বুধবার , সেপ্টেম্বর ১৮ ২০২৪
একাউন্ট টু একাউন্ট ফান্ড ট্রান্সফার

একাউন্ট টু একাউন্ট ফান্ড ট্রান্সফার

একাউন্ট টু একাউন্ট ফান্ড ট্রান্সফার : Currency/Fund Transfer কারেন্সী বা ফান্ড ট্রান্সফার বলতে, এক একাউন্ট থেকে অন্য আরেকটি একাউন্টে অর্থ, মুদ্রা বা তহবিল স্থানান্তর করাকে বুঝায়। তা একই ব্যাংকের অন্য আরেকটি একাউন্টে হতে পারে কিংবা তা এক ব্যাংকের একাউন্ট থেকে অন্য আরেকটি ব্যাংকের একাউন্টে হতে পারে। এটি একটি ব্যাংকিং সিষ্টেম। বিশ্ব জুড়েই এই সিষ্টেমটি প্রচলিত আছে । প্রয়োজনের তাগিদেই এক একাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে অর্থ ট্রান্সফার করার প্রয়োজন হতে পারে। এটা কখনো নিজের এক ব্যাংকের একাউন্ট থেকে অন্য ব্যাংকে বা নিজের একাউন্ট থেকে কাউকে চেক প্রদান না করে সরাসরি ট্রান্সফার করার মাধ্যমে।

একাউন্ট টু একাউন্ট ফান্ড ট্রান্সফার

আমাদের বাংলাদেশে সাধারনত ৩ ভাবে একাউন্ট টু একাউন্ট ফান্ড ট্রান্সফার হয়ে থাকে :

1.  BEFTN (Bangladesh Electronic Fund Transfer Network) : বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন) বা BEFTN.

2.  RTGS (Real Time Gross Settlement) রিয়েল টাইম গ্রোস সেট্যালমেন্ট

3. NPSB (National payment Switch  Bangladesh) ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ।

BEFTN বিস্তারিত

BEFTN (Bangladesh Electronic Fund Transfer Network): ব্যাংকিং ব্যবস্থায় খুবই চমৎকার একটি ব্যাংকিং সেবা। গ্রহিতা তার পছন্দের বা নিকটবর্তি যে কোন একটি ব্যাংকের শাখা সিলেক্ট করতে পারেন। সেখান থেকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে অন্য আরেকটি যে কোনো ব্যাংকের যে কোন শাখায় টাকা পাঠাতে পারেন।

ট্রান্সফার লিমিট (Transfer limit ) : এই পদ্ধতিতে একদিনে মিনিমাম ১০০ টাকা থেকে শুরু এবং সর্বোচ্চ ৫০০,০০০ পর্যন্ত ২০ বারে ট্রান্সফার করতে পারবেন। এই ২০ বারের মধ্যেই আপনাকে ট্রান্সফারটি করতে হবে।

ট্রান্সফার সিষ্টেম: ব্যাংকের “Prescribed Format” ফর্ম এ নিচের তথ্যসমুহ দিয়ে পূরন করতে হয় এর সাথে ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি সংযুক্ত করে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়।

  • ব্যাংক Account Number, Account Title লিখতে হবে,
  • যে ব্যাংকের যে শাখাতে টাকা পাঠাতে চান তা উল্লেখ করতে হবে,
  • Beneficiary বা যার Account এ টাকা পাঠাতে চান সে ব্যাক্তির মোবাইল নাম্বার প্রদান,
  • আপনার নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, এনআইডি কার্ডের নাম্বার ও টাকা জমা করার উদ্যেশ্য ঘরগুলো পূরণ করতে হবে,
  • সর্বশেষে আপনি যে মানি লন্ডারিং করছেন না সে মর্মে একটি ফরমে স্বাক্ষর করতে হবে।

এই পদ্ধতিতে খুব সহজেই এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকের যে কোন শাখাতে আপনি টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন।

ট্রান্সফার চার্জ : এ প্রক্রিয়ায় কোনো চার্জ কাটে না।

ট্রান্সফারের সময়: এ পদ্ধতিতে ২৪ ঘন্টা বা এক দিন সময় নিতে পারে। মানে আপনি যদি আজকে টাকা ট্রান্সফার করেন তবে গ্রহীতা পরদিন এই টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।

বি.দ্র. এছাড়াও কোনো কোনো ব্যাংকের এপে বা অনলাইনে ব্যাংকিং এ সংযুক্ত থাকলে এই সুবিধা পেতে পারেন। ব্যাংকের ওয়েব সাইটের মাধ্যমে এই সুবিধা দিয়ে থাকে। সোনালী ব্যাংকের ই-ওয়ালেট এপ থেকে বা ইসলামী ব্যাংকের সেলফিন থেকেও সুবিধাটি পাবেন। যেখান থেকে সহজেই টাকা পাঠাতে পারবেন ঘরে বসেই। অনলাইনে সুবিধাটি নিতে ব্যাংক ভেদে তাদের অনলাইন সিস্টেম ব্যবহারের নিয়ম জেনে নিন।

RTGS বিস্তারিত

Real Time Gross Settlement পদ্বতি সাধারনত ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করে থাকেন। এ পদ্ধতিতে বেশ কয়েক ধরনের কারেন্সি ট্রান্সফার করা যায়। যেমন:

