টিআইএন (TIN) বা ই-টিআইএন (e-TIN)  সার্টিফিকেট এর প্রয়োজনীয়তা, সুবিধা, অসুবিধা নিয়েই আমার আজকের সংক্ষিপ্ত আলোচনা। আপনাদের কিঞ্চিত উপকার হলেই আমার কষ্ট সার্থক। তো আসুন, শুরু করি।

আমাদের দৈনন্দিন জিবনে অর্থনৈতিক প্রতিটি দাপ্তরিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত এই টিআইএন (TIN) বা ই-টিআইএন (e-TIN)। বিরাট এক ভোগান্তির বিষয় মনে হয় – তাই না ? আসলে টিআইএন (TIN) বা ই-টিআইএন (e-TIN) কে আমরা যতখানি ভোগান্তির বিষয় বলে মনে করি, আসলে কিন্তু সেরকমটি নয়। তাহলে এই টিআইএন (TIN) বা ই-টিআইএন (e-TIN) কি ? কি জন্য এর প্রয়োজন, কিই-বা এর সুবিধা আর অসুবিধা তাই জানবো আজ।

টিআইএন (TIN) সার্টিফিকেট কি ?

টিআইএন (TIN) হচ্ছে (Taxpayer’s Identification Number) এর সর্ট ফর্ম। আপনি দেশের একজন সন্মানিত করদাতা তা প্রমানের নাম্বারযুক্ত একটি সনদ। দেশের একজন করদাতা এবং আপনার একটি ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (Taxpayer’s Identification Number) আছে এরকম একটি সনদকেই টিআইএন (TIN) (TIN Certificate) বলা হয়।

টিআইএন (TIN) থাকলেই যে আপনাকে আয়কর পরিশোধ করতে হবে এমনটি কিন্তু নয়। আপনার আয় যদি NBR (National Board of Revenue) বা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত করসীমার মধ্যে থাকে তাহলেই কেবল আপনাকে আয়কর পরিশোধ করতে হবে। আর যদি বাৎসরিক আয় করসীমার নীচে থাকে, তবে আপনাকে আর আয়কর বা ইনকাম ট্যাক্স পরিশোধ করতে হবেনা। তবে আপনাকে শুধুই জিরো বা শুন্য বিবরনীতে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে।

মনে রাখবেন, NBR (National Board of Revenue) বা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রতি বছরই আয়করের সীমা নির্ধারনসহ আয়করের এ টু জেড সম্বলিত একটি গেজেট প্রকাশ করে থাকে। আর সে গেজেট  অনুযায়ীই প্রতিটা ট্যাক্সপেয়ার বা করদাতা আয়কর পরিশোধ করে থাকেন।

টিআইএন (TIN) বা ই-টিআইএন (e-TIN) নাম্বার কি ?

টিআইএন (TIN) নাম্বার মূলত: ১০ ডিজিটের একটি পরিচিতি নাম্বার। যে নাম্বারে আপনাকে সনাক্ত করা যাবে যে, আপনি দেশের একজন করদাতা। এই নাম্বারের মাধ্যমে করদাতার কর অঞ্চল, কর দাতার পদমর্যাদা আর কর দাতার পরিচিতি বহন করে। এছাড়া বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্টান এই টিআইএন (TIN) Number  দিয়ে টিআইএন (TIN) সার্টিফিকেট যাচাই করতে পারে।

টিআইএন (TIN) নাম্বার পরিবর্তন হয়ে এখন ই- টিআইএন (e-TIN) এ রুপান্তরিত হয়েছে। ই-টিআইএন হলো আয়কর নিবন্ধনের আধুনিক সংস্করণ। (Electronic Taxpayer’s Identification Number-eTIN ) ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) ।

টিআইএন (TIN) হচ্ছে সনাতন পদ্ধতি আর ই-টিআইএন হচ্ছে চলমান আধুনিক পদ্বতি ।  টিআইএন (TIN) হচ্ছে ১০ ডিজিট সম্বলিত আর ই-টিআইএন হচ্ছে ১২ ডিজিট সম্বলিত।

টিআইএন (TIN) বা ই-টিআইএন (e-TIN) সার্টিফিকেট কেনো প্রয়োজন ?

নিম্নে উল্লেখিত ক্ষেত্র সমুহে আপনার আয় করসীমার মধ্যে না আসলেও, আপনার বাধ্যতামূলকভাবে টিআইএন (TIN) বা ই-টিআইএন (e-TIN) সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। যেমন:

  • ব্যবসা বা চাকরির ক্ষেত্রে।
  • ব্যাংকিং ট্রান্সেকশান করতে।
  • পন্য আমদানি / রপ্তানি করতে।
  • কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ে।
  • রাইড শেয়ারিং কোম্পানিতে গাড়ি দিতে ।
  • গাড়ি , ফ্ল্যাট বা প্লট ক্রয়ে।
  • নির্বাচনী প্রার্থী হতে।
  • সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার টেন্ডারে অংশ নিতে।
  • মুক্ত পেশাজীবী যেমন হিসাবরক্ষক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলীদের পেশার চর্চায়।
  • ব্যবসায়িক সমিতি বা কোনো নিবন্ধিত সংগঠনের সদস্য হতে ।

টিআইএন (TIN) বা ই-টিআইএন (e-TIN) সার্টিফিকেটের সুবিধাসমূহ

টিআইএন (TIN) সার্টিফিকেটের মাধ্যমে আপনি যে দেশের একজন গর্বিত করদাতা হিসেবে নিবন্ধিত হলেন – সে ই পরিচিতি বহন করার পাশাপটাশি কিছু ব্যক্তিগত সুবিধাও রয়েছে যেমন,

  • সঞ্চয়পত্র এবং ব্যাংকে আপনার জমাকৃত অর্থের আয় থেকে ১০% কর কর্তন করা হবে। যদি টিআইএন (TIN) না থাকে ১৫% কর্তন করা হবে।
  • সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পেশাজীবি বা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা দেয়। এসব সুবিধা নিতেও প্রয়োজন হয় টিআইএন (TIN)।

টিআইএন (TIN) বা ই-টিআইএন (e-TIN) সার্টিফিকেট এর অসুবিধা

টিআইএন (TIN) সার্টিফিকেটের শুধুমাত্র একটিই অসুবিধা, আর তা হচ্ছে করযোগ্য আয় থাকুক বা নাই থাকুক প্রতি বছর আপনাকে ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিট করতেই হবে। তবে পর পর ৩ বছর যদি আপনার করযোগ্য আয় জিরো হয় অর্থাৎ আপনার বার্ষিক আয় করসীমার নিচে থাকে, তাহলে চতুর্থ বার আপনাকে রিটার্ন দাখিল না করলেও চলবে এবং আপনি আপনার আয়কর নিবন্ধন বাতিলের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, রিটার্ন জমা না করলে আপনার আয় কালো টাকা হিসেবে গন্য হবে।

image_printআর্টিকেল প্রিন্ট করুন
বিজ্ঞাপন বিষয়ে জানতে ক্লিক করুন

About মোহাম্মদ শওকত আকবার

Showkatbd.com এর প্রতিষ্ঠাতা এবং একজন ব্লগার। চলমান ব্লগিং ল্যান্ডস্কেপকে আমি নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছি। আমি শুধু একটি ব্লগ নিয়েই নয়; একটি অপরিহার্য বহুমুখী প্ল্যাটফর্ম তৈরির চেষ্টা করছি। "Many more in one” শ্লোগানে যার পথচলা। যে ব্লগ হবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল বাংলা ভাষা ভাষিসহ অনলাইন ব্যবহারকারীদের প্রতি মুহূর্তের এক অপরিহার্য প্লাটফর্ম । তাদের অনলাইন সেবা প্রদানেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। ”সম্পূর্ন একটি সেবামূলক সাইট”

Check Also

এক্সপেরিয়েন্স সার্টিফিকেট তৈরী করুন সহজেই

এক্সপেরিয়েন্স সার্টিফিকেট বা অভিজ্ঞতা সনদ বা অভিজ্ঞতা প্রশংসা পত্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে কোম্পানী বা কর্মস্থানের নিয়োগ কর্তা …

One comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Language »
error: Content is protected !!