ট্রান্সফার লিমিট ( RTGS transfer limit ): সর্বনিন্ম ১০০,০০০ টাকা থেকে শুরু হয় এটি এবং উর্ধ সিমা হচ্ছে ১৭ ডিজিট এর মধ্যে আপনি যত সংখ্যা লিখতে পারেন। তবে ফরেন কারেন্সি  ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট লিমিট নেই।

নিয়ম : আপনাকে ব্যাংকের একটি ফর্ম  নিচের িইনফরমেশনগুলো দিয়ে একটি  পূরণ করতে হবে। সেগুলো হলঃ

  • রিসিভারের নাম
  • রিসিভারের ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার
  • ব্যাংক একাউন্টে থাকা নাম নির্ভুলভাবে
  • ব্যাংকের ব্র্যাঞ্চের নাম
  • উক্ত ব্র্যাঞ্চের রাউটিং নাম্বার

লেনদেনের বিস্তারিত :

  • RTGS ট্রান্সফার করার তারিখ
  • RTGS ট্রান্সফারে কতো টাকা পাঠাবেন তা অঙ্কে
  • RTGS ট্রান্সফারে কতো টাকা পাঠাবেন তা কথায়

প্রেরকের বিস্তারিত:

  • প্রেরকের নাম
  • তার ঠিকানা
  • যোগাযোগের নাম্বার
  • টাকা পাঠানোর কারন
  • প্রেরকের ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার
  • প্রেরকের ব্যাংক চেকের নাম্বার
  • চেকে উল্লেখিত তারিখ

এর পর সিগনেচার সহ ফর্ম টি ব্যাংকে সাবমিট করলেই আপনার ট্রান্সফার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে।

RTGS transfer time : এই ব্যবস্থায় কয়েক মিনিটের মধ্যেই একটি বড় অংকের অর্থ কোনো প্রকার সমস্যা ছাড়াই নিরাপদ ভাবে একটি ভিন্ন ব্যাংকের একাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে যাবে। তবে কখনো একটু সময় নিতে পারে, তবে তা ৩০ মিনিটের বেশি নয়।

ট্রান্সফার চার্জ ( RTGS transfer charge in Bangladesh ) : এই সেবা প্রদানে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত ট্রান্সফার ফি নিতে পারে।

NPSB বিস্তারিত

National payment Switch Bangladesh: এটি একটি ইলেকট্রনিক অনলাইন প্লাটফর্ম, যার মাধ্যমে আন্ত ব্যাংকিং লেনদেন গুলো সম্পন্ন হয়। তবে এই সেবা সব ব্যাংকে চালু নেই।

ট্রান্সফার লিমিট : এই প্রক্রিয়ায়  সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা পাঠাতে পারবেন। এইভাবে দিনে আপনি সর্বোচ্চ ১০ টি ট্রান্জেকশন করতে পারবেন এবং এই ট্রান্জেকশনে সর্বোচ্চ ৩০০,০০০ টাকা পর্যন্ত ট্রান্সফার করা যাবে।

সময়: এ পদ্ধতিতে ইন্সটেন্ট টাকা ট্রান্সফার হয়ে যায়। অর্থাৎ কয়েক মিনটের মধ্যেিই আপনি টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন।

ট্রান্সফার চার্জ ( NPSB transfer charge ) : কোনো ব্যাংক চার্জ কেটে নেয় আবার কোনো ব্যাংক কাটে না। চার্জ ব্যাংক অনুযায়ি ভিন্ন হয়ে থাকে।

ট্রান্সফার সিষ্টেম ( NPSB fund transfer ): এখন প্রায় সব ব্যাংকই তাদের মোবাইল এপ চালু করেছে। তাদের এই এপ গুলোতে সাধারণত তারা NPSB সুবিধা দিয়ে থাকে। সুতরাং আপনার যদি এমন কোনো ব্যাংকে একাউন্ট থাকে, এপস ডাউনলোড করে NPSB সিসটেমটি খুজে নিন। এই অপশনটি সাধারণত ফান্ড ট্রান্সফার অংশে খুজে পাবেন।

বর্তমানে এটি ব্যবহার করে POS, ATM, Internet banking এর লেনদেন করছে। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, বর্তমানে ৫৩ টির বেশি ব্যাংক এই NPSB এর আওতায় রয়েছে। তাদের যেকোনো একটির কার্ড দিয়ে তাদের অন্য যে কোনো ব্যাংকের ATM থেকে টাকা তুলতে পারবেন।

এই ছিলো আমাদের ফান্ড ট্রান্সফারের কিছু ব্যাংকিং প্রসিডিউর।

আশা করি, আপনাদের উপকারে আসবে আমার একাউন্ট টু একাউন্ট ফান্ড ট্রান্সফার আর্টিকেলটি।

পরিশেষে, ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন, শরিয়া ব্যাংকিং গ্রহন করেন। এই প্রত্যাশায়!

আরো জানুন:

image_printআর্টিকেল প্রিন্ট করুন
বিজ্ঞাপন বিষয়ে জানতে ক্লিক করুন

Check Also

বাংলা বায়োডাটা তৈরি করুন মিনিটেই

বাংলা বায়োডাটা তৈরি করুন মিনিটেই

বাংলা বায়োডাটা তৈরি হবে সহজেই : মাত্র একটি ফরম পুরন করে বিভিন্ন ডিজাইনের বায়েডাটা প্রিন্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Language »
error: Content is protected !!